ঢাকা ১০:৩৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হলেন মুহাম্মদ আবু আবিদ Logo প্রধান উপদেষ্টার দেয়া নির্বাচনী সময়ে সন্তুষ্ট নয় বিএনপি Logo ডেসটিনি প্রতারক রফিকুল আমিনের নতুন রাজনৈতিক দল গঠন Logo একচেটিয়া লিফট সরবরাহ চুক্তি: ওয়ালটনের টাকায় শেখর সহ গণপূর্ত’ চার প্রকৌশলীর বিদেশ ভ্রমণ! Logo বঙ্গবন্ধু পরিষদের নেতা ডিপিডিসির প্রকৌশলী রাজ্জাক ধরাছোঁয়ার বাইরে পর্ব -১ Logo আগস্ট বিপ্লবের অদৃশ্য শক্তি তারেক রহমান – মাহমুদ হাসান Logo ছাত্র জনতাকে ১০ মিনিটে ক্লিয়ার করার ঘোষণা দেয়া হামিদ চাকুরীতে বহাল Logo ছাত্রলীগ নেত্রী যুবলীগ নেতার প্রতারণার শিকার চিকিৎসক সালেহউদ্দিন: বিচার ও প্রতিকার দাবি Logo দেশসেরা সহকারী জজ পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জনে সংবর্ধনা Logo মাদরাসাসহ সকল শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণের দাবি বিএমজিটিএ’র




স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে লাটিম ঘুরাচ্ছেন ৬ ‘কুতুব’

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:০৮:২৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৪৯ বার পড়া হয়েছে

সকালের সংবাদ:

ছয়জন কর্মকর্তার হাতেই এখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধিকাংশ কাজকর্ম। অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিব ও উপসচিব মর্যাদার এসব কর্মকর্তা মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ একাধিক অধিশাখা ও শাখার দায়িত্ব পালন করছেন। কারও কারও বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগও রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এই মন্ত্রণালয়ে রয়েছেন তাঁরা।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রশাসন, অর্থ, পুলিশ, রাজনৈতিক, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণবিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ শাখা, অনুবিভাগ কিংবা অধিশাখার দায়িত্বে রয়েছেন মাত্র ছয়জন কর্মকর্তা।

তাঁরা হলেন জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবু হেনা মোস্তফা জামান, যুগ্ম সচিব শহীদ মোহাম্মদ ছাইদুল হক, উপসচিব মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম মজুমদার ও নূরে মাহবুবা জয়া এবং সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব খায়রুল কবীর মেনন এবং যুগ্ম সচিব সেখ ফরিদ আহমেদ।

মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, নিজেদের প্রভাব বহাল রাখার জন্য এসব কর্মকর্তা নতুন করে পদায়ন ঠেকাতে মরিয়া। এজন্য দীর্ঘদিন ধরে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলোতে পদায়ন বন্ধ। মূলত এ ছয় কর্মকর্তাই মন্ত্রণালয়ে প্রভাবের ছড়ি ঘোরাচ্ছেন।

সূত্র বলছে, জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবু হেনা মোস্তফা জামান একাই এ বিভাগের অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি প্রশাসন, অর্থ ও মেডিকেল অনুবিভাগ, রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল অধিশাখা ও আইসিটি সেলের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ২০১৭ সালের দিকে উপসচিব হিসেবে যোগ দেন। এরপর একাধিক পদোন্নতি পেলেও একই মন্ত্রণালয়ে রয়েছেন।

জানতে চাইলে আবু হেনা মোস্তফা জামান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, মন্ত্রণালয়ে কর্মকর্তার সংখ্যা কমে যাওয়ায় তিনি এসব দায়িত্ব পালন করছেন।

জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্ম সচিব শহীদ মোহাম্মদ ছাইদুল হক প্রশাসন অধিশাখা, মেডিকেল অনুবিভাগ-১ ও মেডিকেল অনুবিভাগ-২-এ দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ২০১৮ সালে সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব ফরিদ উদ্দিন আহমেদের একান্ত সচিব (পিএস) হিসেবে এ মন্ত্রণালয়ে যোগ দেন। এরপর থেকে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদে বহাল রয়েছেন। একই বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম মজুমদার পুলিশ-১ শাখায় দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়া তাঁকে পুলিশ-৪ ও পুলিশ-৫ শাখার অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মাহবুবুল আলম মজুমদার এ মন্ত্রণালয়ে ৫ বছর ধরে কর্মরত।

জননিরাপত্তা বিভাগের উপসচিব নূরে মাহবুবা জয়া কাজ করছেন পুলিশ-৩ শাখায়। এ ছাড়া এনটিএমসি-১ ও এনটিএমসি-২ শাখারও অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। নূরে মাহবুবা ২০১৫ সালের দিকে অবিভক্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগ দেন। এরপর চার বছরের জন্য মিশনে যান। সেখান থেকে ফিরে আবার যোগদান করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে।

মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব সেখ ফরিদ আহমেদ একই সঙ্গে প্রশাসন বিভাগ ও পরিকল্পনা অনুবিভাগে যুক্ত রয়েছেন। ২০১৭ সালের দিকে এ মন্ত্রণালয়ে যোগ দেন তিনি। তখন থেকে একই মন্ত্রণালয়ে কর্মরত তিনি।

সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব খায়রুল কবীর মেনন প্রশাসন ও অর্থ অনুবিভাগের দায়িত্বে রয়েছেন। এ ছাড়া তিনি আইন ও শৃঙ্খলা অনুবিভাগ এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বিভাগেরও দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আছেন এক বছর ধরে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে খায়রুল কবীর মেনন আজকের পত্রিকাকে বলেন, আইন ও শৃঙ্খলা বিভাগে একজন কর্মকর্তা যোগ দেওয়ায় তাঁর দায়িত্ব গতকালই ছেড়ে দিয়েছেন।

জানতে চাইলে দুর্নীতি-অনিয়ম নজরদারি প্রতিষ্ঠান ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, মন্ত্রণালয়ে একাধিক শাখা বা অধিশাখা গঠনের অন্যতম কারণ ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ। একজন একাধিক শাখা বা অধিশাখায় দায়িত্ব পালন করলে সেখানে বৈষম্য সৃষ্টি হয় ও ক্ষমতার অপব্যবহারের সুযোগ থাকে। অন্যদের মধ্যে কাজে নিস্পৃহ মনোভাব সৃষ্টি হয়। এ বিষয়ে নজর দেওয়া জরুরি।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে লাটিম ঘুরাচ্ছেন ৬ ‘কুতুব’

আপডেট সময় : ১২:০৮:২৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সকালের সংবাদ:

ছয়জন কর্মকর্তার হাতেই এখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধিকাংশ কাজকর্ম। অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিব ও উপসচিব মর্যাদার এসব কর্মকর্তা মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ একাধিক অধিশাখা ও শাখার দায়িত্ব পালন করছেন। কারও কারও বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগও রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এই মন্ত্রণালয়ে রয়েছেন তাঁরা।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রশাসন, অর্থ, পুলিশ, রাজনৈতিক, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণবিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ শাখা, অনুবিভাগ কিংবা অধিশাখার দায়িত্বে রয়েছেন মাত্র ছয়জন কর্মকর্তা।

তাঁরা হলেন জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবু হেনা মোস্তফা জামান, যুগ্ম সচিব শহীদ মোহাম্মদ ছাইদুল হক, উপসচিব মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম মজুমদার ও নূরে মাহবুবা জয়া এবং সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব খায়রুল কবীর মেনন এবং যুগ্ম সচিব সেখ ফরিদ আহমেদ।

মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, নিজেদের প্রভাব বহাল রাখার জন্য এসব কর্মকর্তা নতুন করে পদায়ন ঠেকাতে মরিয়া। এজন্য দীর্ঘদিন ধরে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলোতে পদায়ন বন্ধ। মূলত এ ছয় কর্মকর্তাই মন্ত্রণালয়ে প্রভাবের ছড়ি ঘোরাচ্ছেন।

সূত্র বলছে, জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবু হেনা মোস্তফা জামান একাই এ বিভাগের অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি প্রশাসন, অর্থ ও মেডিকেল অনুবিভাগ, রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল অধিশাখা ও আইসিটি সেলের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ২০১৭ সালের দিকে উপসচিব হিসেবে যোগ দেন। এরপর একাধিক পদোন্নতি পেলেও একই মন্ত্রণালয়ে রয়েছেন।

জানতে চাইলে আবু হেনা মোস্তফা জামান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, মন্ত্রণালয়ে কর্মকর্তার সংখ্যা কমে যাওয়ায় তিনি এসব দায়িত্ব পালন করছেন।

জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্ম সচিব শহীদ মোহাম্মদ ছাইদুল হক প্রশাসন অধিশাখা, মেডিকেল অনুবিভাগ-১ ও মেডিকেল অনুবিভাগ-২-এ দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ২০১৮ সালে সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব ফরিদ উদ্দিন আহমেদের একান্ত সচিব (পিএস) হিসেবে এ মন্ত্রণালয়ে যোগ দেন। এরপর থেকে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদে বহাল রয়েছেন। একই বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম মজুমদার পুলিশ-১ শাখায় দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়া তাঁকে পুলিশ-৪ ও পুলিশ-৫ শাখার অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মাহবুবুল আলম মজুমদার এ মন্ত্রণালয়ে ৫ বছর ধরে কর্মরত।

জননিরাপত্তা বিভাগের উপসচিব নূরে মাহবুবা জয়া কাজ করছেন পুলিশ-৩ শাখায়। এ ছাড়া এনটিএমসি-১ ও এনটিএমসি-২ শাখারও অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। নূরে মাহবুবা ২০১৫ সালের দিকে অবিভক্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগ দেন। এরপর চার বছরের জন্য মিশনে যান। সেখান থেকে ফিরে আবার যোগদান করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে।

মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব সেখ ফরিদ আহমেদ একই সঙ্গে প্রশাসন বিভাগ ও পরিকল্পনা অনুবিভাগে যুক্ত রয়েছেন। ২০১৭ সালের দিকে এ মন্ত্রণালয়ে যোগ দেন তিনি। তখন থেকে একই মন্ত্রণালয়ে কর্মরত তিনি।

সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব খায়রুল কবীর মেনন প্রশাসন ও অর্থ অনুবিভাগের দায়িত্বে রয়েছেন। এ ছাড়া তিনি আইন ও শৃঙ্খলা অনুবিভাগ এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বিভাগেরও দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আছেন এক বছর ধরে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে খায়রুল কবীর মেনন আজকের পত্রিকাকে বলেন, আইন ও শৃঙ্খলা বিভাগে একজন কর্মকর্তা যোগ দেওয়ায় তাঁর দায়িত্ব গতকালই ছেড়ে দিয়েছেন।

জানতে চাইলে দুর্নীতি-অনিয়ম নজরদারি প্রতিষ্ঠান ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, মন্ত্রণালয়ে একাধিক শাখা বা অধিশাখা গঠনের অন্যতম কারণ ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ। একজন একাধিক শাখা বা অধিশাখায় দায়িত্ব পালন করলে সেখানে বৈষম্য সৃষ্টি হয় ও ক্ষমতার অপব্যবহারের সুযোগ থাকে। অন্যদের মধ্যে কাজে নিস্পৃহ মনোভাব সৃষ্টি হয়। এ বিষয়ে নজর দেওয়া জরুরি।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।