নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের সাবেক শিল্প মন্ত্রীর সঙ্গে তার ছিল দহরাম মহরম সম্পর্ক। মন্ত্রীর লোক পরিচয় দিয়ে দাপুটে কর্মকর্তা হিসেবে দুর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়।
ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আমলে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধিনে পরিচালিত বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশ (বিসিক) এর এক ছায়া চেয়ারম্যানের আবির্ভাব ঘটে। এই ছায়া চেয়ারম্যানের পরামর্শ বা মতামতেই চলতো যাবতীয় প্রশাসনিক কার্যক্রম। ঘুষ দুর্নীতি বদলি সহ নানা রকম তদবিরের মাস্টারমাইন্ড লবণ সেলের কর্মকর্তা সরোয়ার হোসেন।
স্বৈরাচার শেখ হাসিনার শাসনামলের প্রায় অর্ধেক সময় তিনি পুরো বিসিক একাই নিয়ন্ত্রণ করে লুটপাট করেছেন।
ফলে কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
বিসিকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক থেকে লবণ সেলের প্রধান হিসাবে কর্মরত আছেন মোঃ সরোয়ার হোসেন। বিসিকের চাকুরীতে ২০১৫ সালে প্রথম নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছিলেন বিসিক নৈপুন্য বিকাশ কেন্দ্র গোপালগঞ্জ শীর্ষক একট প্রকল্পের ৬ষ্ঠ গ্রেডের উপব্যবস্থাপক পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা পদোন্নতি প্রাপ্তির পর হতে অদ্যবাধি ৫ বছর লবণসেল প্রধানের একই পদে কর্মরত আছেন সরকারের প্রচলিত বদলীর সাধারণ শর্তাবলী ভংগ করে।
অভিযোগ রয়েছে হাই বহির্ভূত অর্থের মাধ্যমে নামে-বেনামে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় কিনেছেন ৫/৬ টি ফ্ল্যাট ও প্লট।
শিল্পমন্ত্রীর পিএস, শিল্প মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের উপহার, উপঢৌকন দিয়ে খুশি রেখে দেশের লবন প্রকল্পের সর্বনাশ ঘটিয়েও বহাল রয়েছেন চাকুরীতে। জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পরবর্তী সময়ে দেশ যখন মহা সংস্কারের পথে তখন ওই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা তার চেয়ারে দুলছেন প্রতিনিয়ত। লবণ সেল বিভাগের প্রধান ও সম্প্রসারণ বিভাগের দায়িত্বে থেকে তিনি বিসিক ভবনে ঘুস -দুর্ণীতির দোকান খুলে বসেছেন।
কথায় কথায় তিনি কর্মচারিদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন।
বিগত দিনে বিসিকের কর্মচারি ইউনিয়ন বিএনপিপন্থী নেতাদের অপমান অপদস্ত করে তাদের কর্মসূচিও পন্ড করে দিয়েছেন এই সরোয়ার। বিগত শেখ হাসিনার সরকারের আমলে কয়েকবার লবণ কান্ডের ঘটনা ঘটেছিল, সেখানেও হাত ছিল এই সরোয়ার হোসেনের।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা জানান, শিল্প মন্ত্রীর পিএস ও এপিএসের মাধ্যমে মন্ত্রীর কাছে ঘুষের টাকা নিয়মিত পৌঁছে দিতেন। মন্ত্রী সিন্ডিকেটের সাথে ছিল দহরম মহরম সম্পর্ক গড়ে তুলে গোটা বিসিকে নিজের লুটপাটের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছেন তিনি। সরকারী চাকুরী শৃংক্ষলাবিধি ভংগ করে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে দু‘হাতে অবৈধ অর্থ উপার্জন করছেন। স্ত্রী আত্মীয় ও পরিবারের বিভিন্ন জনের নামে গড়েছেন সম্পদ। দুর্নীতিবাজ এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ফুসে উঠেছে কর্মচারি ইউনিয়নের নেতারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিসিক কর্মচারী ইউনিয়নের একটি সূত্র সকালের সংবাদকে জানান, বিগত দিনে স্বৈরাচার সরকারের সাবেক শিল্প মন্ত্রীর পারিবারিক আত্মীয় পরিচয় দিয়ে নিজেকে বড় আওয়ামী লীগের হিসেবে উপস্থাপন করতেন সারোয়ার হোসেন।
এসব অভিযোগের বিষয়ে সরোয়ার হোসাইন এর মুঠোফোন নাম্বারে মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘটনা সত্য নয়। বাংলাদেশের একমাত্র পণ্য লবণ যার কোন মূল্য বৃদ্ধি পায়নি । কোন ঘাটতি হয়নি। আমরা ৬৩ বছরের মধ্যে রেকর্ড পরিমান লবণ উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছি। আমি সৎ ভাবে জীবন যাপন করি। কোন প্রকার সম্পদ নেই। সব তথ্য মিথ্যা ।