ঢাকা ০৬:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ৩০ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo বিএনপি নেতা মাহিদুর রহমান নেতৃত্বের বিস্ময় Logo স্বৈরাচারের দোসর প্রধান বিচারপতির ধর্ম ছেলে পরিচয়ে মোজাম্মেলের অধর্ম! Logo রাজধানীতে মার্কেট দখল করতে গিয়ে বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর আটক Logo স্কুলের ভেতরে নিয়মিত চলে তাশ ও জুয়া! Logo চাঁদা চাওয়ায় দাকোপে ৫ আওয়ামীলীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা Logo ভোলা জেলা ছাত্র কল্যাণ পরিষদের সভাপতি আল আমিন সম্পাদক শামসউদ্দিন Logo বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির এর উদ্যোগে দুমকিতে ক্যারিয়ার সামিট অনুষ্ঠিত Logo সওজ তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে প্রচারিত প্রকাশিত মিথ্যা সংবাদের প্রতিবাদ Logo বিপ্লবী গান, আবৃত্তি এবং কাওয়ালী গানে মেতেছে আশা বিশ্ববিদ্যালয় Logo ছত্রিশ টাকার নকলনবীশ প্রভাবশালী কোটিপতি!




মাদ্রাসার টাকা নিয়ে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন অধ্যক্ষ সিরাজদ্দৌলা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:০৬:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ এপ্রিল ২০১৯ ১০৪ বার পড়া হয়েছে

মাদ্রাসার টাকা নিয়ে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন অধ্যক্ষ সিরাজদ্দৌলা সিরাজউদ্দৌলা। ছবি: সংগৃহীত

ফেনী প্রতিনিধি, সোনাগাজীর সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার সাময়িক বরখাস্ত হওয়া অধ্যক্ষ সিরাজদ্দৌলা মাদ্রাসার লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। ফেনী শহরের তিন তলা বাড়ি ও নামে বেনামে কয়েক একর জমির মালিক হয়েছেন। স্থানীয় প্রভাবশালীদের সঙ্গে যোগসাজশের মাধ্যমে একের পর এক অপকর্ম করেছেন। মাদ্রাসার ছাত্রীদের প্রতিনিয়ত হয়রানি করেছেন। মাদ্রাসা কমিটির কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে তার ভালো সম্পর্ক থাকায় ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায়নি।

একটি সূত্র জানায়, সোনাগাজীর সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার সামনে বাজার সংলগ্ন তিন তলা মার্কেট রয়েছে। এই মার্কেটে ব্যাংক, বীমা এবং বিভিন্ন দোকান রয়েছে। প্রতি মাসে এখান থেকে লাখ লাখ টাকা মাদ্রাসার ফান্ডে জমা হয়।

জমা করা টাকাগুলো ভাগাভাগি করে নিতেন অধ্যক্ষসহ মাদ্রাসা কমিটির প্রভাবশালী সদস্যরা। এই সুযোগে সিরাজদ্দৌলা মাদ্রাসার ছাত্রীদের বছরের পর বছর ব্যবহার করে আসছেন। তার কমিটির ভয়ে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা কোন দিন প্রতিবাদ করার সাহস পায়নি।

এর আগে ওই মাদ্রাসার আয়-ব্যয়, ব্যাংক হিসাব, শিক্ষক-কর্মচারীদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকাসহ আরো কিছু বিষয় নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠে। এরপর অনিয়ম তদন্তে একটি কমিটি করে দেওয়া হয় ফেনী জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে। কমিটির তদন্তে ৩৬ লাখ ৩৪ হাজার ৮৩৮ টাকার একটা অনিয়মের চিত্র পাওয়া যায়। এরপর ২০১৭ সালের অক্টোবরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়ে নোটিশ দেওয়া হয় অধ্যক্ষকে। সে সময় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ছিলেন সিরাজদ্দৌলা।

ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর রহমান বিকম বলেন, সিরাজদ্দৌলার সঙ্গে উক্ত মাদ্রাসার সহ-সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহল আমিন ওরফে গুজা রুহুলের যোগসাজশের কথা শুনেছি। তিনি অধ্যক্ষের বিভিন্ন অপকর্মকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টায় ছিলেন বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি জানান, মাওলানা সিরাজদ্দৌলা মাদ্রাসার টাকা আত্মসাৎ করেছেন। ফেনী শহরতলীর ফালাহিয়া মাদ্রাসার কাছে একটি বহুল তল ভবন এবং এলাকায় কয়েক একর সম্পত্তির মালিক হয়েছেন এই অধ্যক্ষ।

উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি রুহুল আমিনে বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আবদুর রহমান বিকম বলেন, ঘটনায় যদি রুহুল আমিনের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এলাকার এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানান, রাফির ঘটনার ১৫ দিন আগে ওই অধ্যক্ষ একটি মেয়েকে শ্লীলতাহানি করেন। এতে মেয়েটির বাবা-মা অধ্যক্ষের গিয়ে কার্যালয়ে এর প্রতিবাদ করেন। এসময় অধ্যক্ষ মেয়েটি বাবা-মাকে ঘুষি-থাপ্পড় মেরে লাঞ্ছিত করেন। অসহায় বাবা মা তার কার্যালয়ে দাঁড়িয়ে আল্লাহর কাছে বিচার দিয়ে বাড়ি ফিরে যান। এই ঘটনার ১৫ দিন পরেই নুসরাত জাহান রাফির ঘটনায় অধ্যক্ষ গ্রেফতার হন।

এই অধ্যক্ষ তার অসৎ চরিত্রের জন্য ফেনী সদরে গোবিন্দপুর মাদ্রাসা ও ধলিয়া মাদ্রাসা এবং সালামতিয়া দাখিল মাদ্রাসার অভিভাবকদের হাতে লাঞ্ছিত হয়ে মাদ্রাসাগুলি থেকে বিতাড়িত হন বলে একাধিক সূত্রে জানায়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




মাদ্রাসার টাকা নিয়ে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন অধ্যক্ষ সিরাজদ্দৌলা

আপডেট সময় : ১০:০৬:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ এপ্রিল ২০১৯

ফেনী প্রতিনিধি, সোনাগাজীর সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার সাময়িক বরখাস্ত হওয়া অধ্যক্ষ সিরাজদ্দৌলা মাদ্রাসার লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। ফেনী শহরের তিন তলা বাড়ি ও নামে বেনামে কয়েক একর জমির মালিক হয়েছেন। স্থানীয় প্রভাবশালীদের সঙ্গে যোগসাজশের মাধ্যমে একের পর এক অপকর্ম করেছেন। মাদ্রাসার ছাত্রীদের প্রতিনিয়ত হয়রানি করেছেন। মাদ্রাসা কমিটির কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে তার ভালো সম্পর্ক থাকায় ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায়নি।

একটি সূত্র জানায়, সোনাগাজীর সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার সামনে বাজার সংলগ্ন তিন তলা মার্কেট রয়েছে। এই মার্কেটে ব্যাংক, বীমা এবং বিভিন্ন দোকান রয়েছে। প্রতি মাসে এখান থেকে লাখ লাখ টাকা মাদ্রাসার ফান্ডে জমা হয়।

জমা করা টাকাগুলো ভাগাভাগি করে নিতেন অধ্যক্ষসহ মাদ্রাসা কমিটির প্রভাবশালী সদস্যরা। এই সুযোগে সিরাজদ্দৌলা মাদ্রাসার ছাত্রীদের বছরের পর বছর ব্যবহার করে আসছেন। তার কমিটির ভয়ে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা কোন দিন প্রতিবাদ করার সাহস পায়নি।

এর আগে ওই মাদ্রাসার আয়-ব্যয়, ব্যাংক হিসাব, শিক্ষক-কর্মচারীদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকাসহ আরো কিছু বিষয় নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠে। এরপর অনিয়ম তদন্তে একটি কমিটি করে দেওয়া হয় ফেনী জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে। কমিটির তদন্তে ৩৬ লাখ ৩৪ হাজার ৮৩৮ টাকার একটা অনিয়মের চিত্র পাওয়া যায়। এরপর ২০১৭ সালের অক্টোবরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়ে নোটিশ দেওয়া হয় অধ্যক্ষকে। সে সময় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ছিলেন সিরাজদ্দৌলা।

ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর রহমান বিকম বলেন, সিরাজদ্দৌলার সঙ্গে উক্ত মাদ্রাসার সহ-সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহল আমিন ওরফে গুজা রুহুলের যোগসাজশের কথা শুনেছি। তিনি অধ্যক্ষের বিভিন্ন অপকর্মকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টায় ছিলেন বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি জানান, মাওলানা সিরাজদ্দৌলা মাদ্রাসার টাকা আত্মসাৎ করেছেন। ফেনী শহরতলীর ফালাহিয়া মাদ্রাসার কাছে একটি বহুল তল ভবন এবং এলাকায় কয়েক একর সম্পত্তির মালিক হয়েছেন এই অধ্যক্ষ।

উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি রুহুল আমিনে বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আবদুর রহমান বিকম বলেন, ঘটনায় যদি রুহুল আমিনের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এলাকার এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানান, রাফির ঘটনার ১৫ দিন আগে ওই অধ্যক্ষ একটি মেয়েকে শ্লীলতাহানি করেন। এতে মেয়েটির বাবা-মা অধ্যক্ষের গিয়ে কার্যালয়ে এর প্রতিবাদ করেন। এসময় অধ্যক্ষ মেয়েটি বাবা-মাকে ঘুষি-থাপ্পড় মেরে লাঞ্ছিত করেন। অসহায় বাবা মা তার কার্যালয়ে দাঁড়িয়ে আল্লাহর কাছে বিচার দিয়ে বাড়ি ফিরে যান। এই ঘটনার ১৫ দিন পরেই নুসরাত জাহান রাফির ঘটনায় অধ্যক্ষ গ্রেফতার হন।

এই অধ্যক্ষ তার অসৎ চরিত্রের জন্য ফেনী সদরে গোবিন্দপুর মাদ্রাসা ও ধলিয়া মাদ্রাসা এবং সালামতিয়া দাখিল মাদ্রাসার অভিভাবকদের হাতে লাঞ্ছিত হয়ে মাদ্রাসাগুলি থেকে বিতাড়িত হন বলে একাধিক সূত্রে জানায়।