আন্তর্জাতিক ডেস্ক;
প্রথম শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের দিক দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য থেকে পিছিয়ে রয়েছে জাপানের লোকজন। এর চেয়ে বড় কথা হলো জাপানের ২০ থেকে ৪০ বছর বয়সীদের প্রতি চারজনের একজন নাকি ভার্জিন! সম্প্রতি নতুন এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
দেশটির টোকিও ইউনিভার্সিটির পাবলিক হেলথ বিভাগের বিশেষজ্ঞরা গবেষণায় দেখেছেন, যেসব নারীদের বয়স ১৮ থেকে ৩৯ বছরের মধ্যে, তারা এ সময়ের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেননি। ১৯৯২ সালে এই সংখ্যা ছিল শতকরা ২১.৭ ভাগ। ২০১৫ সালে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ২৪.৬ ভাগ।
তবে এক্ষেত্রে কিঞ্চিত পার্থক্য রয়েছে পুরুষদের। পুরুষদের ক্ষেত্রে ১৯৯২ সালে এ সংখ্যা ছিল শতকরা ২০ ভাগ। আর ২০১৫ সালে ২৫.৮ ভাগ।
সোমবার এ-সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে জাপানের ইউনিভার্সিটি অব টোকিওর পাবলিক হেলথ বিভাগ।
পেটার উইয়েদা, গবেষক দলের মধ্যে অন্যতম। তিনি বলছেন, জাপানে সেক্সুয়াল অনভিজ্ঞতা একটি উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে এ-সংক্রান্ত বিগত প্রতিবেদনগুলোতে বিভিন্ন বয়সীদের মধ্যে এর প্রবণতা ও আর্থ-সামাজিক অবস্থাগুলো তুলে ধরা হয়নি।
বিগত তিন দশক অর্থাৎ গত ৩০ বছরের ডাটা থেকে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে এ সমীক্ষা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। এসব জরিপে প্রতিবারই ১০ হাজারের বেশি সংখ্যক ব্যক্তির তথ্য স্থান পেয়েছে। আর এসব ব্যক্তিদের বয়স ১৮ থেকে ৩৯ বছরের মধ্যে। এসব জরিপে সমকামী, উভকামী, হিজড়া ও বিবাহিতদের তথ্য বাদ দেয়া হয়েছে।
প্রতিবেদন বলছে, নিম্নআয়ের পুরুষরা নারীদের তুলনায় দীর্ঘদিন শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন না। আর এদের সংখ্যা অনেক বেশি।
গবেষকদলের প্রধান সাইরাস ঘাসনভি। তিনি বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন থেকে অনভিজ্ঞ থাকার পেছনের কারণ অত্যন্ত জটিল। কারণ কারা শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছেন আর কে ভার্জিন আছেন তা নির্ণয় করা দুরূহ কাজ। তবে আমরা নতুন গবেষণায় দেখেছি, পুরুষদের ক্ষেত্রে এ অবস্থার জন্য আর্থ-সামাজিক ইস্যু দায়ী। যেটাকে আপনি বলতে পারেন আর্থিক অক্ষমতা।
টোকিওর সোফিয়া ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক কুখী চু এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘জাপানে সেক্সকে নোংরা ও কলুষিত হিসেবে দেখা হয়। আমি দেখেছি, আমার ছাত্র-ছাত্রীরা কখনো পেনিস বা ভ্যাজাইনা শব্দগুলো ব্যবহার করে না। যদিও কখনো কোনো নারী সেক্স নিয়ে তার আগ্রহ প্রকাশ করে তাহলে তাকে নিচু প্রকৃতির মানুষ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মানুষ এগুলো নিয়ে কখনো কথায়ই বলতে চায় না।’
চু আরও বলেন, ‘জাপানিদের কাছে সম্পর্কের মানে একেকজনের কাছে একেক রকম। এমন অনেক জুটি রয়েছেন যারা একে অপরকে পছন্দ করেন কিন্তু সেক্স করেন না। আবার এমনও আছেন যারা সেক্স করতে চান না বিধায় সম্পর্কেও জড়ান না। এটা শুধু বয়স্কদের ক্ষেত্রে নয়, তরুণ-তরুণীদের মধ্যেও একই অবস্থা বিদ্যমান।’