সংস্কার থেকে কি পিছিয়ে যাচ্ছে জামায়াত?
- আপডেট সময় : ১২:২০:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ এপ্রিল ২০১৯ ১৪৫ বার পড়া হয়েছে
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে জামায়াতে ইসলামীর একজন কেন্দ্রীয় নেতা পদত্যাগ করেন। এর পরই দলটির মুক্তিযুদ্ধকালীন ভূমিকার জন্য ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নসহ বিভিন্ন বিষয়ে সংস্কার আনার কথা ওঠে। তবে এখন শোনা যাচ্ছে, সংস্কার প্রশ্নে দলটি পিছিয়ে এসেছে।
জামায়াতের বিভিন্ন সূত্র বলছে, সংস্কার নয়, শুধু দলটির নাম পরিবর্তনের বিষয়েই দলের ভেতরে আলোচনা চলছে। তবে দলটির সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান বিবিসিকে বলেছেন, সব বিষয় নিয়েই তাদের দলে আলোচনা রয়েছে।
জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক যখন পদত্যাগ করেন, তখন তিনি অন্যতম কারণ হিসেবে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বিতর্কিত ভূমিকার জন্য দলটির ক্ষমা না চাওয়ার বিষয়কে তুলে ধরেছিলেন।
ওই সময় তার পদত্যাগ এবং সংস্কারের পক্ষে খোলামেলা বক্তব্য দলটির বিভিন্ন স্তরে বেশ আলোচনা হয়েছিল।
ব্যারিস্টার রাজ্জাকের পদত্যাগের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সংস্কারপন্থী হিসেবে পরিচিত জামায়াতের একজন কেন্দ্রীয় নেতা মজিবুর রহমান মঞ্জুকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।
সূত্রগুলো বলছে, জামায়াতে সংস্কারের দাবি যাতে মাথা চাড়া দিতে না পারে, সেই সময় দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সেই চেষ্টাই ছিল। তবে দলটিতে সংস্কারের সুপারিশ তৈরির জন্য একটি কমিটি গঠনের কথাও বলা হয়েছিল।
কিন্তু জামায়াতের সূত্রগুলো বলছে, ‘৭১-এর ভূমিকার জন্য ক্ষমা চাওয়া বা দলের অতীত থেকে বেরিয়ে আসার প্রশ্নে সংস্কারের চিন্তা থেকে দলটির নেতৃত্ব পিছিয়ে এসেছে।
জামায়াতের ফেনী জেলার আমির একেএম শামসুদ্দিন বলেন, কোনো সংস্কার নয়, তাদের কমিটি কাজ করছে দলের নাম পরিবর্তনের জন্য।
তিনি বলেন, কোনো সংস্কারের বিষয় আমাদের দলে নেই। দলের নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব এসেছিল, সে ব্যাপারেই সবার মতামত নেয়ার পর একটা কমিটি করা হয়েছে। এ কমিটি নাম নিয়ে কাজ করছে। জামায়াতে সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, তাদের দলে সংস্কার একটা চলমান প্রক্রিয়া।
তিনি বলেন, ‘৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের প্রতি সম্মান দেখিয়ে জামায়াতের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় বক্তব্য দেয়া হয়েছে। ভবিষ্যতেও দেয়া হবে।
তবে জামায়াতের রাজনীতির ঘনিষ্ঠ পর্যবেক্ষক শাহ আবদুল হান্নান বলেছেন, ‘৭১-এর ভূমিকার জন্য ক্ষমা চাইলে কোনো লাভ হবে কিনা, সেই প্রশ্ন হয়তো দলটিতে কাজ করছে।
তিনি আরও বলেছেন, এই পার্টির জন্ম হয়েছে ১৯৪১ সালে। তখন অল ইন্ডিয়া ছিল। এখন ‘৪১ থেকে ‘৪৭ সাল পর্যন্ত সময়ের দায়ভার পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামী নেয়নি। ‘৪৭ থেকে ‘৭১ সাল পর্যন্ত ধরেন, এর পরে এই পার্টি নিষিদ্ধ ছিল। ১৯৭৯ সালে এই পার্টির আবার যখন পুনর্জন্ম হলো, তার পর তারা মনে করে যে আগের দায়ভার আমাদের নেই।
জামায়াতের সূত্রগুলো বলছে, যুদ্ধাপরাধের দায়ে তাদের শীর্ষ নেতাদের বিচার হয়ে গেছে। তাদের অনেক ত্যাগ রয়েছে দলটির জন্য, এমন বিবেচনা থেকে পুরনো অবস্থানে সংস্কার না আনার চিন্তা দলে সক্রিয় রয়েছে।