ডিজিটাল বাংলাদেশের আধুনিক শিক্ষা ব্যাবস্থার প্রবর্তক লায়ন এম কে বাশার পিএমজেএফ
- আপডেট সময় : ১২:৩৭:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ মে ২০১৯ ১৩৪ বার পড়া হয়েছে
নীলা রহমান;
ছোট বেলা থেকেই জীবনকে জয় করার ইচ্ছে শক্তি ছিল প্রবল। ভয় ছিলো কম, স্বপ্ন ছোঁয়ার সাহস ছিলো তার আকাশ সমান। ১৯৯০ সালে এসএসসি পরীক্ষার পর তার মা হাতে একটি গ্লাস ও একটি প্লেট এবং ১১শ’ টাকা হাতে তুলে দিয়ে বললেন- বাবা এবার ঢাকায় গিয়ে কিছু করার চেষ্টা করো। মায়ের ওই অর্থই ছিলো আমার জন্য আর্শিবাদ। বলছিলেন লায়ন এম কে বশার। মায়ের উপদেশ অনুযায়ী চেষ্টা করেছি, সত্য ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে সমাজের প্রতিটি মানুষকে শিক্ষা সেবা দিতে। কতটুকু পারছি সেটা জানি না, তবে সমাজের পিছিয়ে পড়া নিরক্ষর মানুষগুলোকে স্বাক্ষর করার কর্মসূচি নিয়েছি। যাতে করে নিজেকে নিরক্ষরমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার একজন যোগ্য সাথি হিসেবে ভাবতে পারি। তার নিজ অফিস কক্ষে এ প্রতিবেদকের সাথে আড্ডায় নিজের উঠে আসার গল্প বললেন বিশিষ্ট শিক্ষা সংস্কারক লায়ন এম কে বাশার পিএমজেএফ।
২০২১ সালের মধ্যে নিরক্ষরমুক্ত ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রধান চ্যালেঞ্জ নিয়ে দেশের তরুণ প্রজন্মকে বিশ্বমানের আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা নিশ্চিত করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে বিএসবি-ক্যামব্রিয়ান এডুকেশন গ্রুপ।
শিক্ষা মানুষের সার্বিক উন্নয়নে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে এই বিশ্বাস নিয়ে বিএসবি ফাউন্ডেশন তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন লায়ন এম কে বাশার পিএমজেএফ। তিনি এই প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান। ১৯৯৩ সালে ছোট একটি কনসালটিং ফার্ম দিয়ে তার যাত্রা শুরু। ২৬ বছরের পথচলায় যোগ হয়েছে বিএসসি ফাউন্ডেশন, ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মেট্রোপলিটন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, কিংস কলেজ, মাদরাসাতু সালেহা খাতুন, ক্যামব্রিয়ান কালচারাল একাডেমি, ক্যামব্রিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ সেন্টার, ক্যামব্রিয়ান ইন্টারন্যাশনাল কলেজ অব অ্যাভিয়েশন, ক্যামব্রিয়ান ¯েপার্টস একাডেমি, ক্যামব্রিয়ান টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, বিএসসি গ্লোবাল নেটওয়ার্ক, বিএসসি ট্রাভেলস, বিএসসি ল্যাক্সগুয়েজ ক্লাব, বিএসসি এক্সপো ম্যানেজমেন্ট, ক্যামব্রিয়ান
পাবলিকেশন। এছাড়া ক্যামব্রিয়ান ইউনিভার্সিটির (প্রস্তাবিত) উদ্যোক্তাও তিনি। লায়ন এম কে বাশার হাতে গড়া প্রতিটি প্রতিষ্ঠান স্ব-স্ব ক্ষেত্রে সাফল্যের সঙ্গে এগিয়ে চলেছে। কমিটমেন্ট, মূল্যবোধ, দূরদর্শিতা, অদম্য সংগ্রাম আর সেবার মানসিকতা এনে দিয়েছে সফলতার শীর্ষ অবস্থান। প্রায় দুই যুগেরও বেশি সাফল্যের স্বীকৃতি স্বরূপ লায়ন এম কে বাশার পিএমজেএফ পেয়েছেন সেরা শিক্ষা উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী উদ্যোক্তাসহ বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অ্যাওয়ার্ড। শিক্ষাক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য অ্যাওয়ার্ড ফর আউটস্ট্যান্ডিং কন্ট্রিবিউশন ইন এডুকেশন, ইনোভেশন লার্নিং, এডুকেশনাল ইনস্টিটিউশন ইউথ বেস্ট একাডেমিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি ইন্টারফেস, আউটস্ট্যান্ডিং কন্ট্রিবিউশন ইন ডিজিটাল লার্নিং, বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার স্বর্ণপদক, অতীশ দীপঙ্কর স্বর্ণপদক-২০১২, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস স্বর্ণপদক, বাংলাদেশ কালচারাল ফাউন্ডেশন সম্মাননা পদক-২০১১, শেরেবাংলা মেমোরিয়াল অ্যাওয়ার্ড, অর্থকণ্ঠ বিজনেস অ্যাওয়ার্ড-২০১৩, ফিন্যান্সিয়াল মিরর বিজনেস অ্যাওয়ার্ড, সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় দ্য ম্যাজিস্টিক ফাইভ কনটিনেন্টস অ্যাওয়ার্ড ফর কোয়ালিটি এক্সিলেন্স-২০১৩, ভারতের মুম্বাইয়ের এডুপ্রেনার অ্যাওয়ার্ড, ওয়ার্ল্ড এডুকেশন কংগ্রেস-২০১২, সিঙ্গাপুরের এডুকেশন লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড, বেস্ট বি স্কুল-২০১২, স্পেনের বার্সোলোর ওয়ার্ল্ড বিজ অ্যাওয়ার্ড, স্বামী বিবেকানন্দ ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড-২০১১, ইন্টারন্যাশনাল স্টার ফর লিডারশিপ ইন কোয়ালিটি অ্যাওয়ার্ড-২০১২, ফ্রান্সের প্যারিস থেকে দ্য নিউ এরা অ্যাওয়ার্ড-২০১০ অর্জন করেছেন। আধুনিক ডিজিটাল শিক্ষার স্বপ্নদ্রষ্টা হিসেবে আমরা যাকে জানি, এর বাইরেও তার একটি পরিচয় হলো তিনি একজন সংস্কৃতিমনা মানুষ। স্টুডেন্ট লাইফ থেকেই তিনি বিভিন্ন অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন দক্ষ। একই সঙ্গে বিতর্ক-আবৃতিতেও ছিলেন পারদর্শী। পেশাগত জীবনে এসেও তিনি তার স্বাক্ষর রেখেছেন। তিনি বিটিভিসহ বিভিন্ন টিভি মিডিয়ায় ধারণকৃত ও লাইভ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। শিক্ষা-উদ্যোক্তা লায়ন এম কে বাশার পিএমজেএফ শিক্ষাটা নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরেছেন অপেক্ষাকৃত সাবলীল ও নান্দনিক রূপে। এ কাজে তিনি ব্যবহার করেছেন তথ্যপ্রযুক্তি। এজন্য তিনি নিজ প্রতিষ্ঠান ক্যামব্রিয়ান কলেজে প্রযুক্তিসমৃদ্ধ ডিজিটাল শিক্ষা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে প্রকৃত ডিজিটাল শিক্ষা ও এর ব্যাপকতা তুলে ধরার প্রয়াস পেয়েছেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ কার্যক্রমের গবেষণায় তিনি যুক্ত করলেন সব শিক্ষা উপকরণের ডিজিটাল ভার্সন তৈরি এবং শিক্ষার্থীদের হাতে বইয়ের পরিবর্তে ছোট্ট ল্যাপটপ তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া। লায়ন বাশারের মাদার প্রতিষ্ঠান বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্ক। এটি দেশের শীর্ষ এবং লিডিং এডুকেশন কনসালট্যান্সি ফার্ম। ক্যামব্রিয়ান কলেজের যাত্রা শুরু ২০০৪ সাল থেকে। ২০০৭ সালের পর থেকে ঈর্ষণীয় সাফল্যে সবার নজর কাড়ে এ কলেজ। গত পাঁচটি শিক্ষাবর্ষে এইচএসসির ফল অনুযায়ী শুধু শতভাগ পাস নয়, পরপর চারবার ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের মেধা তালিকায় স্থান করে নেয় ক্যামব্রিয়ান। প্রতিবছরই কলেজ থেকে পাসের হার ছিল শতভাগ। ঢাকা বোর্ডের মেধা তালিকায় ২০০৮ ও ২০০৯ সালে দ্বিতীয় এবং ২০১০ সালে তৃতীয় স্থান অর্জন করেছিল ক্যামব্রিয়ান কলেজ। বিগত দিনের ফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০১১ সালে এখান থেকে শতভাগ পাসসহ জিপিএ-৫ বা এ+ পায় ৪৩ শতাংশ, ৫৭ শতাংশ শিক্ষার্থীর অর্জন ছিল এ গ্রেড। তবে কোনো শিক্ষার্থী জিপিএ-৪.৩-এর নিচে পায়নি। এখানকার বার্ষিক শিক্ষা কার্যক্রম চলে একটা পর্যায়ক্রমিক এবং টার্ম পদ্ধতিতে। আর পুরো প্রক্রিয়াটি চলে নির্ধারিত একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী।
নির্দিষ্ট পাঠ পরিকল্পনার মাধ্যমে। দুর্বল শিক্ষার্থীদের সক্ষমতা তৈরিতে গড়ে তোলা হয়েছে সুপারভাইজরি স্টাডি প্রোগ্রাম (ঝঝচ) নামক নতুন শিক্ষা ধারণা। এখানে পাঠদান পদ্ধতি চলে কমপক্ষে ১৪টি বিষয় অবলম্বন করে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, লেসন প্লান, প্রতিদিন প্রতিটি বিষয়ের ক্লাস, ক্লাসের আগে লেকচার শিট প্রদান, প্রশ্ন ব্যাংক ও সমাধান, সাজেশন ও সমাধান, সুপারভাইজরি স্টাডি প্রোগ্রাম বা এসএসপি, অডিও ভিজ্যুয়াল, বিকল্প ক্লাস, মেকআপ ক্লাস, ব্যবহারিক ক্লাস, আবাসিক হোস্টেলে সার্বক্ষণিক তত্ত¡াবধান, শ্রেণি শিক্ষক, গাইড শিক্ষক ইত্যাদি। বাংলাদেশে যেসব শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে ইচ্ছুক, তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি, পড়াশোনা, টিউশন ফি ব্যবস্থাপনা এবং পড়াশোনার পাশাপাশি কাজ সংক্রান্ত বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা করে বিএসসি গ্লোবাল নেটওয়ার্ক। ১৯৯৩ সালে এর যাত্রা শুরু। প্রতিষ্ঠানটি এশিয়া এবং ইউরোপ ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড এবং স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশের ইউনিভার্সিটিগুলোর শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজ করে। এ ছাড়া ভিসা, ইমিগ্রেশন এবং ট্যুরের ব্যবস্থা, হোটেল বুকিং, ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্স, ট্রাভেল লোনের ব্যবস্থা এবং টিকেটিং সহযোগিতা করা হয়।
এক নজরে বিএসবি ফাউন্ডেশন:
১৯৯৩ সাল। ছোট একটি কনসালটিং ফার্ম দিয়ে যাত্রা শুরু। ২২ বছরের পথচলায় যোগ হয়েছে বিএসসি ফাউন্ডেশন, ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বিএসসি গ্লোবাল নেটওয়ার্ক, কিংস কলেজ, মেট্রোপলিটন স্কুল অ্যান্ড কলেজের মতো প্রায় ডজনখানেক প্রতিষ্ঠান। প্রতিটি প্রতিষ্ঠান স্ব-স্ব ক্ষেত্রে সফলতার সঙ্গে কাজ করছে। কমিটমেন্ট, মূল্যবোধ, দূরদর্শিতা, অদম্য সংগ্রাম আর সেবার মানসিকতা এনে দিয়েছে সফলতার শীর্ষ অবস্থান। প্রায় দুই যুগে বিএসবিতে যোগ হয়েছে দেশি বিদেশি অনেক প্রতিষ্ঠানে স্বীকৃতি। অর্জন করেছে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মানের অনেক পুরস্কার। আর এসব সফলতার নৈপথ্যে কাজ করেছেন শিক্ষা উদ্যোক্তা ও বিএসবি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান লায়ন এম কে বাশার।
বিএসসি গ্লোবাল নেটওয়ার্ক: বাংলাদেশে যেসব শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে ইচ্ছুক, তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি, পড়াশোনা, টিউশন ফি ব্যবস্থাপনা এবং পড়াশোনার পাশাপাশি কাজসংক্রান্ত বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা করে বিএসসি গ্লোবাল নেটওয়ার্ক। ওঝঙ ৯০০১:২০০০ সনদপ্রাপ্ত স্টুডেন্ট কনসাল্টিং ফার্ম। ১৯৯৩ সালে এটির যাত্রা শুরু। প্রতিষ্ঠানটি এশিয়া এবং ইউরোপ ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড এবং স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশের ইউনিভার্সিটিগুলো শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজ করে।
যেসব সেবা দেয় বিএসবি এর মধ্যে আছে, উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে সম্যক ধারণা এবং প্রয়োজনী সহযোগিতা ও পরামর্শ। বিনামূল্যে প্রসপেক্টাস এবং এডমিশন ফরম। কম খরচে পড়াশোনা করার কৌশলগত পরামর্শ, বিদেশে মানসম্মত বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির ব্যবস্থাকরণ, বিদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা শিক্ষার্থীর তালিকা, অনুমোদিত দেশ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রণয়ন, বিদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা শিক্ষার্থীর আবাসন এবং পার্টটাইম কাজের ব্যবস্থা, বিদেশে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর জরুরি মুহুর্তে তার অভিভাবকের সঙ্গে যোগাযোগের ব্যবস্থা, উচ্চশিক্ষা ঋণের ব্যবস্থা ইত্যাদি। এছাড়া ভিসা, ইমিগ্রেশন এবং ট্যুরের ব্যবস্থা, হোটেল বুকিং, ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্স এবং ট্রাভেল লোনের ব্যবস্থা এবং টিকেটিং সহযোগিতা। বিশ্বের যেসব দেশ নিয়ে কাজ করে সেগুলো হলো এশিয়া, ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, ফিনল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, সুইডেন, সাইপ্রাস, ইউক্রেন, মালয়েশিয়া, তুরস্ক, নরওয়ে, ইতালি, চীন, ইন্ডিয়া, জার্মানি, পোল্যান্ড, স্পেনসহ বিশ্বের অর্ধশতাধিত দেশের স্টুডেন্ট প্রক্রিয়ার কাজ করে।