সিলেট সওজের টাকা আত্মসাৎ মামলার চার্জশিট অনুমোদন
- আপডেট সময় : ০৫:৫১:২৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ মার্চ ২০১৯ ১১০ বার পড়া হয়েছে
সিলেট: সড়ক ও জনপথ ‘সওজ’ সিলেটের ঠিকাদার ও প্রকৌশলীদের বিরুদ্ধে প্রকল্পের ১ কোটি ৭৫ লাখ ৮৪ হাজার টাকা আত্মসাতের দু’টি মামলায় চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত ২৬ মার্চ দুদকের সহকারী পরিচালক মোজাম্মিল হোসেন বাদী হয়ে সিলেট কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা মামলার চার্জশিট ২৮ মার্চ অনুমোদন দিয়েছে কমিশন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, সিলেট সড়ক বিভাগ কর্তৃক বাস্তবায়িত ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে সিলেটে সড়ক বিভাগাধীন মৌলভীবাজার-রাজনগর-ফেঞ্চুগঞ্জ-সিলেট জাতীয় মহাসড়কের (এন ২০৮) এলআরপি চ. ৩০.৬০০ থেকে এলআরপি চ. ৩৩.২২৫, এলআরপি চ. ৩৪.৭৪০ থেকে এলআরপি চ. ৩৫.৩৭৩, এলআরপি চ. ৩৫.৬৪৩ থেকে এলআরপি চ. ৩৭.৮১৪, এলআরপি চ. ৩৭.৯৪৫ থেকে এলআরপি চ. ৪০.০০০, এলআরপি চ. ৫১.৬০০ থেকে এলআরপি চ. ৫১.৯০০, এলআরপি চ. ৩৩.২২৫ থেকে এলআরপি চ. ৩৪.৭৪০ এর মধ্যস্থিত সাতটি কালর্ভাট এর এপ্রোচ সড়কের বিভিন্ন অংশে পিএমপি (সড়ক) র্কমসূচির আওতাধীন ডিবিএস ওয়ারিং কোর্স ও আংশিক কাজ, উক্ত প্রকল্পের সম্পাদিত কাজ দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক নিয়োগকৃত নিরপেক্ষ প্রকৌশল দলের মাধ্যমে ২০১৭ সালের ২০ সেপ্টেম্বর তারিখে প্রকল্পটি সরজমিনে পরিমাপ করা হয়। পরিমাপকালে ৬২ লাখ ৬১ হাজার ২৬০ টাকার কাজ পাওয়া যায়নি।
তাছাড়া উক্ত প্রকল্পের সম্পাদিত কাজের গুণগতমান স্পেসিফিকেশনের (নির্দিষ্টকরণ) সহিত অসামঞ্জস্যপূর্ণ মর্মে ল্যাবরেটরি টেস্টেও প্রমাণিত হয়। অর্থাৎ আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ৬২ লাখ ৬১ হাজার ২৬০ টাকার অসস্পাদিত কাজকে সম্পাদনকৃত কাজ দেখিয়ে মিথ্যাভাবে পরিমাপ বইতে লিপিবদ্ধ করে ও উক্ত টাকার বিল পরিশোধ করে। অর্থাৎ সড়ক বিভাগের প্রকৌশলীরাসহ প্রকল্প বাস্তবায়নকারী ঠিকাদার পারস্পরিক সহযোগিতায় উক্ত টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
এভাবে প্রতারণা ও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহার পূর্বক পারস্পরিক সহযোগিতায় ৬২ লাখ ৬১ হাজার ২৬০ টাকা সরকারি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে এক ঠিকাদার ও ৩ প্রকৌশলীকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়।
আসামিরা হলেন- সিলেট সড়ক বিভাগের প্রাক্তন উপ-সহকারী প্রকৌশলী বর্তমানে ঢাকা জোনের তেজগাঁও এলেনবাড়ির উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. রাসেল, সিলেট সড়ক বিভাগের বিশ্বনাথ সড়ক উপ-বিভাগের প্রাক্তন উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী বর্তমানে ঢাকার মিরপুর পাইকপাড়া বাংলাদেশ সড়ক গবেষণাগারের উপকরণ পরীক্ষা ও রক্ষণাবেক্ষণ উপ-বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী (চলতি দায়িত্ব) মো. তানভীর হোসেন, সিলেট সড়ক বিভাগের প্রাক্তন নির্বাহী প্রকৌশলী বর্তমানে ঢাকার তেজগাঁও সড়ক ভবনে প্রধান প্রকৌশলীর দফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ মনিরুল ইসলাম এবং সিলেটের মেসার্স জন্মভূমি নির্মাতা ও অথরারাইজড সিগনেটরি অব ওহিদুজ্জামান চৌধুরী অ্যান্ড দি নির্মিতি (জেওএন) জেবির প্রোপাইটর ঠিকাদার লুৎফুর রহমান।
তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিলের অনুমোদন দিয়েছে কমিশন।
উল্লেখ্য, মামলার বাদী কমিশনের সহকারী পরিচালক মোজাম্মিল হোসেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন। শিগগিরই সংশ্লিষ্ট আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হবে, জানিয়েছে কমিশন সূত্র।
এদিকে, একই তারিখে সিলেট কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা আরেক মামলায় ২৮ মার্চ চার্জশিট অনুমোদন-২ এর অনুমোদন দিয়েছে কমিশন।
ওই মামলার বিবরণে জানা গেছে, সিলেট সড়ক বিভাগ কর্তৃক বাস্তবায়িত ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে সিলেট সড়ক বিভাগাধীন সিলেট সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের (আর ২৮০) এলআরপি চে. ০.০০ থেকে এলআরপি চে. ১.৫৩২, এলআরপি চে. ১.৫৮২ থেকে এলআরপি চে. ২.৭৯০, এলআরপি চে. ২.৮২০ থেকে এলআরপি চে. ৩.৮১০ এবং এলআরপি চে. ৫.০০০ থেকে এলআরপি চে. ২০.৪৮০ কিলোমিটারের মধ্যে বিভিন্ন অংশে পিএমপি (সড়ক) কর্মসূচির আওতাধীন ডিবিএস ওয়ারিং কোর্স, ডিবিএস বেস কোর্স ও কাজ, উক্ত প্রকল্পের সম্পাদিত কাজ দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক নিয়োগকৃত নিরপেক্ষ প্রকৌশল দলের মাধ্যমে গত ২০১৭ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর প্রকল্পটি সরজমিনে পরিমাপ করা হয়। পরিমাপকালে ১ কোটি ১৩ লাখ ২৩ হাজার ৪১৬ টাকার কাজের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
তাছাড়া উক্ত প্রকল্পের সম্পাদিত কাজের গুণগতমান স্পেসিফিকেশনের সহিত অসামঞ্জস্যপূর্ণ মর্মে ল্যাবরেটরি টেস্টে প্রমাণিত হয়। অর্থাৎ পরস্পর যোগসাজশে ১ কোটি ১৩ লাখ ২৩ হাজার ৪১৬ টাকার অসস্পাদিত কাজকে সম্পাদনকৃত কাজ দেখিয়ে মিথ্যাভাবে পরিমাপ বইতে লিপিবদ্ধ করে ও উক্ত টাকার বিল পরিশোধ করে। অর্থাৎ সড়ক বিভাগের প্রকৌশলীরাসহ প্রকল্প বাস্তবায়নকারী ঠিকাদার পারস্পরিক সহযোগিতায় উক্ত টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
এভাবে প্রতারণা ও জালজালিয়াতির মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহার পূর্বক পারস্পরিক সহযোগিতায় সরকারি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে আগের মামলার ঠিকাদার লু’ফুর রহমান ও ৫ প্রকৌশলীকে আসামি করা হয়।
অন্য আসামিরা হলেন-সিলেট সড়ক বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. মাসুম আহমেদ, সিলেটের প্রাক্তন উপ-সহকারী প্রকৌশলী বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আনোয়ার হোসেন, সিলেট সড়ক বিভাগের প্রাক্তন উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী বর্তমানে ঢাকার মিরপুর পাইকপাড়া সওজ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সেতু রক্ষণাবেক্ষণ ও কার্যক্রম বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী (চলতি দায়িত্বে) আবুল বরকত মো. খুরশীদ আলম, সিলেট সড়ক বিভাগের বিশ্বনাথ সড়ক উপ-বিভাগের প্রাক্তন উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. তানভীর হোসেন, সিলেটের প্রাক্তন নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ মনিরুল ইসলাম। তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিলের অনুমোদন দিয়েছে কমিশন। এই মামলারও বাদী কমিশনের সহকারী পরিচালক মোজাম্মিল হোসেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন।
শিগগিরই সংশ্লিষ্ট আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হবে, জানিয়েছে কমিশন সূত্র। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার এবং প্রকৌশলীদের বিরুদ্ধে প্রকল্পের ১ কোটি ৭৫ লাখ ৮৪ হাজার টাকা আত্মসাতের দু’টি মামলার চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে কমিশন।