মাননীয় আদালত, আমাদের পেটে লাথি মারবেন না
![](https://sokalersongbad.com/wp-content/themes/newspaper-pro/assets/images/reporter.jpg)
- আপডেট সময় : ১০:৩২:৫২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০১৯ ১৫৪ বার পড়া হয়েছে
![](https://sokalersongbad.com/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
প্রভাষ আমিন , হেড অব এটিএননিউজ
টেলিভিশনে বিজ্ঞাপন প্রচার নিয়ে সম্প্রতি হাইকোর্ট একটি রায় দিয়েছেন। রায়ে বলা হয়েছে সংবাদের আগে, পরে বা মাঝে বিজ্ঞাপন প্রচার করা যাবে; তবে কোনো বিজ্ঞাপনদাতা বা স্পন্সরের নামে শিরোনাম বা কোনো বিষয়ভিত্তিক সংবাদ প্রচার করা যাবে না। আমি এই রায়ের সাথে একশোভাগ একমত।
একজন দর্শক হিসেবে যখন টিভিতে শুনি ‘অমুক ব্যাংক বাণিজ্য সংবাদ’, আমার কানে খুব লাগে। মাথায়ও একটা ঘণ্টা ধ্বনি বাজতে থাকে। এখন যদি ওই ব্যাংকের বিরুদ্ধে কোনো নিউজ থাকে, তাহলে সেটা কি এই বাণিজ্য সংবাদে প্রচার করা সম্ভব হবে? হওয়া উচিত। কিন্তু বাস্তবতা হলো, হবে না। বিজ্ঞাপনদাতারা বিজ্ঞাপন দেয়, যতটা না তাদের পণ্যের প্রচারের জন্য, তারচেয়ে বেশি গণমাধ্যমের মুখ বন্ধ রাখার জন্য।
বাংলাদেশের ছোট্ট বিজ্ঞাপন বাজারের একটা বড় অংশ ভারতের বিভিন্ন চ্যানেলে চলে যাচ্ছে। কারণ সেই চ্যানেলগুলো বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয়। টিভি ইন্ডাস্ট্রি সংশ্লিষ্টদের দাবির মুখে সরকার দেশের বিজ্ঞাপন বিদেশী চ্যানেলে যাওয়া ঠেকাতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছে। ধুকতে থাকা টিভি ইন্ডাস্ট্রি বেঁচে থাকতে তীব্র লড়াই করছে। এই সময় সরকার, বিচার বিভাগ, বিজ্ঞাপনদাতা, দর্শক, ক্যাবল অপারেটর সবার প্রতি অনুরোধ- আপনারা আমাদের পাশে দাঁড়ান।
তাই হাইকোর্ট যে বিবেচনায় বিজ্ঞাপনদাতা বা স্পন্সর প্রতিষ্ঠানের নামে শিরোনাম বা কোনো বিষয়ভিত্তিক সংবাদ প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে; সেই একই বিবেচনায় আসলে গণমাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রচারই বন্ধ করে দেয়া উচিত ছিল। তেমন রায় দিলেও আমি আদালতের সাথে একশোভাগ একমত পোষণ করবো। একবার ভাবুন তো, বিজ্ঞাপনমুক্ত পত্রিকা পড়া আর টিভি দেখাটা কত আনন্দের হবে। কিন্তু এই আনন্দটা আপনি কল্পনায় পাবেন, বাস্তবে কখনোই নয়। কারণ বিজ্ঞাপন ছাড়া কোনো গণমাধ্যম মানে পত্রিকা, টিভি, রেডিও বা অনলাইন চলবে না।
চলবে না, এটা ঠিক। গণমাধ্যম চালাতে হলে বিজ্ঞাপন লাগবেই। কিন্তু বিজ্ঞাপন নিয়ে যখন আমরা বিজ্ঞাপনদাতার আজ্ঞাবহ হয়ে যাই, সমস্যাটা হয় তখনই। আদর্শ অবস্থাটা কী হওয়া উচিত? বিজ্ঞাপনদাতা তার পণ্যের প্রচারের জন্য বিজ্ঞাপন দেবেন। আর গণমাধ্যম তার বিবেচনামত সংবাদ প্রচার বা প্রকাশ করবে। সেটা বিজ্ঞাপনদাতার পক্ষে গেল না বিপক্ষে গেল সেটা বিবেচনা না করলেই আর কোনো সমস্যা ছিল না। কিন্তু আমাদের দেশের গণমাধ্যমগুলো অত শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারেনি। তাই গণমাধ্যমগুলো বিজ্ঞাপনদাতাদের ডিকটেট করতে পারে না। বরং উল্টো বিজ্ঞাপনদাতারাই গণমাধ্যমকে ডিকটেট করে, বিজ্ঞাপনের সাথে নানান শর্ত জুড়ে দেয়।
গণমাধ্যম যদি বিজ্ঞাপনদাতাদের বলতে পারতো, আমরা তোমাদের শর্তে বিজ্ঞাপন নেব না। আমাদের শর্তেই তোমাদের বিজ্ঞাপন দিতে হবে। তাহলেই কিন্তু আর কোনো সমস্যা ছিল না। বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপনের মতো চলতো। নিউজ নিউজের মতো চলতো। কিন্তু সমস্যা হলো, সেই শক্তি আমাদের কারো নেই। আমরা বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছে নতজানু থাকি। এটাই বাস্তবতা।
বিজ্ঞাপনের ওপর গণমাধ্যমের নির্ভরতাটা বোধগম্য। প্রিন্ট মিডিয়ায় তবু পত্রিকা বিক্রি করে কিছু টাকা আসে। কিন্তু ইলেকট্রনিক মিডিয়ার আয়ের একমাত্র উৎস বিজ্ঞাপন। কারণ দর্শকরা টিভি দেখতে পান বিনা পয়সায়। তাই পুরো খরচ তুলতে হয় বিজ্ঞাপন থেকেই। ক্যাবল অপারেটররা টেলিভিশন দেখিয়ে ভোক্তাদের কাছ থেকে টাকা নেয়। কিন্তু টেলিভিশনগুলোকে এক টাকাও দেয় না।
ক্যাবল অপারেটররা গ্রাহকদের কাছ থেকে মাসে গড়ে ৫০০ টাকা নেয়। তারা যদি টেলিভিশনগুলোকে মাসে এক টাকা করেও দিতো, তাহলেও টিভি চ্যানেলগুলো একটু শক্তি পেতো। তা কিন্তু হয় না।
আগে গণমাধ্যমের সাথে বিজ্ঞাপনদাতাদের পারস্পরিক সম্পর্কটা ছিল দ্বি-পাক্ষিক ও ভদ্রজনোচিত। কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বিতা বেড়ে যাওয়ায় বিজ্ঞাপনদাতারা এখন গণমাধ্যমের ঘাড়ে সিন্দাবাদের ভূতের মতো চেপে বসেছে।
আগে বিজ্ঞাপনের ডিজাইন হতো পত্রিকার চাহিদা অনুযায়ী, মাপ হতো কলাম-ইঞ্চিতে। এখন পুরো বিষয়টি উল্টে গেছে। এখন পত্রিকার মেকআপ হয় বিজ্ঞাপনের ডিজাইন অনুযায়ী। কখনো কখনো পত্রিকার প্রথম পাতার একটা বড় অংশ চলে যায় বিজ্ঞাপনের দখলে।
মাঝে মাঝে এমনও হয়, পত্রিকার প্রথম পাতায় কোনো সাবানের সুন্দরী মডেলের ছবি ছাপা হয়। আর সেই সুন্দরীর চুলের ভাঁজে দুই লাইন, কানের আড়ালে চার লাইন, ঘাড়ের ফাঁকে পাঁচ লাইন নিউজ চলে যায়। সুন্দরী মডেলের শরীরের ভাঁজে ভাঁজে পাঠককে পড়তে হয়, মর্মান্তিক লঞ্চ দুর্ঘটনার নিউজ। এছাড়া এল সেপ, আই সেপ, বাকা-ত্যাড়া নানা ডিজাইনের বিজ্ঞাপনের অত্যাচার পাঠককে সইতে হয়।
ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় বিজ্ঞাপনের এই অত্যাচার আরো বেশি। মানুষ এখন অনুষ্ঠানের ফাঁকে ফাঁকে বিজ্ঞাপন দেখে না, বিজ্ঞাপনের ফাঁকে ফাঁকে নাটক দেখে। বিশেষ বিশেষ উৎসবে বিজ্ঞাপনের অত্যাচার এত বেড়ে যায় যে নাটক বা অনুষ্ঠানের ধারাবাহিকতাই ভুলে যাওয়ার দশা হয়। নাটক, সিনেমা বা অনুষ্ঠান যত ভালো; বিজ্ঞাপনের অত্যাচার তত বেশি। একটি অনুষ্ঠানের মাঝে সর্বোচ্চ কত মিনিট বিজ্ঞাপন বিরতি থাকবে, তার কোনো মানদণ্ড নেই। হয়তো আছে, আমি জানি না। থাকলেও তা ফলো করা হয় না। বিজ্ঞাপন না পেলে বিরতি ৪ মিনিট, পেলে ১৫ মিনিট পর্যন্ত হয়ে যায়। এরপরও যে দর্শকরা আমাদের টিভি দেখেন, তাতেই আমাদের কৃতজ্ঞ থাকা উচিত।
এখন যেহেতু অনেকে চ্যানেল, দর্শকের হাতে আছে রিমোট কন্ট্রোল, তাই অনেক চালাক দর্শক বিজ্ঞাপন শুরু হলেই চ্যানেল বদলে ফেলেন। দর্শকদের চেয়ে বিজ্ঞাপনদাতারা আরো চালাক। তারা এখন শুধু বিরতিতে নয়, অনুষ্ঠানের ওপরই বিজ্ঞাপন চাপিয়ে দেন। ইদানীং হঠাৎই টিভির পর্দা ছোট হয়ে যায়, এল সেপে ভেসে ওঠে বিজ্ঞাপন।
এছাড়া পর্দার কোণায় কোণায় থাকে নানা বিজ্ঞাপন, সারাক্ষণই ঘুরতে থাকে বিজ্ঞাপনের গ্রাফিক্স। টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ বা বিজ্ঞাপনদাতারা দর্শকদের চোখের প্রশান্তির বিষয়টি মাথায়ই রাখেন না। টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ অনুষ্ঠান তৈরি করেন দর্শকদের কথা মাথায় রেখে নয়, বিজ্ঞাপনদাতাদের কথা মাথায় রেখে। প্রথম কথা হলো, অনুষ্ঠানটি বিক্রি হতে হবে। অনুষ্ঠান যতই ভালো হোক, বিক্রি না হলে তার কোনো দাম নেই।
সবচেয়ে বিপজ্জনক হলো নিউজ বিক্রি করে দেয়া, যেটা নিয়ে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। প্রায় সব টিভির সংবাদ শিরোনাম কোনো না কোনো ব্যাংক বা টেলিফোন কোম্পানির কাছে বিক্রি করা। এখন বিপদটা হলো, সেই বুলেটিনে স্পন্সর ব্যাংক বা কোম্পানির বিপক্ষে কোনো নিউজ থাকে তাহলে কী হবে? এ ধরনের স্বার্থের সংঘাত ঘটছে অহরহই। সাধারণত স্পন্সর কোম্পানির বিরুদ্ধে কোনো নিউজ থাকলে তা ড্রপ করা হয়। আর নিতান্তই ড্রপ করা সম্ভব না হলে লো ট্রিটমেন্ট দেয়া
হয়।
শুধু সংবাদ শিরোনাম নয়, নিউজ বুলেটিনে নানা সেগমেন্ট তৈরি করা হয় বিজ্ঞাপনদাতাদের চাহিদা অনুযায়ী। কত বেশি বিক্রিযোগ্য পণ্য আপনি তৈরি করতে পারবেন, তাতেই ব্যস্ত থাকে সব সৃজনশীলতা। কোনো কোনো টিভির একটি বুলেটিনে অন্তত ৮/১০টি স্পন্সরড সেগমেন্ট থাকে। একটি টেলিভিশনেই ব্যবসার সংবাদ, বাণিজ্য সংবাদ, অর্থনীতির খবর, শেয়ারবাজারের খবর- এমন বাহারি সব সেগমেন্ট থাকে। ঘুরেফিরে সব একই। কিন্তু শুধু বিক্রি করার জন্যই আলাদা আলাদা নাম। এই অতি বিজ্ঞাপন নির্ভরতার কারণে প্রায়শই সংবাদের বস্তুনিষ্ঠতা ক্ষুণ্ন হয়, সত্যি কথা বলা যায় না।
তবে বিজ্ঞাপনের ব্যাপারে সবচেয়ে বিপজ্জনক দিক হলো, গণমাধ্যমের ওপর বিজ্ঞাপনদাতাদের খবরদারি বা নিয়ন্ত্রণ। যেই সাইজে বা যেভাবে দেয়া হয় সেভাবে তো ছাপতে হয়ই, এমনকি পুরো পত্রিকা আড়াল করে হলেও। তারপরও বিজ্ঞাপনদাতারা যা বলে তাই শুনতে হয়। তাদের বিরুদ্ধে কোনো নিউজ ছাপা যায় না। বিজ্ঞাপনদাতারা যাই করে তাই নিউজ, তাই ছাপতে হয়। অনেক বড় বড় পত্রিকা বা টিভিতে এমন অনেক নিউজ ছাপা হয় বা প্রচার হয়, যার কোনো সংবাদমূল্য নেই।
পঞ্চগড়ের কোন উপজেলায় কোন ব্যাংকের ব্রাঞ্চ ওপেন হলো, তা নিয়ে পাঠকদের কোনো আগ্রহ নেই। কিন্তু সেই ব্যাংক যদি বিজ্ঞাপনদাতা হয়, তাহলে সেই সংবাদটি অবশ্যই ছাপতে বা প্রচার করতে হবে। যা ছাপা হয়, তারচেয়ে বিপদজনক যা ছাপা যায় না, তা। বিজ্ঞাপনদাতা কোম্পানিগুলো ভালো কিছু করলে অবশ্যই ছাপতে হবে, তার সংবাদমূল্য থাকুক আর নাই থাকুক। কিন্তু খারাপ কিছু করলে তা কোথাও ছাপা হয় না। মোবাইল কোম্পানিগুলো বাংলাদেশের গণমাধ্যমের বড় বিজ্ঞাপনদাতা। তাই তারা দিনের পর দিন খারাপ সার্ভিস দিয়ে বেশি টাকা নিলেও কোনো পত্রিকায় তাদের বিরুদ্ধে এক লাইনও লেখা হয় না। রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীদের অনেক অনিয়মের খবর আপনারা ব্যক্তিগতভাবে জানেন, কিন্তু কোনো পত্রিকায় কখনো তেমন কোনো নিউজ দেখেছেন?
এভাবে প্রতিদিন অনেক অসংবাদ পত্রিকায় ছাপা হয়। আবার অনেক সংবাদ হারিয়ে যায় অন্ধকার গহবরে। এভাবে বিজ্ঞাপনদাতারা এক ধরনের স্বেচ্ছাচারী ক্ষমতা ভোগ করেন। তারা যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন, কোনো পত্রিকায় কোনো সংবাদ ছাপা হবে না। রাজনীতিবিদদের পান থেকে চুন খসলেই আমরা ঝাঁপিয়ে পড়ি। কিন্তু বিজ্ঞাপনদাতাদের অনেক অন্যায় মুখ বুজে সয়ে যাই। পত্রিকা বা টিভির নিউজরুমের কাছে মালিকের নির্দেশ আর বিজ্ঞাপনদাতার অনুরোধ সমান গুরুত্বপূর্ণ।
বিভিন্ন পত্রিকা এবং টিভিতে বিজ্ঞাপন দেয় এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা অন্তত একশো। তার মানে বাংলাদেশে এমন একশো কোম্পানি আছে, যারা যা ইচ্ছা তাই করতে পারে। কারণ তারা জানে, তারা অন্যায় করলেও কোনো নিউজ হবে না। বরং গণমাধ্যম তাদের পক্ষে দাঁড়াবে। কী ভয়ঙ্কর!
গণমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেয়া হয় পণ্যের প্রচার এবং সেই প্রচারের মাধ্যমে প্রসারের জন্য। বাংলাদেশে অনেক কোম্পানির পণ্য আছে, যার যথেষ্ট প্রসার আছে, প্রসারের জন্য আর বিজ্ঞাপন দেয়ার দরকার নেই। অনেক কোম্পানি আছে যাদের ভোক্তার চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহের সক্ষমতা নেই। তারপরও তারা দিনের পর দিন বিজ্ঞাপন দিয়ে যান। কেন? এই বিজ্ঞাপন পণ্যের প্রচারের জন্য নয়। এই বিজ্ঞাপন গণমাধ্যমের মুখ বন্ধ রাখার জন্য বা গণমাধ্যমকে হাতে রাখার জন্য। যাতে তাদের পণ্য নিয়ে কোনো নেতিবাচক রিপোর্ট ছাপা বা প্রচার না হয়।
বিজ্ঞাপনের এই সর্বগ্রাসী প্রবণতার কথা আমি জানি। তাই হাইকোর্টের রায়ের সাথে আমি একশোভাগ একমত। তবুও আমি হাইকোর্টের কাছে বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি, তারা যেন, তাদের রায়টি পুনর্বিবেচনা করেন। কারণ এই মুহূর্তে বাংলাদেশের গণমাধ্যম, বিশেষ করে টেলিভিশন এক গভীর সংকটকাল পার করছে। একটি চ্যানেল নিউজ বন্ধ করে দিয়েছে। আরো অনেকেই নিউজের লোকবল ছোট করে আনছে। হুট করে টেলিভিশনের সংখ্যা বেড়ে গেলেও বিজ্ঞাপনের বাজার বাড়েনি। এখন ১০ জনের খাবার ৩০ জনকে ভাগ করে খেতে হচ্ছে। তাই চলছে কাড়াকাড়ি। কিন্তু কারোই পেট ভরছে না।
মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হলো, বাংলাদেশের ছোট্ট বিজ্ঞাপন বাজারের একটা বড় অংশ ভারতের বিভিন্ন চ্যানেলে চলে যাচ্ছে। কারণ সেই চ্যানেলগুলো বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয়। টিভি ইন্ডাস্ট্রি সংশ্লিষ্টদের দাবির মুখে সরকার দেশের বিজ্ঞাপন বিদেশি চ্যানেলে যাওয়া ঠেকাতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছে। ধুকতে থাকা টিভি ইন্ডাস্ট্রি বেঁচে থাকতে তীব্র লড়াই করছে। এই সময় সরকার, বিচার বিভাগ, বিজ্ঞাপনদাতা, দর্শক, ক্যাবল অপারেটর সবার প্রতি অনুরোধ- আপনারা আমাদের পাশে দাঁড়ান।
বিজ্ঞাপনদাতা বা স্পন্সরের নামে শিরোনাম বা কোনো বিষয়ভিত্তিক সংবাদ প্রচার করা না গেলে টেলিভিশনগুলোর আয় আরো কমে যাবে। সঙ্কট আরো তীব্র হবে। হাইকোর্টের প্রতি বিশেষ অনুরোধ, তারা যেন রায়টি পুনর্বিবেচনা করেন। কারণ তাদের এই রায় আমাদের পেটে লাথি মারার শামিল।