ভোলায় অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর লাশ হাসপাতালে ফেলে স্বামী লাপাত্তা
- আপডেট সময় : ১০:১৮:৪২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ মার্চ ২০১৯ ১১৩ বার পড়া হয়েছে
বোরহানউদ্দিন (ভোলা) প্রতিনিধি; ভোলার বোরহানউদ্দিনে অন্তঃস্বত্ত্বা স্ত্রী রেখা আক্তারের লাশ হাসপাতালে ফেলে স্বামী মো. ফরিদ ও তার পরিবার পালিয়ে গেছেন। গত পাঁচ দিন ধরে তারা লাপাত্তা।
রেখা উপজেলার বড়মানিকা ইউনিয়নের মানিকা গ্রামের মো. কামালের মেয়ে। ফরিদ একই উপজেলার পক্ষিয়া ইউনিয়নের বাটামারা গ্রামের মৃত গোলাম কিবরিয়ার ছেলে। দুই বছর আগে প্রেমের সম্পর্কের জেরে পারিবারিক সম্মতিতে রেখা ও ফরিদের বিয়ে হয়।
বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বৃহস্পতিবার রাতে লাশ ফেলে পালিয়ে যান ফরিদ ও তার পরিবার। পরে পুলিশ রেখার লাশ গ্রহণ করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ রেখার বাবা-মায়ের কাছে হস্তান্তর করলে শুক্রবার দাফন করা হয়।
রেখার স্বজনরা রেখাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ করে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
সোমবার রেখার বাবার বাড়িতে তার বাবা কামাল, মা পারভিন ও একমাত্র ভাই সোহাগ জানান, দুই বছর আগে রেখা ও ফরিদের বিয়ে হয়। বিয়ের দুই-তিন মাস যেতে না যেতেই নানা অজুহাতে ফরিদ, তার মা রোশনা বেগম ও ননদ নাজমা বেগম রেখাকে মারধর করত। রেখা চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা হওয়া সত্ত্বেও ৭-৮ দিন আগে মারধর করলে রেখা বাবার বাড়িতে চলে আসে।
ঘটনার ৩ দিন আগে রেখাকে বুঝিয়ে-শুনিয়ে স্বামীর বাড়ি পাঠানো হয়। গত বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১১টার দিকে রেখার স্বামী ফরিদ তার শাশুড়ি পারভিন বেগমকে রেখা অসুস্থ জানিয়ে হাসপাতালে আসতে বলেন। বাবা ও ভাই বাড়িতে না থাকায় পারভিন বেগম এক প্রতিবেশীকে নিয়ে হাসপাতালে যান রেখার মা। কিন্তু হাসপাতালে গিয়ে ফরিদ ও তার পরিবারের কাউকে খুঁজে পাননি। তাদের মোবাইল ফোনও বন্ধ পান।
রেখার বাবা কামাল জানান, একপর্যায়ে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে রেখার লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। রেখার গলায় কালো গভীর দাগ ছিল বলে তিনি জানান।
বৃহস্পতিবার দায়িত্বরত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মুবাশ্বির হাসান লিমন জানান, হাসপাতালে আনার আগেই রেখা মারা গেছেন। তার গলায় ফাঁস নেয়ার মতো দাগ ছিল। পুলিশ তদন্ত করলে হত্যা না আত্যহত্যা তা পরিষ্কার হবে।
এদিকে সরজমিনে সোমবার দুপুরে ফরিদের বাড়িতে তার ঘর রশি দিয়ে আটকানো দেখা যায়। বাড়িতে ফরিদ বা তার স্বজন নেই। অন্য ঘরেও কোনো পুরুষ লোক পাওয়া যায়নি। অন্যান্য ঘরের মহিলারা জানান, বৃহস্পতিবার রাত থেকে তারা কোথায় গেছেন বলতে পারে না।
পাশের ঘরের তহুরা বেগম জানান, তিনি কিছু বলতে পারেন না। আরেক ঘরের ষাটোর্ধ্ব তহুরা বেগম জানান, রেখাকে যখন হাসপাতালে নিয়ে যায় তখন তিনি হাতের শিরা দেখেছেন। শিরা পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে বোরহানউদ্দিন থানার ওসি অসিম শিকদার জানান, রেখার মৃত্যুর ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে হত্যার আলামত পেলে রেখার স্বজনরা মামলা না করলেও পুলিশ বাদী হয়ে হত্যা মামলা করবে।