ঢাকা ০২:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo মঙ্গল শোভাযাত্রা – তাসফিয়া ফারহানা ঐশী Logo সাস্টিয়ান ব্রাহ্মণবাড়িয়া এর ইফতার মাহফিল সম্পন্ন Logo কুবির চট্টগ্রাম স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের ইফতার ও পূর্নমিলনী Logo অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদের মায়ের মৃত্যুতে শাবির মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্ত চিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ পরিষদের শোক প্রকাশ Logo শাবির অধ্যাপক জহীর উদ্দিনের মায়ের মৃত্যুতে উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo বিশ কোটিতে গণপূর্তের প্রধান হওয়ার মিশনে ‘ছাত্রদল ক্যাডার প্রকৌশলী’! Logo দূর্নীতির রাক্ষস ফায়ার সার্ভিসের এডি আনোয়ার! Logo ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতি হওয়া শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামোর সংস্কার শুরু Logo বুয়েটে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতির দাবিতে শাবিপ্রবি ছাত্রলীগের মানববন্ধন Logo কুবি উপাচার্যের বক্তব্যের প্রমাণ দিতে শিক্ষক সমিতির সাত দিনের আল্টিমেটাম




রমজানে দূর হোক পানি শূন্যতা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৬:২৬:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ মে ২০১৯ ১১১ বার পড়া হয়েছে

পানি দেহের জন্য ভীষণ জরুরি। শুধু রমজান নয়, পুরো বছরে পান করুন প্রচুর পানি। পানি দেহের প্রতিটি অঙ্গের জন্য আনে সুফল। আমাদের দেহের ভেতরে কোনো দাঁত নাই। তাই খাবার ভালো ভাবে হজম হবার জন্য প্রতিদিন গড়ে ১-২ লিটার পানি পান করা দরকার। পানি খাবারের সাথে মিশে খাবার হজমে সাহায্য করে। পানি আমাদের দেহের প্রতিটি অঙ্গের জন্য ভীষণ জরুরি।

আমাদের দেহের অতি প্রয়োজনীয় একটি অঙ্গের নাম হলো কিডনী। কিডনী দেহের ছাকন যন্ত্রের মতো কাজ করে। দেহের জরুরি উপাদানগুলোকে রেখে, অপ্রয়োজনীয় অংশগুলোকে সূত্রের সাহায্যে শরীরের বাহিরে বের করে দেয় কিডনী। এই অঙ্গ আমাদের দেহে রয়েছে পেটের দুই পাশে দুইটি। প্রচুর পানি খেলে কিডনী কাজ করে ভালোভাবে। তবে কিডনী নষ্ট হয়ে যাবার পরে, চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত পানি খাওয়াটা অনুচিত।

প্রচুর পানি খেলে অ্যাসিডিটি বা গ্যাসট্রিকের পরিমাণ কমে যায়। বুকে জ্বালা পোড়া, বমি বমি লাগা, টক ঢেকুর ওঠা, পেটে ব্যাথা, বুকে আলপিনের মতো খোঁচানো ব্যাথা, পিঠে ব্যথাও কমে যায়। খাবার সঠিক ভাবে হজম না হবার জন্য এমন হয়।

এই রমযানে তেলে ভাজা খাবার খাওয়া হয় বেশি। তাই এফতারের পরে থেকে সেহরী পর্যন্ত পান করুন প্রচুর পানি। পানি দেহের ফ্যাট সেলগুলোকে কমিয়ে দেয়। ফলে ওজন কমাতে সুবিধা হয়। যারা প্রচুর খাবার নিয়ন্ত্রণ ও ব্যায়াম করে, ওজন কমাতে চায়, তাদের নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার ও প্রচুর পানি পান করা উচিৎ।

প্রচুর পরিমাণে পানি দেহের বিলিরুবিনের এর মাত্রা কমিয়ে দেয়। বিলুরুবিন হলো রক্তের একটি জরুরী উপাদান। যা নির্দিষ্ট পরিমাণের চেয়ে বেড়ে গেলে জন্ডিস হয়ে যায়। আবার পিত্তথলির কাজকর্ম সুষ্ঠুভাবে চালানোর জন্য পানি পান করাটা যথেষ্ট দরকার।

কাঠিন্যের সমস্যা দূর করার জন্য পানি ভীষণ দরকার। পানি নিয়মিত খেলে খাবার ঠিক মতো হজম হয়, ব্রণও ভালো হয়। পুরো দেহে রক্ত চলাচল ঠিক মতো হবার জন্য ত্বকের উজ্জ্বলতা বজায় থাকে।

গর্ভস্থ শিশু পেটে পানির থলের মধ্যে থাকে। গর্ভবতী মায়েরা নিয়মিত পান করলে সেই পানির ব্যাগটি ভালো থাকবে।

যেকোনো অপারেশনের পরে পানি পান করলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবার জন্য কাটা জায়গায় চাপ লাগবেনা, রক্ত ঠিক মতো চলাচলের জন্য কাটা জায়গা দ্রুত শুকাবে।

ঘাম ও মূত্রের সাহায্যে দেহের দূষিত তরল পদার্থকে বাহিরে বের করতে সাহায্য করে পানি। এতে অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা বজায় থাকে, হাত পায়ের তলায় জ্বালা পোড়া কমবে। যাদের বার বার প্রস্রাবে ইনফেকশান হয়। তারা প্রচুর পানি পান করুন।

মাতৃদুগ্ধদানকালীন, অতিরিক্ত গরমে দেহের লবণ পানির সাম্যাবস্থা বজায় রাখার জন্য, ডায়াবেটিক ও উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের হৃৎপিন্ড ভালোভাবে কাজ করার জন্য পানি প্রচুর পরিমাণে পান করাটা ভীষণ দরকারী।

জন্মনিয়ন্ত্রণকারী পিল খান, এমন নারীরা প্রচুর পানি পান করুন।

কৌটার দুধ খায়, এমন শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্য হয় খুব বেশি। এই অবস্থা দূর করার জন্য দরকার প্রচুর পানি।

দীর্ঘক্ষণ চোখ বা মস্তিষ্কের কাজ করার পরে পানি খেলে, মস্তিষ্কের প্রতিটি স্থানে রক্তের সাথে পানি পৌঁছে, কর্মক্ষমতা বাড়ায়।

রক্তে ইনফেকশনের পরিমাণ কমায় পানি।

পানির অপর নাম জীবন। তাই সময় ও সুযোগ বুঝে নিয়মিত প্রচুর পানি পান করুন। কর্মক্ষেত্রে সম্ভব না হলে, যে সময়টুকু বাসায় আছেন, সেই সময়ে পানি পান করুন বেশি করে। আর রমজানে বেশি পানি খেলে অ্যাসিডিটির পরিমাণ কমবে। দূর হবে পানি শূন্যতা।

ডাঃ ফারহানা মোবিন
এমবিবিএস (ডি.ইউ), পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন (পাবলিক হেল্থ),
পিজিটি (গাইনী এন্ড অবস্-স্কয়ার হাসপাতাল),
রেসিডেন্ট মেডিকেল অফিসার (গাইনী এন্ড অবস্),
স্কয়ার হাসপাতাল, ঢাকা, বাংলাদেশ,
ডায়াবেটোলোজি, বারডেম হসপিটাল (অনগোয়িং)
উপস্থাপিকাঃ ‘প্রবাসীর ডাক্তার’ বাংলাটিভিতে প্রচারিত সাপ্তাহিক অনুষ্ঠান

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




রমজানে দূর হোক পানি শূন্যতা

আপডেট সময় : ০৬:২৬:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ মে ২০১৯

পানি দেহের জন্য ভীষণ জরুরি। শুধু রমজান নয়, পুরো বছরে পান করুন প্রচুর পানি। পানি দেহের প্রতিটি অঙ্গের জন্য আনে সুফল। আমাদের দেহের ভেতরে কোনো দাঁত নাই। তাই খাবার ভালো ভাবে হজম হবার জন্য প্রতিদিন গড়ে ১-২ লিটার পানি পান করা দরকার। পানি খাবারের সাথে মিশে খাবার হজমে সাহায্য করে। পানি আমাদের দেহের প্রতিটি অঙ্গের জন্য ভীষণ জরুরি।

আমাদের দেহের অতি প্রয়োজনীয় একটি অঙ্গের নাম হলো কিডনী। কিডনী দেহের ছাকন যন্ত্রের মতো কাজ করে। দেহের জরুরি উপাদানগুলোকে রেখে, অপ্রয়োজনীয় অংশগুলোকে সূত্রের সাহায্যে শরীরের বাহিরে বের করে দেয় কিডনী। এই অঙ্গ আমাদের দেহে রয়েছে পেটের দুই পাশে দুইটি। প্রচুর পানি খেলে কিডনী কাজ করে ভালোভাবে। তবে কিডনী নষ্ট হয়ে যাবার পরে, চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত পানি খাওয়াটা অনুচিত।

প্রচুর পানি খেলে অ্যাসিডিটি বা গ্যাসট্রিকের পরিমাণ কমে যায়। বুকে জ্বালা পোড়া, বমি বমি লাগা, টক ঢেকুর ওঠা, পেটে ব্যাথা, বুকে আলপিনের মতো খোঁচানো ব্যাথা, পিঠে ব্যথাও কমে যায়। খাবার সঠিক ভাবে হজম না হবার জন্য এমন হয়।

এই রমযানে তেলে ভাজা খাবার খাওয়া হয় বেশি। তাই এফতারের পরে থেকে সেহরী পর্যন্ত পান করুন প্রচুর পানি। পানি দেহের ফ্যাট সেলগুলোকে কমিয়ে দেয়। ফলে ওজন কমাতে সুবিধা হয়। যারা প্রচুর খাবার নিয়ন্ত্রণ ও ব্যায়াম করে, ওজন কমাতে চায়, তাদের নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার ও প্রচুর পানি পান করা উচিৎ।

প্রচুর পরিমাণে পানি দেহের বিলিরুবিনের এর মাত্রা কমিয়ে দেয়। বিলুরুবিন হলো রক্তের একটি জরুরী উপাদান। যা নির্দিষ্ট পরিমাণের চেয়ে বেড়ে গেলে জন্ডিস হয়ে যায়। আবার পিত্তথলির কাজকর্ম সুষ্ঠুভাবে চালানোর জন্য পানি পান করাটা যথেষ্ট দরকার।

কাঠিন্যের সমস্যা দূর করার জন্য পানি ভীষণ দরকার। পানি নিয়মিত খেলে খাবার ঠিক মতো হজম হয়, ব্রণও ভালো হয়। পুরো দেহে রক্ত চলাচল ঠিক মতো হবার জন্য ত্বকের উজ্জ্বলতা বজায় থাকে।

গর্ভস্থ শিশু পেটে পানির থলের মধ্যে থাকে। গর্ভবতী মায়েরা নিয়মিত পান করলে সেই পানির ব্যাগটি ভালো থাকবে।

যেকোনো অপারেশনের পরে পানি পান করলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবার জন্য কাটা জায়গায় চাপ লাগবেনা, রক্ত ঠিক মতো চলাচলের জন্য কাটা জায়গা দ্রুত শুকাবে।

ঘাম ও মূত্রের সাহায্যে দেহের দূষিত তরল পদার্থকে বাহিরে বের করতে সাহায্য করে পানি। এতে অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা বজায় থাকে, হাত পায়ের তলায় জ্বালা পোড়া কমবে। যাদের বার বার প্রস্রাবে ইনফেকশান হয়। তারা প্রচুর পানি পান করুন।

মাতৃদুগ্ধদানকালীন, অতিরিক্ত গরমে দেহের লবণ পানির সাম্যাবস্থা বজায় রাখার জন্য, ডায়াবেটিক ও উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের হৃৎপিন্ড ভালোভাবে কাজ করার জন্য পানি প্রচুর পরিমাণে পান করাটা ভীষণ দরকারী।

জন্মনিয়ন্ত্রণকারী পিল খান, এমন নারীরা প্রচুর পানি পান করুন।

কৌটার দুধ খায়, এমন শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্য হয় খুব বেশি। এই অবস্থা দূর করার জন্য দরকার প্রচুর পানি।

দীর্ঘক্ষণ চোখ বা মস্তিষ্কের কাজ করার পরে পানি খেলে, মস্তিষ্কের প্রতিটি স্থানে রক্তের সাথে পানি পৌঁছে, কর্মক্ষমতা বাড়ায়।

রক্তে ইনফেকশনের পরিমাণ কমায় পানি।

পানির অপর নাম জীবন। তাই সময় ও সুযোগ বুঝে নিয়মিত প্রচুর পানি পান করুন। কর্মক্ষেত্রে সম্ভব না হলে, যে সময়টুকু বাসায় আছেন, সেই সময়ে পানি পান করুন বেশি করে। আর রমজানে বেশি পানি খেলে অ্যাসিডিটির পরিমাণ কমবে। দূর হবে পানি শূন্যতা।

ডাঃ ফারহানা মোবিন
এমবিবিএস (ডি.ইউ), পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন (পাবলিক হেল্থ),
পিজিটি (গাইনী এন্ড অবস্-স্কয়ার হাসপাতাল),
রেসিডেন্ট মেডিকেল অফিসার (গাইনী এন্ড অবস্),
স্কয়ার হাসপাতাল, ঢাকা, বাংলাদেশ,
ডায়াবেটোলোজি, বারডেম হসপিটাল (অনগোয়িং)
উপস্থাপিকাঃ ‘প্রবাসীর ডাক্তার’ বাংলাটিভিতে প্রচারিত সাপ্তাহিক অনুষ্ঠান