নিজস্ব প্রতিবেদক;
রাজধানীতে নতুন নতুন কৌশলে নতুন নতুন প্রতারণার আবিস্কার হয়ছে। কেউ করে চাকুরি দেয়ার নামে প্রতারণা আবার কেউ করে বিয়ের নামে প্রতারণা। এগুলো ছাড়াও ডিজিটাল দেশে ডিজিটাল নিত্যনতুন অনেক প্রতারণার ঘটনা হরহামেশাই ঘটে। কেউ প্রতারণার শিকার হয়ে প্রতিবাদ করে আবার কেউ মানসম্মানের ভয়ে মুখ বুঝে সহ্য করে যায়। এতে মূখ বুঝে সহ্য করার মানুষটির উপর নেমে আসে আরো অন্ধকার। লিমা আক্তার তেমনি এক প্রতারক।
পুলিশ খেকো লিমা আক্তারের প্রতারণা’র ভয়াঙ্কর কাহিনী শুনলে অবাক না হয়ে পারা যায়না।সে জানে পুলিশের দুর্বলতা কোন জায়গায়।প্রথমে হায় হ্যালো তারপর প্রেম, রুপ আর দেহের জালে ফাঁসিয়ে বিয়ের তাগেদা, প্রেমিক পুলিশ শটকে গেলেই মামলা সহ পুলিশ সদর দপ্তরে অভিযোগ। প্রমান সেতো সম্পর্কের প্রথম দিন থাকেই জমানো তার কাজ।পুলিশ খেকো লিমা আক্তারের নব্য প্রতারণায় এ পর্যন্ত ডজনখানেক পুলিশ।
তারা সবাই পিএসআই অথবা এএসআইয়ের পদমর্যাদার পুলিশ অফিসার।রুপের জালে ফাঁসানো লিমার প্রতারনায় তাদের জীবনে নেমে আসছে অন্ধকার। এই নারীর প্রতারণার শিকার হয়ে এসব পুলিশ অফিসারগন মান সম্মান ও চাকুরী হারানোর ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পায় না। এক একজন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ওসি থেকে শুরু করে কোর্ট এমনকি পুলিশের সদর দপ্তর পর্যন্ত অভিযোগ করতে দ্বিধা করেন না এই নারী প্রতারক। নাম তার নাবিলা আক্তার ওরফে লিমা আক্তার।নিজেকে মরহুম পুলিশের আস আইয়ের স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দেয়া লিমার টার্গেট পুলিশের এএসআই ও এসআই।যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ফেসবুক ইমু তার হাতিয়ার। বেশির ভাগ শিক্ষানবীশ (এসআই) অফিসারদেরকেই টার্গেট করেন প্রতারক এই নারী। এমন কয়েকজন এসআই (শিক্ষানবীশ) কে ফাঁসিয়ে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন প্রতারক নাবিলা আক্তার ওরফে লিমা আক্তার। এমন তথ্য আমাদের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে। সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন নামে ফেইসবুক আইডি খুলে পুলিশ সদস্যদের সাময়িক ম্যাগাজিন বই থেকে নাম ও মোবাইল ফোন নাম্বার সংগ্রহ করে প্রথমে ফেইসবুকে রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে চ্যাটিং শুরু করে ম্যজেঞ্জারে কল দিয়ে বিভিন্ন ভঙ্গিতে কথা বলে। এরপর মোবাইল কল দিয়ে দেখা করতে বলেন এবং নিজকে সাবেক একজন পুলিশের স্ত্রী পরিচয় দেন। যেই পুলিশ সদস্যের সাথে পরিচয় তাকেই বলেন তার স্বামী এসআই ছিল এবং তার সেই স্বামী মিশনে গিয়ে মারা যান। অভিযোগ রয়েছে, তার স্বামী কখনো পুলিশে চাকুরী তো দুরের কথা থানা এলাকায়ও যায়নি। বর্তমানেও তার এক স্বামী রয়েছ্ েতার এ স্বামী একটি পরিবহণের টিকেট কাউন্টারের চাকুরী করে। জানা গেছে, গত ২০১৭ সালে ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিন থানার এএসআই হাবু (ছন্দনাম, যেহেতু এই ব্যক্তি পুলিশে বর্তমানে কর্মরত আছেন তাই তার মানসম্মানের কথা চিন্তা করে প্রকৃত নাম ব্যবহার করা হয়নি) এর বিরুদ্ধে ডিআইজি বরিশাল বরাবর এক অভিযোগ করেন। অভিযোগে তিনি এই এএসআই তাকে বিয়ে করেছে মর্মে উল্লেখ করেন এবং এও বলে এএসআই বিকু-ছন্দনাম এর সন্তান লিমার গর্ভে। এরপর তার কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেন প্রতারক লিমা আক্তার। ২০১৭ সালে ডিএমপি ঢাকার খিলগাঁও থানার এএসআই কাবু এর বিরুদ্ধে উপ পুলিশ কমিশনার, মতিঝিল জোনের কাছে মৌখিক অভিযোগ করেন। সেই অভিযোগেও বলা হয় লিমা গর্ভবতী। পরে ৩০০ টাকার স্টাম্পে লিখিত দিয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তার কাছ থেকে ৩,৫০,০০০/- টাকা নিয়ে সমঝোতা করেন প্রতারক লিমা। ২০১৮ সালে যাত্রাবাড়ী থানার পিএসআই বাবু’র বিরুদ্ধে উপ পুলিশ কমিশনারের কাছে একটি অভিযোগ দেন। তাও টাকার বিনিময়ে স্টাম্পে লিখিত দিয়ে আপোষ মিমাংশা করেন লিমা আক্তার। এই অভিযোগে তার নাম দেয়া হয় নাবিলা আক্তার লিমা। একই বছর ডিএমপির শাহ আলী থানার পিএসআই ভুলু’র বিরুদ্ধে পুলিশের বিভিন্ন কর্মকর্তা কাছে অভিযোগ দিয়ে সুবিধা না করতে পেরে পরে আদালতের আশ্রয় নেন এই প্রতারক নারী। করেন একটি মামলা, আদালত তার জবানবন্দি শুনে মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন। পিবিআই তদন্ত করে এই প্রতারক নারীর ইতিহাস নিয়ে আর পুলিশকে প্রেমের ফাঁদে টাকা নেয়ার বিষয়ে বিশাল একটি প্রতিবেদন দেন।
প্রিয় পাঠক আমরা তার বিরুদ্ধে ওই প্রতিবেদনটি আগামী পর্বে বিস্তারিত প্রকাশ করবো। সম্প্রতি রাজধানী ডিএমপি খিলগাঁও থানার পিএসআই তেলু এর নামে কোর্টে মামলা করেন এই প্রতারক নারী। এই মামলা করার আগে এই পিএসআই কে একাধিকবার হয় বিয়ে না ১০ লক্ষ টাকা দিতে চাপ দেন প্রতারক লিমা ওরফে নাবিলা আক্তার লিমা। পিএসআই বিকু-৫ টাকা ও বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানালেই আদালতে গিয়ে মামলা করেন এ নারী প্রতারক। এছাড়াও বর্তমানে গাজীপুর, নারায়নগঞ্জ, শরিয়তপুর, বরিশাল, ডেমরা, উত্তরা বেশ কিছু থানার এএসআই ও এসআইকে প্রেমের ফাঁদে ফেলতে জাল ফেতেছেন প্রতারক লিমা। আমরা এই পুলিশের কর্মকর্তাদের বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে পরবর্তীতে প্রকাশ করবো। তবে এই নারী থেকে পুলিশ সদস্যরা সাবধান থাকবেন। আরো বিস্তারিত সকালের সংবাদের পরবর্তী পর্বে।
উল্লেখ থাকে যে, এখানে সকল পুলিশ সদস্যের ছন্দনাম ব্যবহার করা হয়েছে।