অনলাইন ডেস্ক |
গত ১১ এপ্রিল ভারতের লোকসভা নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। সাত দফা ভোটগ্রহণের শেষ রোববার। এরপর ২৩ মে ঘোষণা হবে ফলাফল।
উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুরে লোকসভা ভোটের শেষ দফার অন্তিম প্রচার চলছে। এই নির্বাচনে এখনো প্রাসঙ্গিক হয়ে আছেন ২০০১ সালে খুন হওয়া ফুলন দেবী।
কারণ, এই মির্জাপুর তাকে সাংসদ বানিয়ে দুইবার দিল্লি পাঠিয়েছে। চম্বলের ডাকাত সর্দারিনী নয়, কার্পেট নগরী ফুলনকে মনে রেখেছে ‘গরিবোঁ কি মসিহা’ হিসেবে।
ভারতীয় গণমাধ্যম সংবাদ প্রতিদিনের দীপঙ্কর মণ্ডল বলছিলেন, বারাণসী থেকে শাস্ত্রী সেতু পার হলে নিহত সাবেক সাংসদের এলাকা শুরু। এক কিশোরীর গণধর্ষিত হওয়া এবং প্রতিশোধ নেওয়ার কাহিনি কান পাতলেই শোনা যায়।
স্বামীর অত্যাচার থেকে বাঁচতে ফিরে আসা, পুলিশের বিছানা গরম করা, পরে ডাকাত দলে গিয়েও লালসার শিকার হওয়া। নিয়তির অভিশাপ এখানেই শেষ নয়। বিকৃত একদল পুরুষ তার শরীরকে ছিঁড়ে খেয়েছিল।
ঠাকুর সম্প্রদায়ের জমিদাররা টানা প্রায় একমাস বন্দি রেখে ধর্ষণ করেছিল মেয়েটিকে। তারপরও বেঁচে ছিল মেয়েটি।
শেষ পর্যন্ত ফুলন গড়ে তোলেন নিজের ডাকাত দল। প্রতিশোধ নিতে ২২ জনকে খুনের অভিযোগ রয়েছে দস্যি ফুলনের বিরুদ্ধে।
বেহমাই হত্যাকাণ্ডের সেই ঘটনা গোটা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। যার জেরে তখনকার মুখ্যমন্ত্রী ভি পি সিংকে পদত্যাগও করতে হয়। পুলিশকে এক সময় নাকে দড়ি দিয়ে ঘোরাত ফুলনের দল। চম্বলের ত্রাস কুখ্যাত ফুলন পরে আত্মসমর্পণ করেছিলেন।
শেখর কাপুর পরিচালিত হিন্দি ছবি ‘ব্যান্ডিট কুইন’ দেখলে তাঁর কাটাছেঁড়া জীবনের লড়াই প্রবলভাবে টের পাওয়া যায়। মির্জাপুরও দেখেছে সেসব। মনেও রেখেছে তাদের সাবেক সাংসদকে।
সনু দেবী নামে বছর চল্লিশের এক মহিলা বললেন, “অন্যায়ের প্রতিবাদ এবং প্রতিরোধের জন্য এই মনে রাখা।”
প্রায় ১১ বছর জেলে থাকার পর গরিব এবং নিরক্ষর সেই ফুলনের ওপর থেকে সব মামলা প্রত্যাহার করেছিলেন সমাজবাদী দলের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী মুলায়ম সিং। তার ছেলে অখিলেশ এখন দলের সর্বেসর্বা।