ঢাকা ০৩:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করা আমাদের অঙ্গীকারঃ ড. তৌফিক রহমান চৌধুরী  Logo মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির নতুন বাসের উদ্বোধন Logo মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে শিক্ষকদের ভূমিকা অগ্রগণ্য: ভিসি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক Logo মঙ্গল শোভাযাত্রা – তাসফিয়া ফারহানা ঐশী Logo সাস্টিয়ান ব্রাহ্মণবাড়িয়া এর ইফতার মাহফিল সম্পন্ন Logo কুবির চট্টগ্রাম স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের ইফতার ও পূর্নমিলনী Logo অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদের মায়ের মৃত্যুতে শাবির মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্ত চিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ পরিষদের শোক প্রকাশ Logo শাবির অধ্যাপক জহীর উদ্দিনের মায়ের মৃত্যুতে উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo বিশ কোটিতে গণপূর্তের প্রধান হওয়ার মিশনে ‘ছাত্রদল ক্যাডার প্রকৌশলী’! Logo দূর্নীতির রাক্ষস ফায়ার সার্ভিসের এডি আনোয়ার!




লাক্স সুন্দরী এখন বিসিএস ক্যাডার

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:৫৪:১৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০১৯ ১০০ বার পড়া হয়েছে

মৌসুমী হামিদ, মুমতাহীনা চৌধুরী টয়া, চিত্রনায়িকা টুইঙ্কেল অরিন, মডেল রাখিদের সাথে ছিলেন ২০১০ সালের লাক্স সুপারস্টার প্রতিযোগিতায়। চ্যাম্পিয়ন না হলেও পুরস্কার জিতে নেন ক্লোজ আপ মিস বিউটিফুল স্মাইল ক্যাটাগরিতেও।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্রী তানজিমা লাক্স সুন্দরীদের সেরা তালিকায় ছিলেন। শুধু তাই নয় ছোটবেলা থেকেই তিনি নাচ-গান আর অভিনয়ে সেরা ছিলেন। এসবের পাশাপাশি পড়াশোনাতেও তিনি সেরাদের সেরা ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেও তিনি তাঁর সেরাটা দেখিয়েছেন। আর এবার কর্মক্ষেত্রে নিজেকে মেলে ধরার পালা। সোহানিয়া ৩৭তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। ইতোমধ্যে তিনি কাজেও যোগ দিয়েছেন।

চিত্রনায়িকা অরিনের সঙ্গে। তামিল-তেলেগু সিনেমায় অরিন বেশ জনপ্রিয়

সোহানিয়ার বাবা আজিজুল হক খান একজন সরকারি কর্মকর্তা। মা সালমা সুলতানা গৃহিণী। পঞ্চম শ্রেণিতে ট্যালেন্টফুলে বৃত্তি পেয়েছিলেন সোহানিয়া। ছোটবেলা থেকেই ট্যালেন্টদের তালিকায় নাম ছিল সোহানিয়ার। গান ও একক অভিনয়ে জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কার রয়েছে তাঁর। কাবস্কাউট জাতীয় পর্যায়ে রানার্স আপ হয়েছেন। এর পাশাপাশি নাচেও তিনি ছিলেন সেরা।

বাবা-মায়ের অনুপ্রেরণায় তিনি সফলতার পথ ধরেছেন। সব সময় ক্লাসে প্রথম হতেন। বিন্দুবাসিনী সরকারি বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ ও এইচএসসিতে কুমুদিনী সরকারি কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছেন তিনি। তুখোড় মেধাবী ওই ছাত্রী ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে।

এদিকে নিজেকে মেলে ধরার প্রচেষ্টায় নাম লেখান লাক্স সুন্দরী প্রতিযোগিতায়। সেখানেও তিনি সেরা পারফরম করেছেন। লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার-২০১০ এ টপ সেভেনে জায়গা করে নেন। পুরস্কার জিতে নেন ক্লোজ আপ মিস বিউটিফুল স্মাইল ক্যাটাগরিতে। তারপর কিছু টিভিসিও করেছেনে ঢাবির ওই সুন্দরী।

স্বামীর সঙ্গে

অনার্স শেষে স্বপ্ন দেখতে থাকেন বিসিএস ক্যাডার হওয়ার। শুরু করেন প্রস্তুতি। বাংলা ও ইংরেজি পত্রিকা নিয়মিত পড়তেন। বাংলাদেশের ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ, সংবিধান, সম্প্রতি ঘটে যাওয়া দেশ বিদেশের ঘটনাগুলো জানতেন। আর গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নোট করে রাখতেন। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষার্থী হওয়ায় এসব বিষয় সম্পর্কে জানার আগ্রহ তৈরি হয়। তাছাড়া তিনি যেকোনো বিষয়ে মুক্তহস্তে লিখতে পারতেন।

উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিভাগ থাকায় গণিত আর ইংরেজিতে দক্ষ ছিলেন। প্রতিদিন একটা লক্ষ্য নির্ধারণ করে তা পূরণ করতেন। একঘেয়েমি যাতে না আসে এজন্য প্রতিদিন ৩-৪টি বিষয় পড়তেন। তখনকার সহপাঠী বর্তমান স্বামী মেহেদি হাসান ফুয়াদের সঙ্গে ইংরেজিতে কথা বলতেন। ইংরেজিতে কথা বলার অভ্যাস ভাইভাতে কাজে দিয়েছে সোহানিয়ার।

সোহানিয়া মনে করেন, যারা বিসিএস ক্যাডার হতে চায় তাদের উদ্দেশ্যে সোহানিয়া পরামর্শ দিয়ে বলেন, নিয়মিত জাতীয় দৈনিক পত্রিকা পড়া উচিত। প্রতিদিনের পড়া প্রতিদিনই শেষ করতে হবে। প্রতিদিন কিছু সময়ের জন্য হলেও কিছু লেখা উচিত। লেখালেখির দক্ষতা বেশ কাজে দেয়। আর বেসিক তৈরি করার জন্য মাধ্যমিকের মৌলিক বইগুলো পড়া যেতে পারে। সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে পড়াশোনা করতে হবে। যদি আত্মবিশ্বাস আর লক্ষ্য ঠিক থাকে তাহলে স্বপ্ন পূরণ হবেই। মন থেকে কিছু চাইলে আর সে অনুযায়ী পরিশ্রম করলে আল্লাহ তার স্বপ্ন পূরণ করেন।

মজার ব্যাপার হলো একই বছর ৩৭তম বিসিএসে সোহানিয়ার স্বামী মেহেদি ইসলাম ফুয়াদ পুলিশ ক্যাডারে গেজেটপ্রাপ্ত হয়েছেন। গত বছরের ১২ জুন ৩৭তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করে পিএসসি। এতে ১ হাজার ৩১৪ জনকে বিভিন্ন ক্যাডার পদে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। এরপর চলতি বছরের ২০ মার্চ ৩৭তম বিসিএসে ১ হাজার ২২১ জনকে বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগের সুপারিশ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সে তালিকায় ছিলেন সোহানিয়া ও তার স্বামী ফুয়াদ।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




লাক্স সুন্দরী এখন বিসিএস ক্যাডার

আপডেট সময় : ১১:৫৪:১৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০১৯

মৌসুমী হামিদ, মুমতাহীনা চৌধুরী টয়া, চিত্রনায়িকা টুইঙ্কেল অরিন, মডেল রাখিদের সাথে ছিলেন ২০১০ সালের লাক্স সুপারস্টার প্রতিযোগিতায়। চ্যাম্পিয়ন না হলেও পুরস্কার জিতে নেন ক্লোজ আপ মিস বিউটিফুল স্মাইল ক্যাটাগরিতেও।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্রী তানজিমা লাক্স সুন্দরীদের সেরা তালিকায় ছিলেন। শুধু তাই নয় ছোটবেলা থেকেই তিনি নাচ-গান আর অভিনয়ে সেরা ছিলেন। এসবের পাশাপাশি পড়াশোনাতেও তিনি সেরাদের সেরা ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেও তিনি তাঁর সেরাটা দেখিয়েছেন। আর এবার কর্মক্ষেত্রে নিজেকে মেলে ধরার পালা। সোহানিয়া ৩৭তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। ইতোমধ্যে তিনি কাজেও যোগ দিয়েছেন।

চিত্রনায়িকা অরিনের সঙ্গে। তামিল-তেলেগু সিনেমায় অরিন বেশ জনপ্রিয়

সোহানিয়ার বাবা আজিজুল হক খান একজন সরকারি কর্মকর্তা। মা সালমা সুলতানা গৃহিণী। পঞ্চম শ্রেণিতে ট্যালেন্টফুলে বৃত্তি পেয়েছিলেন সোহানিয়া। ছোটবেলা থেকেই ট্যালেন্টদের তালিকায় নাম ছিল সোহানিয়ার। গান ও একক অভিনয়ে জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কার রয়েছে তাঁর। কাবস্কাউট জাতীয় পর্যায়ে রানার্স আপ হয়েছেন। এর পাশাপাশি নাচেও তিনি ছিলেন সেরা।

বাবা-মায়ের অনুপ্রেরণায় তিনি সফলতার পথ ধরেছেন। সব সময় ক্লাসে প্রথম হতেন। বিন্দুবাসিনী সরকারি বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ ও এইচএসসিতে কুমুদিনী সরকারি কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছেন তিনি। তুখোড় মেধাবী ওই ছাত্রী ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে।

এদিকে নিজেকে মেলে ধরার প্রচেষ্টায় নাম লেখান লাক্স সুন্দরী প্রতিযোগিতায়। সেখানেও তিনি সেরা পারফরম করেছেন। লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার-২০১০ এ টপ সেভেনে জায়গা করে নেন। পুরস্কার জিতে নেন ক্লোজ আপ মিস বিউটিফুল স্মাইল ক্যাটাগরিতে। তারপর কিছু টিভিসিও করেছেনে ঢাবির ওই সুন্দরী।

স্বামীর সঙ্গে

অনার্স শেষে স্বপ্ন দেখতে থাকেন বিসিএস ক্যাডার হওয়ার। শুরু করেন প্রস্তুতি। বাংলা ও ইংরেজি পত্রিকা নিয়মিত পড়তেন। বাংলাদেশের ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ, সংবিধান, সম্প্রতি ঘটে যাওয়া দেশ বিদেশের ঘটনাগুলো জানতেন। আর গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নোট করে রাখতেন। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষার্থী হওয়ায় এসব বিষয় সম্পর্কে জানার আগ্রহ তৈরি হয়। তাছাড়া তিনি যেকোনো বিষয়ে মুক্তহস্তে লিখতে পারতেন।

উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিভাগ থাকায় গণিত আর ইংরেজিতে দক্ষ ছিলেন। প্রতিদিন একটা লক্ষ্য নির্ধারণ করে তা পূরণ করতেন। একঘেয়েমি যাতে না আসে এজন্য প্রতিদিন ৩-৪টি বিষয় পড়তেন। তখনকার সহপাঠী বর্তমান স্বামী মেহেদি হাসান ফুয়াদের সঙ্গে ইংরেজিতে কথা বলতেন। ইংরেজিতে কথা বলার অভ্যাস ভাইভাতে কাজে দিয়েছে সোহানিয়ার।

সোহানিয়া মনে করেন, যারা বিসিএস ক্যাডার হতে চায় তাদের উদ্দেশ্যে সোহানিয়া পরামর্শ দিয়ে বলেন, নিয়মিত জাতীয় দৈনিক পত্রিকা পড়া উচিত। প্রতিদিনের পড়া প্রতিদিনই শেষ করতে হবে। প্রতিদিন কিছু সময়ের জন্য হলেও কিছু লেখা উচিত। লেখালেখির দক্ষতা বেশ কাজে দেয়। আর বেসিক তৈরি করার জন্য মাধ্যমিকের মৌলিক বইগুলো পড়া যেতে পারে। সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে পড়াশোনা করতে হবে। যদি আত্মবিশ্বাস আর লক্ষ্য ঠিক থাকে তাহলে স্বপ্ন পূরণ হবেই। মন থেকে কিছু চাইলে আর সে অনুযায়ী পরিশ্রম করলে আল্লাহ তার স্বপ্ন পূরণ করেন।

মজার ব্যাপার হলো একই বছর ৩৭তম বিসিএসে সোহানিয়ার স্বামী মেহেদি ইসলাম ফুয়াদ পুলিশ ক্যাডারে গেজেটপ্রাপ্ত হয়েছেন। গত বছরের ১২ জুন ৩৭তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করে পিএসসি। এতে ১ হাজার ৩১৪ জনকে বিভিন্ন ক্যাডার পদে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। এরপর চলতি বছরের ২০ মার্চ ৩৭তম বিসিএসে ১ হাজার ২২১ জনকে বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগের সুপারিশ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সে তালিকায় ছিলেন সোহানিয়া ও তার স্বামী ফুয়াদ।