>> চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর এখতিয়ার প্রধানমন্ত্রীর
>> জুনের মধ্যে পদোন্নতি, টার্গেট বিসিএসের ১৭তম ব্যাচ
>> চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ নয়, যোগ্যতার ভিত্তিতে পদোন্নতি
প্রশাসনে যুগ্ম-সচিব পদে পদোন্নতি আসছে। মূলত বিসিএসের ১৭তম ব্যাচকে বিবেচনায় নিয়ে এ পদোন্নতির প্রক্রিয়া চলছে। সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে আগামী জুনের মধ্যে উপ-সচিব থেকে যুগ্ম-সচিব পদে পদোন্নতির আদেশ জারি হবে।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে নিজ দফতরে জাগো নিউজকে এ তথ্য জানান জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। তালিকা চূড়ান্ত হলে এটাই হবে নতুন সরকারের প্রথম বড় ধরনের পদোন্নতি। সর্বশেষ গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর ১৫৪ উপ-সচিবকে যুগ্ম-সচিব পদে পদোন্নতি দেয় সরকার।
যুগ্ম-সচিব পদে পদোন্নতির প্রক্রিয়া চলছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বিসিএস ১৭তম ব্যাচকে আমরা নিয়ে আসব। ওই ব্যাচের ডিসি আছেন ১২ জনের মতো। তাদের যুগ্ম-সচিব পদে পদোন্নতি দেব।’
কবে নাগাদ পদোন্নতির আদেশ জারি হবে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘উইদিন শর্ট টাইম, আমরা জুনের মধ্যেই করতে চাচ্ছি। কারণ জুলাইয়ে আমাদের ডিসি কনফারেন্স। এর আগেই পদোন্নতির বিষয়টি সম্পন্ন করতে চাই।’
যুগ্ম-সচিব পদে মোট কতজন পদোন্নতি পেতে পারেন- জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘মূলত ১৭তম ব্যাচকে আমরা নিয়ে আসব। এছাড়া অন্যরাও থাকবেন। তবে স্পেসিফিকভাবে এখনই মোট সংখ্যাটা বলা যাবে না। তবে প্রশাসন কাঠামোর পিরামিডটা ঠিক রাখা হবে।’
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মঙ্গলবারের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে প্রশাসনে যুগ্ম-সচিব ৭৩৭ জন। তবে যুগ্ম-সচিবের নিয়মিত পদের সংখ্যা ৪১১টি। মোট উপ-সচিব এক হাজার ৮৩৬ জন।
‘সরকারের উপ-সচিব, যুগ্ম-সচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সচিব পদে পদোন্নতি বিধিমালা, ২০০২’- এ বলা হয়েছে, ‘যুগ্ম-সচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে ৭০ শতাংশ প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের এবং ৩০ শতাংশ অন্যান্য ক্যাডারের উপ-সচিব পদে কর্মরতদের বিবেচনায় নিতে হবে।’
বিধিমালা অনুযায়ী, উপ-সচিব পদে কমপক্ষে পাঁচ বছর চাকরিসহ সংশ্লিষ্ট ক্যাডারের সদস্য হিসেবে কমপক্ষে ১৫ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা বা উপ-সচিব পদে কমপক্ষে তিন বছর চাকরিসহ ২০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকলে কোনো কর্মকর্তা যুগ্ম-সচিব পদে পদোন্নতির জন্য বিবেচিত হন।
চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর উদ্যোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এ বিষয়ে কোনো আপডেট নেই। প্রধানমন্ত্রীই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। তিনি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়েরও মন্ত্রী, তাই বিষয়টি তার এখতিয়ারভুক্ত।’ চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ কমাতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী
চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো নীতিমালা নেই, এ বিষয়ে সরকার কিছু ভাবছে কিনা- জানতে চাইলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো নীতিমালা নেই কিন্তু এ নিয়োগের ক্ষেত্রে কিছু রেওয়াজ রয়েছে। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর যে চিন্তা-ভাবনা তা হচ্ছে, চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ যত কম দেয়া যায়।’
তিনি বলেন, ‘চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ তখনই হয় যখন একজন এক্সপার্ট ব্যক্তির সমকক্ষ লোক পাওয়া যায় না, তাকে কোনো প্রকল্পে রাখলে সুবিধা হয়। প্রকল্প এমন অবস্থায় আছে, কোনো কর্মকর্তা চলে গেলে তা স্তিমিত হতে পারে।’
‘গতকালও (সোমবার) আমরা চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলি। সেখানে উনি প্রথমেই একটা কথা বলেন যে, আমরা এগুলো ডিসকারেজ (নিরুৎসাহিত) করব। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ যত কম দেয়া যায়…। আমরা যে প্রস্তাবগুলো নিয়ে গিয়েছিলাম, একটা বাদে বাকিগুলো তিনি অনুমোদন দিয়েছেন। এগুলোর গুরুত্ব বিবেচনা করে তিনি অনুমোদন দিয়েছেন’বলেন ফরহাদ হোসেন।
কিন্তু বলা হয়, রাজনৈতিক আনুগত্য বিবেচনায় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হয়- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রশ্নই আসে না। প্রমোশন হচ্ছে, আমরা পদায়ন করছি। আপনি অনেক ধরনের কথা শুনতে পাবেন। এখানে পলিটিক্যাল কিছু… একদমই আমাদের বিবেচনায় নেই। যে দায়িত্বটি দেয়া হচ্ছে তিনি তা পালনে পারদর্শী কিনা- এটাই আমাদের মূল বিবেচ্য বিষয়।’
‘আমাদের মাথার মধ্যে কখনই এ কথাগুলো আসে না, এমনকি এ বিষয়ে একটি ওয়ার্ডও উচ্চারিত হয় না যখন আমরা সিদ্ধান্তগুলো নেই।’