ঢাকা ০৯:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo বুড়িচংয়ে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ইউএনও’র! Logo ইবি উপাচার্যকে ১০লাখ ঘুষ প্রস্তাব এক তরুনীর! Logo মামলায় জর্জরিত কুলাউড়ার ছাত্রদল নেতা মিতুল পালিয়ে আছেন প্রবাসে Logo ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসে মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে শাবি ছাত্রলীগের কার্যক্রম শুরু Logo থিয়েটার কুবির ইফতার মাহফিল Logo রাজধানীর শান্তিনগর বাজার নিয়ে শত কোটি টাকার লুটপাট Logo ঢাবির সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জিয়া রহমানের মৃত্যুতে শাবি শিক্ষক সমিতির শোক Logo ঢাবি শিক্ষক ড. জিয়া রহমানের মৃত্যুতে শাবি উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo ময়মনসিংহ স্টুডেন্টস এসোসিয়েশনের নতুন সভাপতি সজীব, সম্পাদক আশিক Logo পুরান ঢাকায় জুতার কারখানার আগুন




শ্রমিক লীগ নেতার ‘ভ্রাম্যমাণ’ ইয়াবা ব্যবসা!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:৪৩:১৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ মে ২০১৯ ৯৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক;
রাজধানীর খিলগাঁওয়ে মাদক বিক্রির অভিযোগে জাতীয় শ্রমিক লীগের খিলগাঁও থানা সাধারণ সম্পাদক নূর মোহাম্মদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত বৃহষ্পতিবার রাতে খিলগাঁও থানার ছাহেরুনবাগ এলাকা থেকে ৩০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার তথ্যে খিলগাঁওয়েরই নবীনবাগ এলাকা থেকে আরো ১০০ পিস ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করা হয় নূর মোহাম্মদের গাড়িচালক মো. মাসুদ মিয়াকেও। অভিযানকালে নূর মোহাম্মদের নিশান পেট্রোল জিপটি (নম্বর ঢাকা মেট্রো ঘ-০২-২১৪৮) জব্দ করা হয়। অভিযানে অংশ নেওয়া খিলগাঁও থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তারিকুল ইসলাম বলেন, এ নিশান পেট্রোল জিপের মাধ্যমেই নূর মোহাম্মদ তার মাদকের চালানগুলো খুচরা ব্যবসায়িদের কাছে পৌঁছে দিতেন। তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা অভিযোগ করে বলেছেন, বিশ হাজার পিচ ইয়াবাসহ নূর মোহাম্মদকে আটক করে থানা থেকে ছেড়ে দেয়ার প্রক্রিয়া চলছিল। পরে আইজিপির কাছে অভিযোগ দেওয়ায় মতিঝিলের ডিসি’র কঠোর ভূমিকায় নূর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা রুজু করতে পুলিশ বাধ্য হয়েছে। ছয় ঘন্টা দেন দরবারের পর বিশ হাজার পিচ ইয়াবা মাত্র তিনশ’ পিচ হিসেবে জব্দ দেখানো হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, শ্রমিক লীগ নেতা নূর মোহাম্মদ ছিলেন গরীব পরিবারের সন্তান। তার বাবা ছিলেন রিকশাচালক; এখন রাজধানীর খিলগাঁওয়ের সিপাহীবাগ আইসক্রিম গলিতে খুলেছেন রিকশা গ্যারেজের ব্যবসা। এলাকার সন্ত্রাসীদের সঙ্গে মিশে এক সময় হেরোইন-ইয়াবার নেশায় আসক্ত হয়ে পড়া নূর মোহাম্মদ এখন খিলগাঁওয়ের শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী। খিলগাঁওয়ের ছিনতাই, ফুটপাত চাঁদাবাজি সিন্ডিকেটেরও মূল হোতা তিনি। চাঁদাবাজি ও মাদকের কারবার রীতিমতো আলাদিনের চেরাগ এনে দিয়েছে তার হাতে। খিলগাঁও জোনের সদ্য বিদায়ী এসি নাদিয়া জুঁই’র সঙ্গে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বতা রাতারাতি নূর মোহাম্মদ কোটি কোটি টাকা, একাধিক বাড়ি-গাড়ি অঢেল সম্পদের মালিক বনে যান। নিজের অপরাধীর তকমা কাটাতে তিনি বাগিয়ে নিয়েছেন রাজনৈতিক পদও। এখন তিনি ঢাকা দক্ষিণের খিলগাঁও থানা জাতীয় শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক।
খিলগাঁওয়ের আইসক্রিম গলি এলাকাই ‘সৃষ্টি’ নামে একটি মাদক নিরাময় কেন্দ্র গড়ে তুলেছিলেন নূর মোহাম্মদ। মূলত এই প্রতিষ্ঠানের আড়ালেই খিলগাঁওয়ে মাদকের সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিলেন তিনি। মাদক ব্যবসা, জুয়া ও নারী ঘটিত অনৈতিক ব্যবসার অভিযোগে অবশ্য গত বছর ‘সৃষ্টি’ নামে তার ওই মাদক নিরাময় প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করে দেয় মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। পুলিশ জানায়, মাদকের এই মামলা ছাড়াও রাজধানীর বিভিন্ন থানায় নূর মোহম্মদের বিরুদ্ধে ছিনতাই-মাদকের আটটি মামলা রয়েছে। এছাড়া খিলগাঁও ভূঁইয়াপাড়ার মিয়া হত্যাকান্ড মামলার আসামিও তিনি। গত বছর খিলগাঁও থানা এলাকায় মাদক বিরোধী মিছিলকারীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হামলা চালানো, মারধোর করাসহ অন্তত ত্রিশ জনের বিরুদ্ধে মিথ্যা সাজানো মামলায় জেল হাজতে পাঠানোর মূল ভূমিকায় ছিলেন নূর মোহাম্মদ।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




শ্রমিক লীগ নেতার ‘ভ্রাম্যমাণ’ ইয়াবা ব্যবসা!

আপডেট সময় : ০৯:৪৩:১৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ মে ২০১৯

নিজস্ব প্রতিবেদক;
রাজধানীর খিলগাঁওয়ে মাদক বিক্রির অভিযোগে জাতীয় শ্রমিক লীগের খিলগাঁও থানা সাধারণ সম্পাদক নূর মোহাম্মদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত বৃহষ্পতিবার রাতে খিলগাঁও থানার ছাহেরুনবাগ এলাকা থেকে ৩০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার তথ্যে খিলগাঁওয়েরই নবীনবাগ এলাকা থেকে আরো ১০০ পিস ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করা হয় নূর মোহাম্মদের গাড়িচালক মো. মাসুদ মিয়াকেও। অভিযানকালে নূর মোহাম্মদের নিশান পেট্রোল জিপটি (নম্বর ঢাকা মেট্রো ঘ-০২-২১৪৮) জব্দ করা হয়। অভিযানে অংশ নেওয়া খিলগাঁও থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তারিকুল ইসলাম বলেন, এ নিশান পেট্রোল জিপের মাধ্যমেই নূর মোহাম্মদ তার মাদকের চালানগুলো খুচরা ব্যবসায়িদের কাছে পৌঁছে দিতেন। তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা অভিযোগ করে বলেছেন, বিশ হাজার পিচ ইয়াবাসহ নূর মোহাম্মদকে আটক করে থানা থেকে ছেড়ে দেয়ার প্রক্রিয়া চলছিল। পরে আইজিপির কাছে অভিযোগ দেওয়ায় মতিঝিলের ডিসি’র কঠোর ভূমিকায় নূর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা রুজু করতে পুলিশ বাধ্য হয়েছে। ছয় ঘন্টা দেন দরবারের পর বিশ হাজার পিচ ইয়াবা মাত্র তিনশ’ পিচ হিসেবে জব্দ দেখানো হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, শ্রমিক লীগ নেতা নূর মোহাম্মদ ছিলেন গরীব পরিবারের সন্তান। তার বাবা ছিলেন রিকশাচালক; এখন রাজধানীর খিলগাঁওয়ের সিপাহীবাগ আইসক্রিম গলিতে খুলেছেন রিকশা গ্যারেজের ব্যবসা। এলাকার সন্ত্রাসীদের সঙ্গে মিশে এক সময় হেরোইন-ইয়াবার নেশায় আসক্ত হয়ে পড়া নূর মোহাম্মদ এখন খিলগাঁওয়ের শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী। খিলগাঁওয়ের ছিনতাই, ফুটপাত চাঁদাবাজি সিন্ডিকেটেরও মূল হোতা তিনি। চাঁদাবাজি ও মাদকের কারবার রীতিমতো আলাদিনের চেরাগ এনে দিয়েছে তার হাতে। খিলগাঁও জোনের সদ্য বিদায়ী এসি নাদিয়া জুঁই’র সঙ্গে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বতা রাতারাতি নূর মোহাম্মদ কোটি কোটি টাকা, একাধিক বাড়ি-গাড়ি অঢেল সম্পদের মালিক বনে যান। নিজের অপরাধীর তকমা কাটাতে তিনি বাগিয়ে নিয়েছেন রাজনৈতিক পদও। এখন তিনি ঢাকা দক্ষিণের খিলগাঁও থানা জাতীয় শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক।
খিলগাঁওয়ের আইসক্রিম গলি এলাকাই ‘সৃষ্টি’ নামে একটি মাদক নিরাময় কেন্দ্র গড়ে তুলেছিলেন নূর মোহাম্মদ। মূলত এই প্রতিষ্ঠানের আড়ালেই খিলগাঁওয়ে মাদকের সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিলেন তিনি। মাদক ব্যবসা, জুয়া ও নারী ঘটিত অনৈতিক ব্যবসার অভিযোগে অবশ্য গত বছর ‘সৃষ্টি’ নামে তার ওই মাদক নিরাময় প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করে দেয় মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। পুলিশ জানায়, মাদকের এই মামলা ছাড়াও রাজধানীর বিভিন্ন থানায় নূর মোহম্মদের বিরুদ্ধে ছিনতাই-মাদকের আটটি মামলা রয়েছে। এছাড়া খিলগাঁও ভূঁইয়াপাড়ার মিয়া হত্যাকান্ড মামলার আসামিও তিনি। গত বছর খিলগাঁও থানা এলাকায় মাদক বিরোধী মিছিলকারীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হামলা চালানো, মারধোর করাসহ অন্তত ত্রিশ জনের বিরুদ্ধে মিথ্যা সাজানো মামলায় জেল হাজতে পাঠানোর মূল ভূমিকায় ছিলেন নূর মোহাম্মদ।