বাড়িতে ঢুকে দিনেদুপুরে যুবককে গুলি করে হত্যা

- আপডেট সময় : ০৭:১৪:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০১৯ ১১৬ বার পড়া হয়েছে

বগুড়া ব্যুরো;
বগুড়ায় দুর্বৃত্তরা বাড়ির শয়ন ঘরে ঢুকে মারুফ হোসেন পাভেল (৩৫) নামে এক যুবককে গুলি করে হত্যা করেছে। মঙ্গলবার দুপুরে শহরের দক্ষিণ চেলোপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে।
পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে এ হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে পারেনি। তবে নিহতের দুই বোন দাবি করেছেন, তাদের ভাই মাদকাসক্ত ছিল। সবসময় মাদকসেবীদের নিয়ে ঘরে আড্ডা দিতো।
তাদের ধারনা, মাদক সেবন নিয়ে বিরোধেই কেউ তাকে গুলি করে হত্যা করেছে।
সরেজমিন এলাকায় গিয়ে জানা গেছে, শহরের দক্ষিণ চেলোপাড়া (নাটাই) এলাকার কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক নেতা মরহুম মকবুল হোসেনের দুই স্ত্রী। একজন বেঁচে আছেন। মকবুল হোসেনের তিন ছেলে ও চার মেয়ে। শফিকুল ইসলাম নামে এক ছেলে প্রায় ২৫ বছর আগে গুম হন। আরেক ছেলের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়।
অপর ছেলে মারুফ হোসেন পাভেল কোনো কাজ করতেন না। তিনি অবিবাহিত ছিলেন। বিশাল এলাকার ওপর তিনতলা বাড়ির নিচের দুইতলা ভাড়া দেয়া। তৃতীয় তলায় পাভেল, তার মা ও দুই বোন থাকেন।
সৎ বোন ফরিদা ইয়াসমিন, মাহবুবা খাতুন ও চাচী জীবন নাহার জানান, পাভেল মাদকাসক্ত ছিল। ঘরের দরজা বন্ধ করে বিভিন্ন এলাকার বন্ধুদের নিয়ে নেশা করতো। এ কারণে কেউ তারা ওইদিকে যেতেন না। মঙ্গলবার বেলা ১টার দিকে বারান্দায় কিছু পড়ে যাবার শব্দ পান। সেখানে গিয়ে দেখেন, পাভেল রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। দ্রুত তাকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
দুই বোন বলেছেন, প্রায় এক মাস আগে পাভেল এক ব্যক্তিকে ধরে এনে মারপিট করেছিল। ওই ব্যক্তি এ ব্যাপারে সদর থানায় মামলা করেন। পুলিশ বাড়িতে এলেও পাভেলকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
তাদের ধারনা, এ ঘটনায় বা বন্ধুদের সঙ্গে মাদকসেবন নিয়ে বিরোধে কেউ তার তলপেটে গুলি করে হত্যা করেছে।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসীরা জানিয়েছেন, মরহুম মকবুল হোসেনের তিন ছেলের মধ্যে দুজন খুন ও স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। শুধু পাভেল ও চার বোন জীবিত। তাদের বিশাল বাড়ি রয়েছে।
এলাকাবাসীর ধারনা, ওই বাড়ি হাতিয়ে নিতেই স্বজনদের কেউ মাদকাসক্তের সুযোগ নিয়ে পাভেলকে ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে গুলিতে হত্যা করেছে। যা সঠিকভাবে তদন্ত হলেই স্পস্ট হবে।
পুরাতন তিনতলা বাড়ির উপর তলায় উত্তরপাশে পাভেলের কক্ষে গিয়ে বিছানা, বাথরুম ও ড্রয়ংরুমে রক্ত দেখা যায়। দুটি ঘরে মাদকসেবনের উপকরণ ছিল। বেডরুম, ড্রয়ং রুম ও পাশের একটি রুমে এবং বারান্দায় রক্ত দেখা যায়। সম্ভবত গুলি করার পর পাভেল উঠে বারান্দায় এসে পড়ে যান।
বগুড়া সদর থানার ওসি এসএম বদিউজ্জামান জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে নিহতের বোন ফরিদা ইয়াসমিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। দুর্বৃত্তরা পিস্তল দিয়ে পাভেলের ডান পায়ের জয়েন্টে গুলি করেছে।