দেখার কেউ নেই..
মির্জাগঞ্জ এলজিইডি প্রকৌশলী আশিকুরের ঘুস-দুর্নীতি!
- আপডেট সময় : ১২:৫৩:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ ২৭৫ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিনিধি: পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী আশিকুর রহমানের বিরুদ্ধে দায়িত্ব ও কর্তব্যে অবহেলাসহ সীমাহীন ঘুস-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে । ঘুস ছাড়া তিনি কোন কাজই করেন না মর্মে প্রচারণা চলছে। মির্জাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের এলজিইডির প্রকৌশলী হওয়ায় সরকারের উন্নয়ন কাজের তদারকি করা তারই দায়িত্ব। তাই ঘুষের অংকটাও একটু বেশি দিতে হয় তাকে। কাজের মান যেমনই হোক ঘুষের পরিমান বাড়িয়ে দিলে বিল পেতে বেগ পেতে হয়না স্থানীয় ঠিকাদারদের এমনি অভিযোগ রয়েছে মির্জাগঞ্জ উপজেলার এলজিইডি’র প্রকৌশলী আশিকুর রহমানের বিরুদ্ধে। গত ০২/০২/২৩ তারিখ, রোজ বৃহস্পতিবার বিকাল ৪ টায় একটি টেলিফোনের সূত্র ধরে মির্জাগঞ্জ উপজেলার আমড়াগাছিয়া ইউনিয়নে ছৈলাবুনিয়া সুইজগেট হতে শ্রীনগর চৌরাস্তা পর্যন্ত ৪ কিঃ রাস্তার কাজ পান মেসার্স এনায়েতুর রহমান নামের পটুয়াখালীর এক ঠিকাদার। এই ঠিকাদার প্রভাবশালী হওয়ায় উপজেলা প্রকৌশলী ঠিকাদারের সাথে আঁতাত করে রাস্তার কাজ শুরু থেকেই অনিয়ম করে আসছেন। সরেজমিনে রাস্তায় গিয়ে দেখা যায় প্রাইমকোট ছাড়া ময়লা আবর্জনার ভিতরে রাস্তার কার্পেটিং’র কাজ করছেন ঠিকাদার এনায়েতুর রহমানের শ্রমিবরা। তদারকির জন্য রাস্তায় নেই এলজিইডির কোন প্রতিনিধি । ৪০ মিলি ডেঞ্চ কার্পেটিং এর কাজে পাথরের নেই কোন গ্রেডেশন। রাস্তায় বিভিন্ন যায়গায় ফেটে ফেটে পাথার আগলা হয়ে পড়ে আছে। নামমাত্র বিটুমিন দিয়ে দায়সারা কার্পেটিং চলছে। এজন্য উপজেলা প্রকৌশলী আশিকুর রহমানকে দিতে হচ্ছে মোটা অংকের ঘুষ।
সুত্রমতে, এফডিডি আইআরপি ফ্ল্যাট প্রকল্পের আওতায় ৩ কোটি টাকার উপরে ২১% লেসে কাজটি প্ন ঠিকাদার। অত:পর তিনি উপজেলা প্রকৌশলীর সাথে দর কসাকসি করে নিম্নমানের মালামাল দিয়ে কাজ সমাপ্ত করবেন বলে অলিখিত চুক্তি করেন। সে কারণেই এতোবড় একটা কাজ দেখভাল করার জন্য উপজেলা প্রকৌশলী আশিকুর রহমান কোন উপ-সহকারী প্রকৌশলীকে কাজ তদারকির দায়িত্ব দেন নি। সুকৌশলে তিনি প্রজেক্টের একজন ওয়ার্ক সহকারিকে দিয়ে এই কাজের তদারকি করান। কাজের শুরু থেকেই নাম মাত্র কাজ করে টাকা ভাগাভাগি করে নেওয়ার পাঁয়তারা চালিয়ে যাচ্ছেন এই প্রকৌশলী ও ঠিকাদার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলজিইডির এক উপ-সহকারী প্রকৌশলী এ প্রতিবেদককে বলেন, উপজেলা প্রকৌশলী তার পছন্দের দু একজনকে নিয়ে পূরো এলজিইডিতে একটা সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। তিনি আরো বলেন, খোঁজ নিয়ে দেখুন সরকারের কোটি কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ মুখ থুবড়ে পড়ে আছে । কাজের কোন প্রগেজ নেই। শুধু ঠিকাদারের থেকে পার্সেন্টেজ আদায়ে ব্যস্ত উপজেলা প্রকৌশলী। তিনি কেবল এখানেই থেমে থাকেননি। ইতি পূর্বে জলিসা খালের উপর একটি গার্ডার ব্রীজে গভীর রাতে ঢালাই দিয়ে এই ঠিকাদার এনায়েতুর রহমান থেকে মোটা অংকের টাকা ঘূষ নিয়ে ছিলেন। যা সে সময় দেশের শীর্ষ স্থানীয় সব জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়েছিল। বেতাগীর খান এন্টার প্রাইজ নামক লাইসেন্সে কাজ করেন এমন একজন এ প্রতিবেদককে জানান, মির্জাগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলীকে তার চাহিদা মোতাবেক টাকা দিলে কাজ না করেও বিল তুলে নেওয়া যায়। তিনি আরো বলেন, এমন একজন দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলীকে কি করে এলজিইডির মতো একটি প্রতিষ্ঠানের উপজেলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তা কারো বোধগম্য নয়। তিনি আরো বলেন, তার টেবিলে কোন ফাইল গেলে তার চাহিদা মোতাবেক ঘুস না দিলে সে ফাইল তার টেবিল থেকে আর বের হয় না। শুনেছি তিনি বরিশালের একটা কোচিং সেন্টারে পড়াতেন। তিনি খুব গরিব ঘরের সস্তান। তাই তার টাকার খুব চাহিদা। পটুয়াখালীর ঠিকাদার মোঃ হেলাল বলেন, আশিক এমনই একজন উপজেলা প্রকৌশলী যিনি কোন সাইড ভিজিটে গেলে দুইশত থেকে পাঁচশত টাকাও তিনি ঘুষ নেন। পটুয়াখালরী মেসার্স কে কে এন্টারপ্রাইজের এ এক প্রতিনিধি এ প্রতিবেদকে জানায়, কয়দিন আগে সুবিদখালী কোর্টের সামনে ৪০০ মিটার একটি রাস্তার কাজ ৪ দিন ধরে আটকে রেখে পরে ১০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে কার্পেটিং করার অনুমতি দেন এই প্রকৌশলী। আর এই ৪ দিনে আমার প্রায় ১ লাখ টাকার বেশি লেবার ও মেশিন ভাড়ার ভর্তুকি দিতে হয়েছে। ঠিকাদারের লাভ হলো না লস হলো তাতে প্রকৌশলী আশিকের কিছু যায় আসে না। আশিককে তার চাহিদা মোতাবেক ঘূষ দিতেই হবে। এমনিতেই মালামালের দাম উর্ধগতি হওয়ার কারনে ঠিকাদার পুঁজি হারিয়ে কাজ শেষে খালি হাতে ঘরে ফিরতে হয়। সেখানে প্রকৌশলী আশিক তার কাঙ্খিত ঘুষের টাকা না পেলে কাজ বুঝে নেন না।
জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী আশিকুর রহমান বলেন, আমি কোন প্রকার ঘুস-দুর্নীতি করি না। ঠিকাদারদের সব অভিযোগ মিথ্যা।