ঢাকা ১২:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo বুড়িচংয়ে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ইউএনও’র! Logo ইবি উপাচার্যকে ১০লাখ ঘুষ প্রস্তাব এক তরুনীর! Logo মামলায় জর্জরিত কুলাউড়ার ছাত্রদল নেতা মিতুল পালিয়ে আছেন প্রবাসে Logo ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসে মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে শাবি ছাত্রলীগের কার্যক্রম শুরু Logo থিয়েটার কুবির ইফতার মাহফিল Logo রাজধানীর শান্তিনগর বাজার নিয়ে শত কোটি টাকার লুটপাট Logo ঢাবির সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জিয়া রহমানের মৃত্যুতে শাবি শিক্ষক সমিতির শোক Logo ঢাবি শিক্ষক ড. জিয়া রহমানের মৃত্যুতে শাবি উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo ময়মনসিংহ স্টুডেন্টস এসোসিয়েশনের নতুন সভাপতি সজীব, সম্পাদক আশিক Logo পুরান ঢাকায় জুতার কারখানার আগুন




ধান নিয়ে বিপাকে কৃষক

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:৫৮:৩৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ মে ২০১৯ ১১৬ বার পড়া হয়েছে

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি;

এ বছরের বোরো মৌসুমে উৎপাদিত ধান নিয়ে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার কৃষকরা বিপাকে পড়েছেন। ধানের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় তারা চরমভাবে হতাশ।

উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে কোটালীপাড়া উপজেলায় ১ লাখ ৬২ হাজার মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হয়েছে। এ উপজেলার লোক সংখ্যা প্রায় ৩ লাখ। সারা বছর বছর খাদ্য চাহিদা (ধানের হিসেবে) ৬১ হাজার ৫ শ’ ৯৪ মেট্রিকটন। অপরদিকে এ উপজেলায় সরকারিভাবে ধান ক্রয় করা হবে মাত্র ৮ শ’ ২৪ মেট্রিক টন।

উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, প্রায় ১ লাখ মেট্রিক টন ধান কৃষকের হাতে মজুদ থাকবে। উৎপাদন খরচের তুলনায় বিক্রয় মূল্য কম হওয়ায় এই ধান নিয়ে কৃষকরা বিপাকে পড়েছেন। অনেক কৃষকের ঘরে আবার গত বছরের উৎপাদিত ধান রয়ে গেছে। দাম কম থাকার কারণে এ সব ধান কৃষকরা গত বছর বিক্রি করেনি। তাই কৃষকরা সরকারিভাবে ধান ক্রয়ের বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন।

উপজেলার পূর্ণবর্তী গ্রামের কৃষক অলিউল্লাহ হাওলাদার বলেন, আমি এ বছর ২৬ বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করেছি। আমার জমিতে প্রায় ১২শ’ মন ধান উৎপাদিত হয়েছে। আমার পরিবারে বছরে ১শ’ মন ধান খাবার জন্য প্রয়োজন হয়। বাকি ধান আমি বিক্রি করবো। বর্তমানে বাজারে ৫শ’ টাকা করে মোটা ধান বিক্রি হয়। আমার প্রতি মণ ধান উৎপাদন করতে ৬ শ’ থেকে ৭শ’ টাকা খরচ হয়েছে। বর্তমানে বাজারে যে দাম আছে সেই দামে ধান বিক্রি করলে প্রতি মণ ধানে দেড় থেকে ২শ’ টাকা লোকসান হবে

কুরপালা গ্রামের চয়ন হাওলাদার বলেন, গত শুক্রবার ঘাঘর বাজারে গিয়ে ৫শ’ টাকা দরে মোটা ধান বিক্রি করেছি। বাড়িতে মেহমান থাকায় গরুর মাংস কিনতে হয়েছে ৫ শ’ ৫০ টাকা কেজি দরে। এখন ১ মণ ধান বিক্রি করেও ১ কেজি গরুর মাংস কেনা যাচ্ছে না। শুনেছি সরকার ১ হাজার ৪০ টাকা করে ধান ক্রয় করবে। এই দামে ধান বিক্রি করতে পারলে আমরা লাভবান হবো।

উদীচী কোটালীপাড়া শাখার সাধারণ সম্পাদক রতন সেন কংকন বলেন, আমিও একজন কৃষক। আমি মনে করি আগামীতে কৃষকরা যদি রপ্তানিমুখী ধান চাষ করে তাহলে তারা অনেকটাই ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবে। এ জন্য সরকারকে রপ্তানিমুখী ধান চাষে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি এ বছর কৃষককে এ সংকট থেকে রক্ষা করতে কোটালীপাড়ায় সরকারিভাবে ধান ক্রয়ের বরাদ্দ বাড়াতে হবে।

কোটালীপাড়া বঙ্গবন্ধু দারিদ্র্য বিমোচন ও পল্লী উন্নয়ন একাডেমির পরিচালক কৃষিবিদ মাহামুদুলন্নবী বলেন, কৃষিক্ষেত্রে যান্ত্রিকিকরণ ও কৃষিতে ভর্তুকি বাড়াতে হবে। কৃষিতে যান্ত্রিকিকরণ ও ভর্তুকি বাড়িয়ে দিলে কৃষকদের ধান চাষে ব্যয় কমে আসবে।

উপজেলা কৃষি অফিসার রথীন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন, কোটালীপাড়া উপজেলায় এ বছর ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। আমাদের হিসাব অনুযায়ী এ উপজেলায় এ বছর ১ লাখ ৬২ হাজার মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হয়েছে। সরকারিভাবে ধান ক্রয় ও চাহিদাকৃত ধান বাদে কৃষকদের ঘরে প্রায় ১ লাখ মেট্রিক টন ধান মজুদ থেকে যাবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




ধান নিয়ে বিপাকে কৃষক

আপডেট সময় : ১১:৫৮:৩৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ মে ২০১৯

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি;

এ বছরের বোরো মৌসুমে উৎপাদিত ধান নিয়ে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার কৃষকরা বিপাকে পড়েছেন। ধানের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় তারা চরমভাবে হতাশ।

উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে কোটালীপাড়া উপজেলায় ১ লাখ ৬২ হাজার মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হয়েছে। এ উপজেলার লোক সংখ্যা প্রায় ৩ লাখ। সারা বছর বছর খাদ্য চাহিদা (ধানের হিসেবে) ৬১ হাজার ৫ শ’ ৯৪ মেট্রিকটন। অপরদিকে এ উপজেলায় সরকারিভাবে ধান ক্রয় করা হবে মাত্র ৮ শ’ ২৪ মেট্রিক টন।

উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, প্রায় ১ লাখ মেট্রিক টন ধান কৃষকের হাতে মজুদ থাকবে। উৎপাদন খরচের তুলনায় বিক্রয় মূল্য কম হওয়ায় এই ধান নিয়ে কৃষকরা বিপাকে পড়েছেন। অনেক কৃষকের ঘরে আবার গত বছরের উৎপাদিত ধান রয়ে গেছে। দাম কম থাকার কারণে এ সব ধান কৃষকরা গত বছর বিক্রি করেনি। তাই কৃষকরা সরকারিভাবে ধান ক্রয়ের বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন।

উপজেলার পূর্ণবর্তী গ্রামের কৃষক অলিউল্লাহ হাওলাদার বলেন, আমি এ বছর ২৬ বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করেছি। আমার জমিতে প্রায় ১২শ’ মন ধান উৎপাদিত হয়েছে। আমার পরিবারে বছরে ১শ’ মন ধান খাবার জন্য প্রয়োজন হয়। বাকি ধান আমি বিক্রি করবো। বর্তমানে বাজারে ৫শ’ টাকা করে মোটা ধান বিক্রি হয়। আমার প্রতি মণ ধান উৎপাদন করতে ৬ শ’ থেকে ৭শ’ টাকা খরচ হয়েছে। বর্তমানে বাজারে যে দাম আছে সেই দামে ধান বিক্রি করলে প্রতি মণ ধানে দেড় থেকে ২শ’ টাকা লোকসান হবে

কুরপালা গ্রামের চয়ন হাওলাদার বলেন, গত শুক্রবার ঘাঘর বাজারে গিয়ে ৫শ’ টাকা দরে মোটা ধান বিক্রি করেছি। বাড়িতে মেহমান থাকায় গরুর মাংস কিনতে হয়েছে ৫ শ’ ৫০ টাকা কেজি দরে। এখন ১ মণ ধান বিক্রি করেও ১ কেজি গরুর মাংস কেনা যাচ্ছে না। শুনেছি সরকার ১ হাজার ৪০ টাকা করে ধান ক্রয় করবে। এই দামে ধান বিক্রি করতে পারলে আমরা লাভবান হবো।

উদীচী কোটালীপাড়া শাখার সাধারণ সম্পাদক রতন সেন কংকন বলেন, আমিও একজন কৃষক। আমি মনে করি আগামীতে কৃষকরা যদি রপ্তানিমুখী ধান চাষ করে তাহলে তারা অনেকটাই ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবে। এ জন্য সরকারকে রপ্তানিমুখী ধান চাষে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি এ বছর কৃষককে এ সংকট থেকে রক্ষা করতে কোটালীপাড়ায় সরকারিভাবে ধান ক্রয়ের বরাদ্দ বাড়াতে হবে।

কোটালীপাড়া বঙ্গবন্ধু দারিদ্র্য বিমোচন ও পল্লী উন্নয়ন একাডেমির পরিচালক কৃষিবিদ মাহামুদুলন্নবী বলেন, কৃষিক্ষেত্রে যান্ত্রিকিকরণ ও কৃষিতে ভর্তুকি বাড়াতে হবে। কৃষিতে যান্ত্রিকিকরণ ও ভর্তুকি বাড়িয়ে দিলে কৃষকদের ধান চাষে ব্যয় কমে আসবে।

উপজেলা কৃষি অফিসার রথীন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন, কোটালীপাড়া উপজেলায় এ বছর ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। আমাদের হিসাব অনুযায়ী এ উপজেলায় এ বছর ১ লাখ ৬২ হাজার মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হয়েছে। সরকারিভাবে ধান ক্রয় ও চাহিদাকৃত ধান বাদে কৃষকদের ঘরে প্রায় ১ লাখ মেট্রিক টন ধান মজুদ থেকে যাবে।