লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি: নাটোরের লালপুর উপজেলায় হাইকোর্টের রায় অমান্য করে তিন ফসলী জমি নষ্ট করে পুকুর তৈরি করতে ব্যস্ত মাটিকে খেকোরা।
শস্য শ্যামলায় ভরা নাটোরের এ লালপুর উপজেলায় আজ চারিদিকে পুকুর আর পুকুর।ফসলের পরিবর্তে চলছে অবৈধভাবে পুকুর খনন। কৃষি জমি রক্ষার চেয়ে ধ্বংসের লিলা খেলায় নিমজ্জিত স্থানীয় ভেকু মেশিনের দালালরা।পৃষ্ঠ পোষকতায় রয়েছে স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসন সহ কিছু কুচক্রী রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দরাও।
লালপুর উপজেলায় উর্বর ৩ ফসলী কৃষি জমি কেটে করা হচ্ছে বড় বড় পুকুর। সরকারি আদেশ নির্দেশ অমান্য করেই এই উপজেলা জুড়ে কৃষি জমিতে অবাধে চলছে অবৈধ ভাবে পুকুর খনন। কৃষি জমিতে অবৈধ ভাবে পুকুর খননের প্রতিযোগিতা চললেও পুলিশ-প্রশাসন দেখে না দেখার ভান করছেন।মনে হয় কিছুই তারা শুনছেন না বা দেখছেন না।
অপরদিকে রাত ১০-১১ বাজলেই লালপুর থানার আশেপাশে দেখা যায় ভেকুর দালালদের আনাগোনার মহা উতসব।কোন দালাল কার আগে দেখা করবে ওসি এবং দারোগার সাথে।যে যত তাড়াতাড়ি দেখা করে বের হবে তার ভেকু মেশিন তত তাড়াতাড়ি চালু হবে।এভাবেই প্রতিযোগিতা করে ফসলি জমিতে অবৈধভাবে পুকুর খনন করে সেই খনন কৃত মাটি বিভিন্ন ইটভাটায় চড়া দামে বিক্রি করা হচ্ছে। আর সেই মাটি পরিবহনের জন্য লালপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামীন পাকা রাস্তা ও মহাসড়ক ব্যবহার করা হচ্ছে মাটি বহনের পথ হিসাবে।অতিরিক্ত মাটি ভর্তি ট্রাক্টর চলাচল করার কারণে উপজেলার বিভিন্ন রাস্তায় মাটি পড়ে পাকা রাস্তা কাঁচায় পরিনত হয়ে হালকা বৃষ্টি নামলেই মরন ফাঁদে পরিনত হয়।যার ফলে মানুষ সহ সকল ধরণের যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে।
লালপুর উপজেলার দুড়দুড়িয়া ইউনিয়নের বসন্তপুর বিল,আড়বাব ইউনিয়নের বোয়ালিয়া পাড়া বিল,মুরদহ,ও সালামপুর সহ বিভিন্ন এলাকার সকল শ্রেণী- পেশার মানুষের একটাই অভিযোগ স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে ভেকু মেশিনের দালালরা ম্যানেজ করেই উপজেলা জুড়ে দিন-রাত সমানতালে চালিয়ে যাচ্ছে পুকুর খননের কাজ। অধিকহারে কৃষি জমিতে পুকুর খননের ফলে উপজেলায় ব্যাপক হারে কমেছে কৃষি জমির পরিমাণ সাথে সাথে কৃষি উৎপাদন ও কমেছে অকল্পনীয় হারে।পুকুর খনন রোধে পুলিশ- প্রশাসনের এধরনের নিস্ক্রিয় ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সবস্তরে।
স্থানীয়রা জানান,দীর্ঘদিন ধরেই লালপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পুকুর খনন করছে অসাধু প্রভাবশালী ভেকুর দালালরা।ফসলি জমি খনন করলেও স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনোরূপ ব্যবস্থা না নেওয়ায় খননকারীরাদের দৌরাত্ম্য আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।অপরিকল্পিত ভাবে পুকুর খননের কারণে পানি প্রবাহের পথ বন্ধ হওয়ে যাওয়ার কারণে বিপর্যয়ের হুমকিতে পরিবেশ। কিন্তূ তাতেও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের ঘুম ভাঙ্গাছেনা,কৃষি জমি সহ কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায়।
সরেজমিনে অনুসন্ধানে গিয়ে দেখা যায়,আবাদি জমি ধ্বংস করে অবৈধ ভাবে পুকুর খননের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে খননকারীরা। এ সময় ভেকু মেশিন চলাকালীন সময়ে ভিডিও চিত্র ধারন করে ও ভেকু মেশিনের দালালদের নাম ঠিকানা ও স্পষ্ট লোকেশন উল্লেখ করে স্থানীয় পুলিশ- প্রশাসনকে জানালেও তারা কোন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
এ বিষয়ে ইউএনও, এসিল্যান্ড এবং ওসি এর কাছে অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার বা প্রতিরোধের ব্যবস্থা হচ্ছেনা এবং থানা পুলিশ নিজে এসে ভেকুর দালালদের সাথে আতাত করে এই পুকুর খনন কাজ চলছে বলে ভুক্তভোগী এলাকাবাসীর অভিযোগ।
পরিশেষে লালপুর উপজেলার কৃষি জমি ও কৃষকের স্বার্থ রক্ষায় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ অপরিহার্য। অন্যথায় লালপুর উপজেলার কৃষি জমির অস্তিত্ব সংকট আরও ভয়াবহ