ঢাকা ০৮:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo বুড়িচংয়ে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ইউএনও’র! Logo ইবি উপাচার্যকে ১০লাখ ঘুষ প্রস্তাব এক তরুনীর! Logo মামলায় জর্জরিত কুলাউড়ার ছাত্রদল নেতা মিতুল পালিয়ে আছেন প্রবাসে Logo ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসে মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে শাবি ছাত্রলীগের কার্যক্রম শুরু Logo থিয়েটার কুবির ইফতার মাহফিল Logo রাজধানীর শান্তিনগর বাজার নিয়ে শত কোটি টাকার লুটপাট Logo ঢাবির সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জিয়া রহমানের মৃত্যুতে শাবি শিক্ষক সমিতির শোক Logo ঢাবি শিক্ষক ড. জিয়া রহমানের মৃত্যুতে শাবি উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo ময়মনসিংহ স্টুডেন্টস এসোসিয়েশনের নতুন সভাপতি সজীব, সম্পাদক আশিক Logo পুরান ঢাকায় জুতার কারখানার আগুন




রাজধানীর ৯৮ ভাগ ভবনই ঝুঁকিতে!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৩:০৫:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ এপ্রিল ২০১৯ ৯৫ বার পড়া হয়েছে

প্রধান প্রতিবেদক;
বহুতল ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বিল্ডিং কোড মানা হচ্ছে না। উপেক্ষিত থাকছে অগ্নিনির্বাপণের নির্দেশনাও। ঢাকা মহানগরীর ৯৮ শতাংশ ভবনই অগ্নি নিরাপত্তার ঝুঁকিতে রয়েছে। বহুতল ভবনের অগ্নিনির্বাপণের ন্যূনতম বিধি-বিধানগুলোও বাস্তবায়ন হচ্ছে না। প্রকৌশলী, স্থপতি ছাড়াই রাজমিস্ত্রির সাহায্যে বড় বড় ভবন গড়ে উঠছে রাজধানীর বুকে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর বেশির ভাগ বহুতল ভবনে যথাযথ অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য অগ্নিকাণ্ডে বড় ধরনের ক্ষতি হচ্ছে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বিভাগ মানুষের নিরাপত্তার দিকটি বিবেচনায় নিয়ে প্রতিটি ভবনে অগ্নিনিরাপত্তার কিছু বিধিমালা নির্ধারণ করে দিলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না।

বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর সর্বশেষ ঢাকার জনবহুল ভবন বিশেষ করে হাসপাতাল, শপিংমল/মার্কেট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, আবাসিক হোটেল ও মিডিয়া সেন্টারসহ মোট ৩ হাজার ৭৩৪টি ভবনের ওপর জরিপ চালায়। এর মধ্যে প্রায় ৯৮ শতাংশ ভবনই অগ্নি নিরাপত্তার ঝুঁকিতে রয়েছে।

এতে দেখা গেছে, এর মধ্যে মাত্র ৮৫টি ভবনে অগ্নিনিরাপত্তা সন্তোষজনক রয়েছে। বাকি ৩ হাজার ৬৪৯টি ভবনই অগ্নিঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এর মধ্যে এক হাজার ৬৬টি খুব বেশি ঝুঁকিতে এবং ২ হাজার ৫৮৩টি ঝুঁকিতে রয়েছে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর ২০১৭ সালে অক্টোবর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এই জরিপ চালায়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাজউক থেকে আবাসিক ভবনের অনুমোদন নিয়ে বাণিজ্যিক, শিল্পকারখানা, হোটেল বাণিজ্যের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। আর এসব অনৈতিক কাজে সহযোগিতা করছে সিটি করপোরেশন, রাজউক, ওয়াসা, ফায়ার সার্ভিসের একশ্রেণির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা। এ ছাড়া অপরিকল্পিত বহুতল ভবন নির্মাণ করা ছাড়াও পর্যাপ্ত উন্মুক্ত স্থান না রেখে ভবন নির্মাণ করায় আলো-বাতাস প্রবেশেও বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জাতীয় নির্মাণবিধি (ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড) মানছেন না বেশির ভাগ বাড়ির মালিক ও নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। এই বিধি মানানোর জন্য কোনো নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষও আজ পর্যন্ত গঠিত হয়নি। অথচ ১৯৯৩ সালে জাতীয় নির্মাণবিধি প্রণীত হয়। হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সিনিয়র রিসার্চ অফিসার মো. আখতার হোসেন সরকার বলেন, বিল্ডিং কোড মানা বাধ্যতামূলক। বাড়ির মালিক, বিল্ডিংটির নকশা প্রণয়নকারী বা প্রকৌশলী সবাইকে মানতে হবে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে তা সঠিকভাবে মানা হচ্ছে না। ১৯৯৩ সালে জাতীয় নির্মাণবিধি প্রণীত হয়। এরপর ২০০৬ সালে এটি পূর্ণাঙ্গ আইনে পরিণত হয়। তা ২০১০ সালে সংশোধন হয়ে এখন সরকারের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। তারা মানুষকে সচেতন করার জন্য কাজ করছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এ প্রসঙ্গে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবু নাঈম মো. শহিদুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং (বিএনবিসি) কোড মানছে না। বনানীর ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, নিয়মিত ফায়ার ডিল করার নিয়ম থাকলেও তা করা হয় না। আবার ফায়ার ডোর ছিল না। এসব কারণেই আগুনে এমন হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। তিনি বলেন, বিএনবিসি কোর্ড অনুযায়ী হাইরাইজ বিল্ডিং নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রতি ৫ তলার উপরে একটি করে রিফিউজ এরিয়া বা নিরাপদ এলাকা করা হলে মানুষকে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে উঁচু ভবন থেকে লাফিয়ে পড়তে হতো না। কেউ আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে ছোটাছুটি করতেন না।

ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল সহজেই তাদের উদ্ধার করতে পারত। আবু নাঈম মো. শহিদুল্লাহ বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন উন্নত দেশে প্রতিটি উঁচু ভবনে প্রতি পাঁচতলার উপরে রিফিউজ এরিয়া থাকে। ভবনে আগুনের ঘটনা ঘটলে ভবনের বাসিন্দারা ওই এরিয়ায় গিয়ে আশ্রয় নেয়। সেখানে আগুন তো দূরের কথা, ধোঁয়াও প্রবেশ করতে পারে না। ফলে মানুষ মরতো না। তিনি বলেন, প্রত্যেকটি ফ্লোরে ফায়ার ডোর থাকার কথা। যদি একটি তলায় আগুন লাগে তাহলে ফারার ডোর বন্ধ করে বাসিন্দারা উপরে উঠবে। তিনি বলেন, ভবনটিতে যে সিঁড়ি ছিল তাও পর্যাপ্ত ছিল বলে মনে হয় না। তিনি বলেন, আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। তাহলেই সচেতনতা বাড়বে। যখনই আমাদের ওপরে চাপ থাকে, তখনই আমরা আইন মানি। যত উন্নত দেশ, তত আইন কড়া। আমাদের দেশও উন্নত হচ্ছে, এগিয়ে যাচ্ছে। ফলে আমাদের বৈদ্যুতিক চাহিদা বাড়বে, গ্যাসের চাহিদা বাড়বে। দুর্ঘটনাও ঘটবে। সে কারণে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।

জাতীয় অধ্যাপক ও প্রকৌশলী বিশেষজ্ঞ ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেন, ২৬ বছর আগের আইন দিয়ে চলে না। পৃথিবীর কোনো দেশে এরকম নেই। সরকার কেন আইনটি আপডেট করছে না, বুঝতে পারছি না। ২০০৬ সালের আইনে ইমারত নির্মাণের বিষয়ে রাজউক দেখবে। ৯তলা ভবনের উপরে হলে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সেরসহ ১১টি সংস্থার অনুমোদন নিতে হবে। তিনি বলেন, ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড ও ইমারত নির্মাণ বিধিমালায় বহুতল ভবনের অগ্নিনির্বাপণের জন্য সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা আছে। এর মধ্যে ফায়ার রেটিং, ফায়ার এক্সটিংগুইশার, ফায়ার সেফটিক ব্যবস্থা ও জলাধার রাখাসহ বেশ কিছু নির্দেশনা রয়েছে। এসব নির্দেশনা মেনে চললে খুব সহজেই আগুন নিভিয়ে ফেলা সম্ভব। কিন্তু দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোর মনিটরিংয়ের অভাবে সেসব নির্দেশনা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। তিনি বলেন, ২০০৬ সালে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বিভাগ অনেক বিল্ডিংকে বিপর্যয় হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তিনি প্রশ্ন করে বলেন, সরকার কেন ওইগুলোর বিষয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




রাজধানীর ৯৮ ভাগ ভবনই ঝুঁকিতে!

আপডেট সময় : ০৩:০৫:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ এপ্রিল ২০১৯

প্রধান প্রতিবেদক;
বহুতল ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বিল্ডিং কোড মানা হচ্ছে না। উপেক্ষিত থাকছে অগ্নিনির্বাপণের নির্দেশনাও। ঢাকা মহানগরীর ৯৮ শতাংশ ভবনই অগ্নি নিরাপত্তার ঝুঁকিতে রয়েছে। বহুতল ভবনের অগ্নিনির্বাপণের ন্যূনতম বিধি-বিধানগুলোও বাস্তবায়ন হচ্ছে না। প্রকৌশলী, স্থপতি ছাড়াই রাজমিস্ত্রির সাহায্যে বড় বড় ভবন গড়ে উঠছে রাজধানীর বুকে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর বেশির ভাগ বহুতল ভবনে যথাযথ অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য অগ্নিকাণ্ডে বড় ধরনের ক্ষতি হচ্ছে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বিভাগ মানুষের নিরাপত্তার দিকটি বিবেচনায় নিয়ে প্রতিটি ভবনে অগ্নিনিরাপত্তার কিছু বিধিমালা নির্ধারণ করে দিলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না।

বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর সর্বশেষ ঢাকার জনবহুল ভবন বিশেষ করে হাসপাতাল, শপিংমল/মার্কেট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, আবাসিক হোটেল ও মিডিয়া সেন্টারসহ মোট ৩ হাজার ৭৩৪টি ভবনের ওপর জরিপ চালায়। এর মধ্যে প্রায় ৯৮ শতাংশ ভবনই অগ্নি নিরাপত্তার ঝুঁকিতে রয়েছে।

এতে দেখা গেছে, এর মধ্যে মাত্র ৮৫টি ভবনে অগ্নিনিরাপত্তা সন্তোষজনক রয়েছে। বাকি ৩ হাজার ৬৪৯টি ভবনই অগ্নিঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এর মধ্যে এক হাজার ৬৬টি খুব বেশি ঝুঁকিতে এবং ২ হাজার ৫৮৩টি ঝুঁকিতে রয়েছে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর ২০১৭ সালে অক্টোবর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এই জরিপ চালায়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাজউক থেকে আবাসিক ভবনের অনুমোদন নিয়ে বাণিজ্যিক, শিল্পকারখানা, হোটেল বাণিজ্যের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। আর এসব অনৈতিক কাজে সহযোগিতা করছে সিটি করপোরেশন, রাজউক, ওয়াসা, ফায়ার সার্ভিসের একশ্রেণির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা। এ ছাড়া অপরিকল্পিত বহুতল ভবন নির্মাণ করা ছাড়াও পর্যাপ্ত উন্মুক্ত স্থান না রেখে ভবন নির্মাণ করায় আলো-বাতাস প্রবেশেও বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জাতীয় নির্মাণবিধি (ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড) মানছেন না বেশির ভাগ বাড়ির মালিক ও নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। এই বিধি মানানোর জন্য কোনো নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষও আজ পর্যন্ত গঠিত হয়নি। অথচ ১৯৯৩ সালে জাতীয় নির্মাণবিধি প্রণীত হয়। হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সিনিয়র রিসার্চ অফিসার মো. আখতার হোসেন সরকার বলেন, বিল্ডিং কোড মানা বাধ্যতামূলক। বাড়ির মালিক, বিল্ডিংটির নকশা প্রণয়নকারী বা প্রকৌশলী সবাইকে মানতে হবে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে তা সঠিকভাবে মানা হচ্ছে না। ১৯৯৩ সালে জাতীয় নির্মাণবিধি প্রণীত হয়। এরপর ২০০৬ সালে এটি পূর্ণাঙ্গ আইনে পরিণত হয়। তা ২০১০ সালে সংশোধন হয়ে এখন সরকারের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। তারা মানুষকে সচেতন করার জন্য কাজ করছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এ প্রসঙ্গে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবু নাঈম মো. শহিদুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং (বিএনবিসি) কোড মানছে না। বনানীর ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, নিয়মিত ফায়ার ডিল করার নিয়ম থাকলেও তা করা হয় না। আবার ফায়ার ডোর ছিল না। এসব কারণেই আগুনে এমন হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। তিনি বলেন, বিএনবিসি কোর্ড অনুযায়ী হাইরাইজ বিল্ডিং নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রতি ৫ তলার উপরে একটি করে রিফিউজ এরিয়া বা নিরাপদ এলাকা করা হলে মানুষকে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে উঁচু ভবন থেকে লাফিয়ে পড়তে হতো না। কেউ আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে ছোটাছুটি করতেন না।

ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল সহজেই তাদের উদ্ধার করতে পারত। আবু নাঈম মো. শহিদুল্লাহ বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন উন্নত দেশে প্রতিটি উঁচু ভবনে প্রতি পাঁচতলার উপরে রিফিউজ এরিয়া থাকে। ভবনে আগুনের ঘটনা ঘটলে ভবনের বাসিন্দারা ওই এরিয়ায় গিয়ে আশ্রয় নেয়। সেখানে আগুন তো দূরের কথা, ধোঁয়াও প্রবেশ করতে পারে না। ফলে মানুষ মরতো না। তিনি বলেন, প্রত্যেকটি ফ্লোরে ফায়ার ডোর থাকার কথা। যদি একটি তলায় আগুন লাগে তাহলে ফারার ডোর বন্ধ করে বাসিন্দারা উপরে উঠবে। তিনি বলেন, ভবনটিতে যে সিঁড়ি ছিল তাও পর্যাপ্ত ছিল বলে মনে হয় না। তিনি বলেন, আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। তাহলেই সচেতনতা বাড়বে। যখনই আমাদের ওপরে চাপ থাকে, তখনই আমরা আইন মানি। যত উন্নত দেশ, তত আইন কড়া। আমাদের দেশও উন্নত হচ্ছে, এগিয়ে যাচ্ছে। ফলে আমাদের বৈদ্যুতিক চাহিদা বাড়বে, গ্যাসের চাহিদা বাড়বে। দুর্ঘটনাও ঘটবে। সে কারণে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।

জাতীয় অধ্যাপক ও প্রকৌশলী বিশেষজ্ঞ ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেন, ২৬ বছর আগের আইন দিয়ে চলে না। পৃথিবীর কোনো দেশে এরকম নেই। সরকার কেন আইনটি আপডেট করছে না, বুঝতে পারছি না। ২০০৬ সালের আইনে ইমারত নির্মাণের বিষয়ে রাজউক দেখবে। ৯তলা ভবনের উপরে হলে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সেরসহ ১১টি সংস্থার অনুমোদন নিতে হবে। তিনি বলেন, ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড ও ইমারত নির্মাণ বিধিমালায় বহুতল ভবনের অগ্নিনির্বাপণের জন্য সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা আছে। এর মধ্যে ফায়ার রেটিং, ফায়ার এক্সটিংগুইশার, ফায়ার সেফটিক ব্যবস্থা ও জলাধার রাখাসহ বেশ কিছু নির্দেশনা রয়েছে। এসব নির্দেশনা মেনে চললে খুব সহজেই আগুন নিভিয়ে ফেলা সম্ভব। কিন্তু দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোর মনিটরিংয়ের অভাবে সেসব নির্দেশনা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। তিনি বলেন, ২০০৬ সালে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বিভাগ অনেক বিল্ডিংকে বিপর্যয় হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তিনি প্রশ্ন করে বলেন, সরকার কেন ওইগুলোর বিষয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছে না।