রাজশাহী ব্যুরো; পুলিশ পাহারায় এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন রাজশাহীর এক গৃহবধূ। মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনের পরীক্ষায় অংশ নেন বাগমারা উপজেলার মচমইল ডিগ্রি কলেজের এই পরীক্ষার্থী। ওই ছাত্রীর ভাষ্য, তার বোনের স্বামী তাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। ভালোবেসে বিয়ের অপরাধে স্বামীর কাছ থেকে আলাদা করতেই এ হুমকি দেন তার ভগ্নিপতি। এ ঘটনায় সোমবার আদালতে মামলা দায়ের করেন বিউটি খাতুন।
বিউটি খাতুন উপজেলার মাধাইমুড়ি গ্রামের বাবর আলীর মেয়ে। সাত মাস আগে পরিবারের অমতে উপজেলার তেলীপুর গ্রামের মন্টু প্রামাণিকের ছেলে সিরাজুল ইসলামকে ভালোবেসে বিয়ে করেন বিউটি। বিয়ের পর স্বামীর বাড়ি থেকে বিউটি লেখাপড়া করে পরীক্ষার প্রস্তুতি নেন।
কিন্তু হুমকি ছিল পরীক্ষাকেন্দ্রে গেলেই তুলে নিয়ে যাওয়া হবে তাকে। এ জন্য চলমান এইচএসসির প্রথম দিনের পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি বিউটি।
স্বামী সিরাজুল ইসলাম বলেন, সোমবার তারা এ নিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। ওই রাতেই পুলিশ তাদের বাড়িতে যায়। নিরাপত্তাসহ বিউটিকে পরীক্ষা কেন্দ্রে নেয়ার প্রতিশ্রুতিও দেয় পুলিশ। মঙ্গলবার পুলিশি নিরাপত্তায় বিউটি পরীক্ষা দিয়েছেন।
বিউটি খাতুন জানান, চার বছর প্রেমের পর সিরাজুলকে তিনি বিয়ে করেন। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই তার বোনের স্বামী ভবানীগঞ্জ পৌরসভা এলাকার একডালা গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম বিচ্ছেদের জন্য ওঠেপড়ে লাগেন। এরই অংশ হিসেবে বাবার বাড়িতে ডেকে নিয়ে তার স্বামীর ওপর নির্যাতন চালান জাহাঙ্গীর। জিম্মি করে পরে সিরাজুলকে দিয়ে তালাকনামায় সই করিয়ে নেন ভগ্নিপতি।
খবর পেয়ে ওই রাতেই বাগমারা থানা পুলিশ তাদের উদ্ধার করে। এরপর থেকেই অব্যাহত হুমকি পাচ্ছিলেন বলে জানান বিউটি।
বাগমারা থানার ওসি নাছিম আহম্মেদ বলেন, হুমকিতে ওই শিক্ষার্থীর পরীক্ষা দেয়া হচ্ছে না জানতে পেরে ব্যবস্থা নেয় পুলিশ। যত দিন তিনি পরীক্ষা দেবেন তাকে পরীক্ষা কেন্দ্রে আনা-নেয়া করবে পুলিশ। বোনের স্বামীসহ ৫ জনের নামে ওই ছাত্রীর মামলা দেয়ার বিষয়টিও নিশ্চিত করেছেন ওসি।