মামলা হস্তান্তর পিবিআইয়ে, অধ্যক্ষ ৭ দিনের রিমান্ডে
- আপডেট সময় : ০৩:৫৩:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ এপ্রিল ২০১৯ ১৩৪ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ফেনীর সোনাগাজী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোয়াজ্জেম হোসেনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। একই সঙ্গে উপজেলার মাদ্রাসাছাত্রীকে হত্যাচেষ্টার মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) হস্তান্তর করা হয়েছে। আজ বুধবার পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (মিডিয়া) সোহেল রানা প্রথম আলোকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
আজই মাদ্রাসাছাত্রীকে হত্যা প্রচেষ্টায় অভিযোগ ওঠা মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন ফেনীর আদালত।
সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় গত শনিবার আলিম পরীক্ষা দিতে গেলে কৌশলে মেয়েটিকে ছাদে ডেকে নিয়ে গিয়ে তাঁর গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। গত ২৭ মার্চ অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে মামলা করেন মেয়েটির মা। মামলা প্রত্যাহারে রাজি না হওয়ায় ছাত্রীটির গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ওই দিনই গুরুতর আহত অবস্থায় ওই মাদ্রাসাছাত্রীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। এখন ওই শিক্ষার্থীকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। তাঁর শরীরের ৭৫ শতাংশ আগুনে পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত মেয়েটির ফুসফুসকে সক্রিয় করতে গতকাল মঙ্গলবার অস্ত্রোপচার করা হয়।
গতকাল মাদ্রাসাছাত্রীটির পরিবার বলেছে, স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের প্রতি তারা আস্থা রাখতে পারছে না। হাত-পা বেঁধে কেরোসিন ঢেলে মেয়েটিকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনাকে পুলিশ ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা করছে। এমনকি মামলার এজাহার নিয়েও পুলিশ কূটচাল চেলেছে।
পরিবারের এমন অভিযোগের পর আজ সোনাগাজীর ওসিকে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত এল।
ফেনীর পুলিশ সুপার এস এম জাহাঙ্গীর আলম সরকার আজ জানিয়েছেন, প্রত্যাহার করে ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নে (এপিবিএন) সংযুক্ত করা হয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের একাধিক সূত্র বলেন, ওসির প্রতিবাদী পক্ষের অনাস্থা আমলে নিয়ে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মামলাটি পিবিআইকে হস্তান্তরের কারণ প্রসঙ্গে তাঁরা বলেছেন, কোনোভাবেই যেন মামলাটি ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এবং স্থানীয় কেউ যেন প্রভাব বিস্তার করতে না পারে, সে জন্যই দায়িত্ব পিবিআইকে দেওয়া হয়েছে।
আজ অভিযোগ ওঠা অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম সরাফউদ্দিন। ওই মাদ্রাসার প্রভাষক আফসার উদ্দিন ও ছাত্র আরিফের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন একই আদালত।
লাইফ সাপোর্টের যাওয়ার আগে চিকিৎসকদের কাছে জবানবন্দি দেন গত রোববার। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, নেকাব, বোরকা ও হাতমোজা পরা চারজন তাঁর গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন। ওই চারজনের একজনের নাম ছিল শম্পা।
চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) খন্দকার গোলাম ফারুক গতকাল সোনাগাজীতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, শম্পা নামের যে হামলাকারীর কথা অগ্নিদগ্ধ মাদ্রাসাছাত্রী বলেছেন, সেই শম্পাকে পুলিশ গতকাল সকালে সোনাগাজীর মঙ্গলকান্দি ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর থেকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে সোনাগাজী থানার পুলিশ বলছে, গ্রেপ্তার করা নারীর নাম উম্মে সুলতানা ওরফে পপি।
আজ পপি ও জুবায়েরকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। তাদেরও পাঁচ দিন করে রিমান্ড চাওয়া হয়েছে।