ঢাকা ০৬:৪০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo শাবি ক্যাম্পাসে আন্দোলনকারীদের ছড়ানো গুজবে সয়লাব Logo সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কে আন্দোলনকারীরা পুলিশের উপর হামলা চালালে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে Logo জবিতে আজীবন ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ Logo শাবিতে হল প্রশাসনকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে নোটিসে জোর পূর্বক সাইন আদায় Logo এবার সামনে আসছে ছাত্রলীগ কর্তৃক আন্দোলনকারীদের মারধরের আরো ঘটনা Logo আবাসিক হল ছাড়ছে শাবি শিক্ষার্থীরা Logo নিরাপত্তার স্বার্থে শাবি শিক্ষার্থীদের আইডিকার্ড সাথে রাখার আহবান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের Logo জনস্বাস্থ্যের প্রধান সাধুর যত অসাধু কর্ম: দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের অভিযোগ! Logo বিআইডব্লিউটিএ বন্দর শাখা যুগ্ম পরিচালক আলমগীরের দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্য  Logo রাজশাহীতে এটিএন বাংলার সাংবাদিক সুজাউদ্দিন ছোটনকে হয়রানিমূলক মামলায় বএিমইউজরে নিন্দা ও প্রতিবাদ




শিক্ষকের নোংরা কাজের বর্ণনা দিল ছাত্রীরা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:২৬:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ মে ২০১৯ ৮২ বার পড়া হয়েছে

উপজেলা প্রতিনিধি ,কালীগঞ্জ (গাজীপুর) ;
নানা অনিয়ম আর অব্যস্থাপনার পর গাজীপুরের কালীগঞ্জ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল আহেদের বিরুদ্ধে এবার যৌন নীপিড়নের অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। রোববার অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইউএনও মো. শিবলী সাদিক।

জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১৪ জুন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক রাশিদা বেগমের বদলি হয়। পরে ওই বছরই সেপ্টেম্বরে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে মো. আব্দুল আহেদ যোগদান করেন। নিয়মানুযায়ী তাকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়া হয়। আর দায়িত্ব পাওয়ার পরপরই বিদ্যালয়ে চলতে থাকে নানা অনিয়ম ও অব্যস্থাপনা।

এর ধারাবাহিকতায় ওই বিদ্যালয়ের ৯ম ও ১০ম শ্রেণির ছাত্রীদেরকে নানাভাবে যৌন নীপিড়ন করে আসছিলেন তিনি। কিন্তু নীপিড়নের কথা প্রকাশ করলে টেস্ট পরীক্ষায় ফেল করানোর হুমকি দিতেন আব্দুল আহেদ। সেই ভয়ে শুরু থেকে কেউ কিছু না বললেও নীপিড়ন বেড়ে যাওয়ায় ৯ম ও ১০ম শ্রেণির ছাত্রীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের ৯ম ও ১০ম শ্রেণির কয়েকজন ছাত্রী জানায়, ‘তারা বান্ধবীরা মিলে যখন গ্রুপ ছবি তুলত, তখন ওই শিক্ষক তাদের সঙ্গে ছবি তুলতে আগ্রহী হত এবং তাদেরকে ওড়না সরাতে বাধ্য করত। নানা অজুহাতে বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের গায়ে ও স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিত আব্দুল আহেদ। এমনকি বিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বড় ছাত্রীদের ওড়না ছাড়া নৃত্য পরিবেশনে বাধ্য করত সে।’

এছাড়াও ভারপ্রাপ্ত ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সরকারি নিয়ম অবমাননা, নিজের ইচ্ছামতো ভর্তি বাণিজ্য ও অতিথি শিক্ষক নিয়োগ, সহকর্মীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ, অতিরিক্ত ভর্তি ফি, অনিয়মিত উপস্থিতি, ভিন্ন অজুহাতে বেতনের সঙ্গে অতিরিক্ত ফি আদায়সহ নানা অনিয়ম আর অব্যস্থাপনার অভিযোগও রয়েছে।

এদিকে লিখিত অভিযোগের পর থেকে আব্দুল আহেদ বিদ্যালয়ে আসা বন্ধ করে দিয়েছেন। বর্তমানে তিনি পলাতক রয়েছেন। এ ব্যাপারে তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল ও ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও কথা বলা সম্ভব হয়নি।

অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শিবলী সাদিক বলেন, ছাত্রীদের কাছে আগেই মৌখিক অভিযোগ পেয়েছিলাম এবং বিদ্যালয় পরিদর্শন করে ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। কিন্তু যেহেতু একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান তাই নিয়মের মধ্যে থেকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তাই ছাত্রীদেরকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। তারা লিখিত অভিযোগ দিয়েছে এবং সেই প্রেক্ষিতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ জুবের আলমকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন উপজেলা মৎস্য অফিসার মো. লতিফুর রহমান, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নূর-ই-জান্নাত। কমিটিকে আগামী ৭ কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের কথা বলা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




শিক্ষকের নোংরা কাজের বর্ণনা দিল ছাত্রীরা

আপডেট সময় : ১২:২৬:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ মে ২০১৯

উপজেলা প্রতিনিধি ,কালীগঞ্জ (গাজীপুর) ;
নানা অনিয়ম আর অব্যস্থাপনার পর গাজীপুরের কালীগঞ্জ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল আহেদের বিরুদ্ধে এবার যৌন নীপিড়নের অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। রোববার অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইউএনও মো. শিবলী সাদিক।

জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১৪ জুন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক রাশিদা বেগমের বদলি হয়। পরে ওই বছরই সেপ্টেম্বরে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে মো. আব্দুল আহেদ যোগদান করেন। নিয়মানুযায়ী তাকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়া হয়। আর দায়িত্ব পাওয়ার পরপরই বিদ্যালয়ে চলতে থাকে নানা অনিয়ম ও অব্যস্থাপনা।

এর ধারাবাহিকতায় ওই বিদ্যালয়ের ৯ম ও ১০ম শ্রেণির ছাত্রীদেরকে নানাভাবে যৌন নীপিড়ন করে আসছিলেন তিনি। কিন্তু নীপিড়নের কথা প্রকাশ করলে টেস্ট পরীক্ষায় ফেল করানোর হুমকি দিতেন আব্দুল আহেদ। সেই ভয়ে শুরু থেকে কেউ কিছু না বললেও নীপিড়ন বেড়ে যাওয়ায় ৯ম ও ১০ম শ্রেণির ছাত্রীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের ৯ম ও ১০ম শ্রেণির কয়েকজন ছাত্রী জানায়, ‘তারা বান্ধবীরা মিলে যখন গ্রুপ ছবি তুলত, তখন ওই শিক্ষক তাদের সঙ্গে ছবি তুলতে আগ্রহী হত এবং তাদেরকে ওড়না সরাতে বাধ্য করত। নানা অজুহাতে বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের গায়ে ও স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিত আব্দুল আহেদ। এমনকি বিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বড় ছাত্রীদের ওড়না ছাড়া নৃত্য পরিবেশনে বাধ্য করত সে।’

এছাড়াও ভারপ্রাপ্ত ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সরকারি নিয়ম অবমাননা, নিজের ইচ্ছামতো ভর্তি বাণিজ্য ও অতিথি শিক্ষক নিয়োগ, সহকর্মীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ, অতিরিক্ত ভর্তি ফি, অনিয়মিত উপস্থিতি, ভিন্ন অজুহাতে বেতনের সঙ্গে অতিরিক্ত ফি আদায়সহ নানা অনিয়ম আর অব্যস্থাপনার অভিযোগও রয়েছে।

এদিকে লিখিত অভিযোগের পর থেকে আব্দুল আহেদ বিদ্যালয়ে আসা বন্ধ করে দিয়েছেন। বর্তমানে তিনি পলাতক রয়েছেন। এ ব্যাপারে তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল ও ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও কথা বলা সম্ভব হয়নি।

অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শিবলী সাদিক বলেন, ছাত্রীদের কাছে আগেই মৌখিক অভিযোগ পেয়েছিলাম এবং বিদ্যালয় পরিদর্শন করে ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। কিন্তু যেহেতু একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান তাই নিয়মের মধ্যে থেকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তাই ছাত্রীদেরকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। তারা লিখিত অভিযোগ দিয়েছে এবং সেই প্রেক্ষিতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ জুবের আলমকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন উপজেলা মৎস্য অফিসার মো. লতিফুর রহমান, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নূর-ই-জান্নাত। কমিটিকে আগামী ৭ কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের কথা বলা হয়েছে।