নানা প্রলোভনে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া চক্রটি আটক
- আপডেট সময় : ০৪:৩০:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ এপ্রিল ২০১৯ ৯৪ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক; নিজেদের শুল্ক কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে শিক্ষিত বেকার তরুণ-তরুণীদের চাকরি দেওয়া কথা বলে ও ব্যবসায়ীদের কাছে কম মূল্যে সোনাদানা বিক্রির প্রলোভন দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করতো একটি প্রতারক চক্র। গতকাল রাজধানীর মিরপুরে অভিযান চালিয়ে চক্রটির ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর এমন তথ্য জানায় র্যাব।
বুধবার কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে গ্রেপ্তার করা ভুয়া ছয় শুল্ক কর্মকর্তা ও কর্মচারী সম্পর্কে এসব তথ্য দেন র্যাব-৪ এর অধিনায়ক চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির।
মঞ্জুরুল কবির বলেন, ছয় সদস্যের প্রতারক চক্রের প্রধান কাস্টমস সহকারী কমিশনার পরিচয় দেওয়া নুরুল হক। দামি গাড়ি হাঁকিয়ে নিজের পরিচয়কে বিশ্বাসযোগ্য করে তোলেন ৫৭ বছর বয়সী এই প্রতারক।
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, মাঠ পর্যায়ে তাদের দু’একজন চক্রের সদস্য আছে। যারা বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে টার্গেট ভিকটিম ও গ্রাহক চিহ্নিত করে। তারপর মানুষ অনুযায়ী কৌশল নির্ধারণ করে প্রতারণার শিকার করে। প্রতারণার কৌশল হিসেবে চক্রটি শিক্ষিত বেকার তরুণ-তরুণীদের কাস্টমস অফিসার হিসেবে চাকরি দেওয়ার লোভনীয় প্রস্তাব দেয়। এজন্য মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে চক্রটি।
একপর্যায়ে প্রতারক চক্রের পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক, নিরাপদ স্থানে কাস্টমস র্যাঙ্ক, ব্যাচ, ইউনিফর্ম পরিহিত, দামি ব্যান্ডের গাড়িতে ভিকটিমদের বিশ্বাস অর্জনে সাক্ষাৎ করে। টাকার অঙ্ক নির্ধারণ হওয়ার পর নিয়োগপত্র প্রদানের জন্য তারিখ নির্ধারণ করে তারা। এরপরে সুকৌশলে প্রতারক চক্রটি ভিকটিমের নিয়োগপত্র হস্তান্তর করার তারিখের আগেই মোটা অঙ্কের টাকা পরিশোধ করতে বাধ্য করে। টাকা হাতিয়ে নিয়ে মোবাইল সিম বন্ধ করে আত্মগোপন করে প্রতারক চক্রের সদস্যরা।
র্যাব-৪ এর অধিনায়ক চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির আরও বলেন, প্রতারক চক্রটি আরেকটি প্রতারণার কৌশল অবলম্বন করে। বিভিন্ন কোম্পানির ডিলারদের টার্গেট করে প্রতারণা করে তারা।
চক্রটির বরাত দিয়ে এই র্যাব কর্মকর্তা বলেন, কাস্টমস কর্তৃক জব্দকৃত স্বর্ণের বার, বিস্কুট, জাপানি পার্টস, কটন সুতা, গোল্ডেন সুতা, স্বর্ণের চেইন, মোবাইল, টিভি, ল্যাপটপ ইত্যাদি কম মূল্যের বিক্রির অফার দেন তারা।
চক্রটির সদস্যরা ব্যবসায়ীদের বলেন, মালামাল সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে আমদানি করার কারণে কাস্টমস এগুলো জব্দ করেছে। আর তাদের লোভনীয় প্রস্তাবে প্রলুব্ধ হয়ে তা কিনতে আগ্রহী হন ব্যবসায়ীরা। পরে চক্রটি সুকৌশলে মালামাল দেয়ার তারিখ ঠিক করে এবং মূল্যের একটি অংশ অগ্রিম হিসেবে আদায় করে, ভুয়া চুক্তিনামা তৈরি করে। এতেই লাখ লাখ পায় তারা।
র্যাব জানায়, প্রতারক চক্রের নেতা নুরুল হকের নামে এমন প্রতারণার অভিযোগে চট্টগ্রামসহ রাজধানীতে মোট তিনটি মামলা রয়েছে। দীর্ঘ ১৫/১৬ বছর ধরে এমন প্রতারণা করে আসছে সে। গতকাল রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাবের একটি দল রাজধানীর মিরপুর থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তাররা হলেন মো. নুরুল হক, শেখ আলম, ফিরোজ আলম, মোশারফ, মাসুদ রানা এবং রেনু মিয়া ওরফে রনি। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ভিজিটিং কার্ড, প্রতারণা কাজে ব্যবহৃত মোবাইল উদ্ধার করা হয় বলে জানান এই র্যাব কর্মকর্তা.