ঢাকা ০২:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫, ১৩ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo আগস্ট বিপ্লবের অদৃশ্য শক্তি তারেক রহমান – মাহমুদ হাসান Logo ছাত্র জনতাকে ১০ মিনিটে ক্লিয়ার করার ঘোষণা দেয়া হামিদ চাকুরীতে বহাল Logo ছাত্রলীগ নেত্রী যুবলীগ নেতার প্রতারণার শিকার চিকিৎসক সালেহউদ্দিন: বিচার ও প্রতিকার দাবি Logo দেশসেরা সহকারী জজ পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জনে সংবর্ধনা Logo মাদরাসাসহ সকল শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণের দাবি বিএমজিটিএ’র Logo এনবিআরে আরেক মতিউর: কর কমিশনার কবিরের সম্পদের পাহাড় Logo চাকুরীর নামে ভুয়া মেজরের কোটি টাকার প্রতারণা: মিথ্যে মামলায় ভুক্তভোগীদের হয়রানি Logo পটুয়াখালী এলএ শাখায় ঘুষ ছাড়া সেবা পাচ্ছেনা ইপিজেড ও পায়রা বন্দরের ক্ষতিগ্রস্তরা Logo খুলনায় বন্ধ পাটকল চালু ও বকেয়া বেতনের দাবিতে আমজনতার দলের বিক্ষোভ Logo এলজিইডি প্রধান প্রকৌশলী রশীদ’র বিরুদ্ধে ৩০০ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ




আইনকে তোয়াক্কা করেনা রাজধানীর হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:১১:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ জুন ২০২৩ ৪০১ বার পড়া হয়েছে

মোঃ শাহ জামাল: একটি জাতিকে শিক্ষিত নীতিবান ও মানবিক হিসেবে গড়ে তোলার অভিভাবক শিক্ষক। সেই শিক্ষকদের মাঝেই যখন চলে অনৈতিক কর্মকান্ড, দুর্নীতি ও আইন শৃঙ্খলা লঙ্ঘনের মত গুরুতর অপরাধের মহা উৎসব তখন কি শিখছে জাতীর ভবিষ্যৎ কর্ণধর শিক্ষার্থীগণ! বলছি রাজধানীর হাবিবুল্লাহ বাহারে কলেজের অধ্যক্ষ নিয়োগ দুর্নীতি অনিয়ম ও নীতিমালার মহা উৎসবের ঘটনার বিষয়ে।

রাজধানীর হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজে অধ্যক্ষের অবসরের পর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব প্রদানের ক্ষেত্রে শিক্ষামন্ত্রনালয়ের জারিকৃত ২০২১ সনের জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা লংগন করে জেষ্ঠ শিক্ষককে বাদ দিয়ে স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে শিক্ষক তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে থাকা সাচিবিক বিদ্যা বিভাগের শিক্ষক মোঃ রাকিবুল হককে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সাধারণ শিক্ষকদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে বহুদিন ধরে। নীতিমালা লঙ্ঘনের অভিযোগে দোষীদের বিরুদ্ধে নেওয়া হচ্ছে না কোন প্রকার আইনের ব্যবস্থা। একেবারেই নিশ্চুপ শিক্ষা মন্ত্রণালয় সহ সংশ্লিষ্ট সকলকর্তারা। অবস্থা এমন যে, অসংখ্য অভিযোগের পরেও সংশ্লিষ্ট সকলেই যেন নাকে খাঁটি সরিষার তেল দিয়ে চিরনিদ্রায়।

এ বিষয়ে হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজের জেষ্ঠ শিক্ষক হাফেজ কাজী আহমাদুল্লাহর নিকট জানতে চাইলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, সরকারের শিক্ষামন্ত্রনালয় কর্তৃক জারিকৃত ২০২১ সনের জনবল কাঠামো অনুযায়ী জেষ্ঠ শিক্ষককেই অধ্যক্ষের দায়িত্ব প্রদানের নিয়ম। আশপাশের সকল ডিগ্রী কলেজেই এই নিয়ম পালিত হয়েছে এবং হচ্ছে, যেমন সিদ্ধেশ্বরী গার্লস
কলেজ। কিন্তু আমাদের কলেজে কোন এক অজ্ঞাত কারণে গভর্নিং বডি জেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে আমাকে দায়িত্ব না দিয়ে তালিকায় থাকা তৃতীয় শিক্ষক মোঃ রাকিবুল হককে দায়িত্ব প্রদান করেন। যা সম্পুর্ণ রূপে অনিয়ম এবং জনবলকাঠামো ও এমপিও নীতিমালার লঙ্ঘন। কলেজের দ্বিতীয় জেষ্ঠ শিক্ষক রিজিয়া বেগমের নিকট এই বিষয়ে জানতে চাইলে এই প্রতিবেদককে তিনি বলেন, অধ্যক্ষের অবসরে যাওয়ার অল্প কিছু দিন আগে আমাদের নিকট থেকে সিভি চাওয়া হয়। সিভি জমা দেওয়ার সময় সাবেক অধ্যক্ষ মহোদয়ের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগের জন্য এই সিভি চাওয়া হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে দেখা গেল অধ্যক্ষের দায়িত্ব প্রদানেরর ক্ষেত্রে আহমাদুল্লাহ স্যার এবং আমাকে জানানোই হলনা। রাতের অন্ধকারে আমাদেরকে না জানিয়ে তালিকায় থাকা তৃতীয় অবস্থানে থাকা মোঃ রাকিবুল হককে দায়িত্ব প্রদান করা হয়, যা জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালাকে এক প্রকার পদপিষ্ট করা হয়েছে বলে মনে করি। এই ক্ষেত্রে আমাদের সম্মতি বা অসম্মতি কোনটাই নেওয়া হয় নাই এমনকি কারও সাথে আলোচনা করাও প্রয়োজন হয়নাই।

এক বারের জন্য আমাদের দুজনের নিকট জানতেও চাওয়া হলনা যে আমরা দায়িত্ব নিতে চাই কিনা। এমন নজির ঢাকা শহরে বিরল। এই প্রতিবেদকের সাথে হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজের কয়েকজন শিক্ষকের সাথে কথা হয়। তারা সকলেই নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন যে, কলেজে কাজের স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট হয়ে গেছে। প্রথম ও দ্বিতীয় জনকে বাদ দিয়ে তৃতীয় জনকে দায়িত্ব দেওয়ায় কলেজের মধ্যে একটা বিশৃঙ্খলা তৈরী হয়েছে। তাছাড়া অধ্যক্ষের দায়িত্ব প্রদানের ক্ষেত্রে প্রথম, দ্বিতীয় জনের কোন প্রকার সম্মতি না নিয়ে তাকে কলেজে একটা দমবন্ধ অবস্থা বিরাজ করছে। কোন শিক্ষকই সাহস করে কোন কথা বলতে পারেনা। এই প্রতিবেদক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব প্রদানের নিয়ম কি তা জানার জন্য ঢাকা শহরের কয়েকটি ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষের সাথে কথা বললে তারা তাদের নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, যদিও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিতে রয়েছে ৫ জন সিনিয়র শিক্ষকের মধ্য থেকে যেকোন একজনকে অধ্যক্ষের দায়িত্ব প্রদান করা যায়। সেই ক্ষেত্রে তালিকায় যিনি প্রথমে থাকেন তার নিকট জানতে চাওয়া হয় তিনি দায়িত্ব নিবেন কিনা। তিনি যদি দায়িত্ব না নেন তাহলে প্রথম জনের সম্মতিতে দ্বিতীয় জন, অথবা দ্বিতীয় জনের সম্মতিতে তৃতীয় জন অধ্যক্ষের দায়িত্ব নিয়ে থাকেন। যেমন খিলগাও মডেল কলেজের অধ্যক্ষের ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব প্রদানের ক্ষেত্রে প্রথম জনের সম্মতিয়ে তালিকায় থাকা দ্বিতীয় জনকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছিল। অপর দিকে সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজে তালিকা থাকা জেষ্ট শিক্ষককেই ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব প্রদান কিরা হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের কয়েকটি চিঠিও প্রমাণ করে যে তালিকায় থাকা প্রথম জনকেই ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব প্রদান করতে হবে। যেমন ০৯/০৪/২০২৩ তারিখ মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের এক পত্রে মজিদা ডিগ্রী কলেজ, সদর, কুড়িগ্রাম এর গভর্নিং বডির সভাপতিকে নির্দেশ দিয়েছে যে, জেষ্ঠতম শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব প্রদানের জন্য। অপর দিকে ৮ ডিসেম্বর ২০২০ মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের এক পত্রে গাজীপুর সদরের রোভারপল্লী ডিগ্রী কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতিকে নির্দেশ দেওয়া হয় যে পুর্বে দায়িত্ব প্রাপ্ত শিক্ষককে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে জেষ্ঠ শিক্ষক মোঃ আবু নাসের সরকার কে দায়িত্ব প্রদানের জন্য।

তাছাড়া সম্প্রতি মাধ্যমিক সময়ে গত ১২ জুন ২০২৩ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের এক পত্রে এই সংক্রান্ত জনবল কাঠামো এবং এবং এমপিও নীতিমালা কাঠোর ভাবে প্রতিপালনের নির্দেশনা দেওয়া হয়। এই নীতিমালা পালনে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের অবসর ও কল্যাণ সুবিধা বাতিল এমনকি কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতির পদ শুন্য ঘোষণা করার কথাও বলা হয়েছে।

কলেজের অধিকাংশ শিক্ষকের দাবি জেষ্ঠতা ও নীতিমালা অনুযায়ী কলেজের অধ্যক্ষ নির্বাচন করা হোক। এবং সেই সাথে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দুর্নীতি অনিয়ম ও খামখেয়ালী কর্মকান্ডের অবসান ঘটিয়ে কলেজে সুষ্ঠ পাঠদানের পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হোক।

Loading

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




আইনকে তোয়াক্কা করেনা রাজধানীর হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজ

আপডেট সময় : ১২:১১:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ জুন ২০২৩

মোঃ শাহ জামাল: একটি জাতিকে শিক্ষিত নীতিবান ও মানবিক হিসেবে গড়ে তোলার অভিভাবক শিক্ষক। সেই শিক্ষকদের মাঝেই যখন চলে অনৈতিক কর্মকান্ড, দুর্নীতি ও আইন শৃঙ্খলা লঙ্ঘনের মত গুরুতর অপরাধের মহা উৎসব তখন কি শিখছে জাতীর ভবিষ্যৎ কর্ণধর শিক্ষার্থীগণ! বলছি রাজধানীর হাবিবুল্লাহ বাহারে কলেজের অধ্যক্ষ নিয়োগ দুর্নীতি অনিয়ম ও নীতিমালার মহা উৎসবের ঘটনার বিষয়ে।

রাজধানীর হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজে অধ্যক্ষের অবসরের পর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব প্রদানের ক্ষেত্রে শিক্ষামন্ত্রনালয়ের জারিকৃত ২০২১ সনের জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা লংগন করে জেষ্ঠ শিক্ষককে বাদ দিয়ে স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে শিক্ষক তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে থাকা সাচিবিক বিদ্যা বিভাগের শিক্ষক মোঃ রাকিবুল হককে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সাধারণ শিক্ষকদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে বহুদিন ধরে। নীতিমালা লঙ্ঘনের অভিযোগে দোষীদের বিরুদ্ধে নেওয়া হচ্ছে না কোন প্রকার আইনের ব্যবস্থা। একেবারেই নিশ্চুপ শিক্ষা মন্ত্রণালয় সহ সংশ্লিষ্ট সকলকর্তারা। অবস্থা এমন যে, অসংখ্য অভিযোগের পরেও সংশ্লিষ্ট সকলেই যেন নাকে খাঁটি সরিষার তেল দিয়ে চিরনিদ্রায়।

এ বিষয়ে হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজের জেষ্ঠ শিক্ষক হাফেজ কাজী আহমাদুল্লাহর নিকট জানতে চাইলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, সরকারের শিক্ষামন্ত্রনালয় কর্তৃক জারিকৃত ২০২১ সনের জনবল কাঠামো অনুযায়ী জেষ্ঠ শিক্ষককেই অধ্যক্ষের দায়িত্ব প্রদানের নিয়ম। আশপাশের সকল ডিগ্রী কলেজেই এই নিয়ম পালিত হয়েছে এবং হচ্ছে, যেমন সিদ্ধেশ্বরী গার্লস
কলেজ। কিন্তু আমাদের কলেজে কোন এক অজ্ঞাত কারণে গভর্নিং বডি জেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে আমাকে দায়িত্ব না দিয়ে তালিকায় থাকা তৃতীয় শিক্ষক মোঃ রাকিবুল হককে দায়িত্ব প্রদান করেন। যা সম্পুর্ণ রূপে অনিয়ম এবং জনবলকাঠামো ও এমপিও নীতিমালার লঙ্ঘন। কলেজের দ্বিতীয় জেষ্ঠ শিক্ষক রিজিয়া বেগমের নিকট এই বিষয়ে জানতে চাইলে এই প্রতিবেদককে তিনি বলেন, অধ্যক্ষের অবসরে যাওয়ার অল্প কিছু দিন আগে আমাদের নিকট থেকে সিভি চাওয়া হয়। সিভি জমা দেওয়ার সময় সাবেক অধ্যক্ষ মহোদয়ের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগের জন্য এই সিভি চাওয়া হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে দেখা গেল অধ্যক্ষের দায়িত্ব প্রদানেরর ক্ষেত্রে আহমাদুল্লাহ স্যার এবং আমাকে জানানোই হলনা। রাতের অন্ধকারে আমাদেরকে না জানিয়ে তালিকায় থাকা তৃতীয় অবস্থানে থাকা মোঃ রাকিবুল হককে দায়িত্ব প্রদান করা হয়, যা জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালাকে এক প্রকার পদপিষ্ট করা হয়েছে বলে মনে করি। এই ক্ষেত্রে আমাদের সম্মতি বা অসম্মতি কোনটাই নেওয়া হয় নাই এমনকি কারও সাথে আলোচনা করাও প্রয়োজন হয়নাই।

এক বারের জন্য আমাদের দুজনের নিকট জানতেও চাওয়া হলনা যে আমরা দায়িত্ব নিতে চাই কিনা। এমন নজির ঢাকা শহরে বিরল। এই প্রতিবেদকের সাথে হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজের কয়েকজন শিক্ষকের সাথে কথা হয়। তারা সকলেই নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন যে, কলেজে কাজের স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট হয়ে গেছে। প্রথম ও দ্বিতীয় জনকে বাদ দিয়ে তৃতীয় জনকে দায়িত্ব দেওয়ায় কলেজের মধ্যে একটা বিশৃঙ্খলা তৈরী হয়েছে। তাছাড়া অধ্যক্ষের দায়িত্ব প্রদানের ক্ষেত্রে প্রথম, দ্বিতীয় জনের কোন প্রকার সম্মতি না নিয়ে তাকে কলেজে একটা দমবন্ধ অবস্থা বিরাজ করছে। কোন শিক্ষকই সাহস করে কোন কথা বলতে পারেনা। এই প্রতিবেদক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব প্রদানের নিয়ম কি তা জানার জন্য ঢাকা শহরের কয়েকটি ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষের সাথে কথা বললে তারা তাদের নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, যদিও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিতে রয়েছে ৫ জন সিনিয়র শিক্ষকের মধ্য থেকে যেকোন একজনকে অধ্যক্ষের দায়িত্ব প্রদান করা যায়। সেই ক্ষেত্রে তালিকায় যিনি প্রথমে থাকেন তার নিকট জানতে চাওয়া হয় তিনি দায়িত্ব নিবেন কিনা। তিনি যদি দায়িত্ব না নেন তাহলে প্রথম জনের সম্মতিতে দ্বিতীয় জন, অথবা দ্বিতীয় জনের সম্মতিতে তৃতীয় জন অধ্যক্ষের দায়িত্ব নিয়ে থাকেন। যেমন খিলগাও মডেল কলেজের অধ্যক্ষের ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব প্রদানের ক্ষেত্রে প্রথম জনের সম্মতিয়ে তালিকায় থাকা দ্বিতীয় জনকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছিল। অপর দিকে সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজে তালিকা থাকা জেষ্ট শিক্ষককেই ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব প্রদান কিরা হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের কয়েকটি চিঠিও প্রমাণ করে যে তালিকায় থাকা প্রথম জনকেই ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব প্রদান করতে হবে। যেমন ০৯/০৪/২০২৩ তারিখ মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের এক পত্রে মজিদা ডিগ্রী কলেজ, সদর, কুড়িগ্রাম এর গভর্নিং বডির সভাপতিকে নির্দেশ দিয়েছে যে, জেষ্ঠতম শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব প্রদানের জন্য। অপর দিকে ৮ ডিসেম্বর ২০২০ মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের এক পত্রে গাজীপুর সদরের রোভারপল্লী ডিগ্রী কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতিকে নির্দেশ দেওয়া হয় যে পুর্বে দায়িত্ব প্রাপ্ত শিক্ষককে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে জেষ্ঠ শিক্ষক মোঃ আবু নাসের সরকার কে দায়িত্ব প্রদানের জন্য।

তাছাড়া সম্প্রতি মাধ্যমিক সময়ে গত ১২ জুন ২০২৩ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের এক পত্রে এই সংক্রান্ত জনবল কাঠামো এবং এবং এমপিও নীতিমালা কাঠোর ভাবে প্রতিপালনের নির্দেশনা দেওয়া হয়। এই নীতিমালা পালনে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের অবসর ও কল্যাণ সুবিধা বাতিল এমনকি কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতির পদ শুন্য ঘোষণা করার কথাও বলা হয়েছে।

কলেজের অধিকাংশ শিক্ষকের দাবি জেষ্ঠতা ও নীতিমালা অনুযায়ী কলেজের অধ্যক্ষ নির্বাচন করা হোক। এবং সেই সাথে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দুর্নীতি অনিয়ম ও খামখেয়ালী কর্মকান্ডের অবসান ঘটিয়ে কলেজে সুষ্ঠ পাঠদানের পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হোক।

Loading