ঢাকা ০৬:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo আগস্ট বিপ্লবের অদৃশ্য শক্তি তারেক রহমান – মাহমুদ হাসান Logo ছাত্র জনতাকে ১০ মিনিটে ক্লিয়ার করার ঘোষণা দেয়া হামিদ চাকুরীতে বহাল Logo ছাত্রলীগ নেত্রী যুবলীগ নেতার প্রতারণার শিকার চিকিৎসক সালেহউদ্দিন: বিচার ও প্রতিকার দাবি Logo দেশসেরা সহকারী জজ পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জনে সংবর্ধনা Logo মাদরাসাসহ সকল শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণের দাবি বিএমজিটিএ’র Logo এনবিআরে আরেক মতিউর: কর কমিশনার কবিরের সম্পদের পাহাড় Logo চাকুরীর নামে ভুয়া মেজরের কোটি টাকার প্রতারণা: মিথ্যে মামলায় ভুক্তভোগীদের হয়রানি Logo পটুয়াখালী এলএ শাখায় ঘুষ ছাড়া সেবা পাচ্ছেনা ইপিজেড ও পায়রা বন্দরের ক্ষতিগ্রস্তরা Logo খুলনায় বন্ধ পাটকল চালু ও বকেয়া বেতনের দাবিতে আমজনতার দলের বিক্ষোভ Logo এলজিইডি প্রধান প্রকৌশলী রশীদ’র বিরুদ্ধে ৩০০ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ




ঠাকুরগাঁওয়ে ধানের মণ ৩০০ টাকা, কৃষকের বুকফাটা কান্না

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৬:৪৮:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ মে ২০১৯ ১০৬ বার পড়া হয়েছে

জেলা প্রতিনিধি ঠাকুরগাঁও;

ঠাকুরগাঁওয়ের চলতি বোরো মৌসুমে ধানের ন্যাযমূল্য না পাওয়ায় হতাশায় দিন পার করছেন চাষিরা। ধান বিক্রি করে লাভ তো দূরের কথা আসল টাকাও তুলতে পারছেন না এমন অভিযোগ চাষিদের।

এমনকি বাজারে ধানের চাহিদা না থাকায় কাঁচা ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা। ধান চাষ করে খরচ না ওঠায় নীরবে কাঁদছেন কোনো কোনো কৃষক। কেউ কেউ বলছেন এমন জানলে ধান চাষ করতাম না। কারণ ৮ টাকা কেজি দরে ধান বিক্রি করতে হচ্ছে কৃষকদের।

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, জেলায় বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৬২ হাজার ৩৬০ হেক্টর আর অর্জিত হয়েছে ৬২ হাজার ৩৫০ হেক্টর।

কৃষি বিভাগ বলছে, উৎপাদন গত বছরের তুলনায় এবার কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বছর প্রতি হেক্টরে চাল উৎপাদন হয়েছিল ৩.৮ টন আর এবার বৃদ্ধি পেয়ে ৪ টন হচ্ছে।

তবে আশানুরূপ ফলন হলেও ধান উৎপাদনে প্রয়োজনীয় সব উপাদানের দাম বেশি থাকায় লোকশানের মুখে পড়েছেন চাষিরা। গত মৌসুমের ধান ব্যবসায়ীদের ঘরে জমে থাকায় ধান ক্রয়ে তেমন আগ্রহ নেই ব্যবসায়ীদের। তাই বাজারে ধানের চাহিদা না থাকায় দাম কমেছে ধানের। এ অবস্থায় ক্ষতির মুখে পড়ে কাঁদছে কৃষক।

জানা যায়, ১৬৯০টি হাসকিং মিল ও ১৭টি অটোরাইস মিলের মাধ্যমে ৩০ হাজার ৬১৯ মেট্রিক টন চাল ও ১ হাজার ৮৫৭ মেট্রিক টন ধান ক্রয় করবে সরকার। যা উৎপাদনের তুলনায় সামান্য।

জামালপুর এলাকার কৃষক আব্দুল্লাহ ও হামিদুর বলেন, বর্তমানে ঠাকুরগাঁওয়ের হাট-বাজারগুলোতে প্রতি মণ ধান ৩০০-৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অথচ প্রতি মণ ধান উৎপাদনে খরচ পড়েছে ৬০০-৬৫০ টাকা। এভাবে ধানের দাম প্রতিবার কম পাওয়ায় আমরা লোকসানে পড়ি। বর্তমানে ৮ টাকা কেজি দরে ৩২ টাকা ধানের মণ বিক্রি করতে হয় আমাদের। এভাবে চলতে থাকলে আমরা আর ধান চাষ করব না।

ঠাকুরগাঁও জেলা চাল কল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান রাজু বলেন, বর্তমানে বাজারে যে ধান আমদানি হচ্ছে তা কাঁচা ধান। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী কাঁচা ধান কিনলে ৪০ কেজিতে ১০ কেজি কমে যাবে। তাই বাজারে ধানের দাম কম। তবে শুকনা ও ভালো ধানের দাম কিছুটা ভালো আছে।

তিনি আরও বলেন, বিগত দিনের চেয়ে এ বছর ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। গত আমন মৌসুমের ধান এখনো মিলারদের কাছে মজুত থাকায় ধান কেনার আগ্রহ নেই মিলারদের। মিলাররা যে পরিমাণ বরাদ্দ পেয়েছে তাতে গত মৌসুমের ধান শেষ হবে না। তবে সরকার যদি আরও বরাদ্দ দেয় তাহলে ধানের দাম কিছুটা বাড়তে পারে।

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আফতাব হোসেন বলেন, ধান উৎপাদনের জন্য সব উপাদন সময় মতো পাওয়ায় ও কৃষি বিভাগের পরামর্শে চাষিদের ধান উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে বর্তমান বাজারে ধানের যে দাম তাতে চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এসব ধান শুকিয়ে সংরক্ষণ করলে পরে লাভবান হতে পারে কৃষকরা।

এছাড়া সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ধান চাষিদের তালিকা প্রস্তুত করে সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানো হয়েছে। আশা করি দ্রুতসময়ে ধান-চাল কেনা শুরু হবে। ব্যবসায়ীরা ধান কেনা শুরু করলে বাজার স্থিতিশীল হতে পারে বলেও জানান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আফতাব হোসেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




ঠাকুরগাঁওয়ে ধানের মণ ৩০০ টাকা, কৃষকের বুকফাটা কান্না

আপডেট সময় : ০৬:৪৮:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ মে ২০১৯

জেলা প্রতিনিধি ঠাকুরগাঁও;

ঠাকুরগাঁওয়ের চলতি বোরো মৌসুমে ধানের ন্যাযমূল্য না পাওয়ায় হতাশায় দিন পার করছেন চাষিরা। ধান বিক্রি করে লাভ তো দূরের কথা আসল টাকাও তুলতে পারছেন না এমন অভিযোগ চাষিদের।

এমনকি বাজারে ধানের চাহিদা না থাকায় কাঁচা ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা। ধান চাষ করে খরচ না ওঠায় নীরবে কাঁদছেন কোনো কোনো কৃষক। কেউ কেউ বলছেন এমন জানলে ধান চাষ করতাম না। কারণ ৮ টাকা কেজি দরে ধান বিক্রি করতে হচ্ছে কৃষকদের।

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, জেলায় বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৬২ হাজার ৩৬০ হেক্টর আর অর্জিত হয়েছে ৬২ হাজার ৩৫০ হেক্টর।

কৃষি বিভাগ বলছে, উৎপাদন গত বছরের তুলনায় এবার কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বছর প্রতি হেক্টরে চাল উৎপাদন হয়েছিল ৩.৮ টন আর এবার বৃদ্ধি পেয়ে ৪ টন হচ্ছে।

তবে আশানুরূপ ফলন হলেও ধান উৎপাদনে প্রয়োজনীয় সব উপাদানের দাম বেশি থাকায় লোকশানের মুখে পড়েছেন চাষিরা। গত মৌসুমের ধান ব্যবসায়ীদের ঘরে জমে থাকায় ধান ক্রয়ে তেমন আগ্রহ নেই ব্যবসায়ীদের। তাই বাজারে ধানের চাহিদা না থাকায় দাম কমেছে ধানের। এ অবস্থায় ক্ষতির মুখে পড়ে কাঁদছে কৃষক।

জানা যায়, ১৬৯০টি হাসকিং মিল ও ১৭টি অটোরাইস মিলের মাধ্যমে ৩০ হাজার ৬১৯ মেট্রিক টন চাল ও ১ হাজার ৮৫৭ মেট্রিক টন ধান ক্রয় করবে সরকার। যা উৎপাদনের তুলনায় সামান্য।

জামালপুর এলাকার কৃষক আব্দুল্লাহ ও হামিদুর বলেন, বর্তমানে ঠাকুরগাঁওয়ের হাট-বাজারগুলোতে প্রতি মণ ধান ৩০০-৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অথচ প্রতি মণ ধান উৎপাদনে খরচ পড়েছে ৬০০-৬৫০ টাকা। এভাবে ধানের দাম প্রতিবার কম পাওয়ায় আমরা লোকসানে পড়ি। বর্তমানে ৮ টাকা কেজি দরে ৩২ টাকা ধানের মণ বিক্রি করতে হয় আমাদের। এভাবে চলতে থাকলে আমরা আর ধান চাষ করব না।

ঠাকুরগাঁও জেলা চাল কল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান রাজু বলেন, বর্তমানে বাজারে যে ধান আমদানি হচ্ছে তা কাঁচা ধান। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী কাঁচা ধান কিনলে ৪০ কেজিতে ১০ কেজি কমে যাবে। তাই বাজারে ধানের দাম কম। তবে শুকনা ও ভালো ধানের দাম কিছুটা ভালো আছে।

তিনি আরও বলেন, বিগত দিনের চেয়ে এ বছর ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। গত আমন মৌসুমের ধান এখনো মিলারদের কাছে মজুত থাকায় ধান কেনার আগ্রহ নেই মিলারদের। মিলাররা যে পরিমাণ বরাদ্দ পেয়েছে তাতে গত মৌসুমের ধান শেষ হবে না। তবে সরকার যদি আরও বরাদ্দ দেয় তাহলে ধানের দাম কিছুটা বাড়তে পারে।

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আফতাব হোসেন বলেন, ধান উৎপাদনের জন্য সব উপাদন সময় মতো পাওয়ায় ও কৃষি বিভাগের পরামর্শে চাষিদের ধান উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে বর্তমান বাজারে ধানের যে দাম তাতে চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এসব ধান শুকিয়ে সংরক্ষণ করলে পরে লাভবান হতে পারে কৃষকরা।

এছাড়া সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ধান চাষিদের তালিকা প্রস্তুত করে সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানো হয়েছে। আশা করি দ্রুতসময়ে ধান-চাল কেনা শুরু হবে। ব্যবসায়ীরা ধান কেনা শুরু করলে বাজার স্থিতিশীল হতে পারে বলেও জানান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আফতাব হোসেন।