তিন বছরের শিশুসহ ২৬ জনের দাফন

- আপডেট সময় : ০১:৪৮:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ মার্চ ২০১৯ ৭৮ বার পড়া হয়েছে

লুটিয়েপড়া একটি পাখির মতো ছোট দেহটি খোলা কফিনের মাত্র অর্ধেকটা অংশ জুড়ে ছিল। ৩ বছর বয়সী মুকাদ ইব্রাহিমের কাফনে মোড়ানো দেহটি ছিল প্রায় ভারহীন। সোমালিয়ার এই শিশুটির মরদেহ বহন করছিল লম্বা কালো জুব্বাপরা তার পরিবারে দশজন সদস্য।
নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত সর্বকনিষ্ঠ এই শিশুটিকে আজ শুক্রবার দুপুরে নিহত ২৫ জনের সঙ্গে জানাজা করা হয়। এর পর মেমোরিয়াল পার্কে তাদের দাফন করা হয়।
এর আগে আজ শুক্রবার ‘আল-নূর’ মসজিদের পাশের হ্যাগলে পার্কে অনুষ্ঠিত জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। দেশটির রেডিও ও টেলিভিশন সরাসরি সম্প্রচার করে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্নসহ ধর্ম-দল-মত নির্বিশেষে নানা শ্রেণির মানুষ।
ইব্রাহিম ছিল বাদামি চোখের সব সময় হাস্যোজ্জ্বল এক বালক। প্রায় ২০ বছর আগে দেশ থেকে পালিয়ে আসা একটি সোমালিয়া পরিবারে জন্মগ্রহণ করে সে। প্রথমে আল নূর মসজিদে চালানো বন্দুকধারীর গুলিতে বাবার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ইব্রাহিম নিহত হয়।
তিন বছর বয়সী শিশুটি মারা যাওয়ার পর তার ভাই আবদি বলেন, ‘সত্যিই আমরা আল্লাহর কাছাকাছি এবং তার কাছেই ফিরে যাব।’
মসজিদে হামলায় নিহত ২৬ জনকে সমাহিত করতে সময় লাগে দুই ঘণ্টা। এদিকে নিহতদের শোকে গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া মোহাম্মদ এলমিকেও আজ দাফন করা হয়েছে।
পার্কে অনুষ্ঠিত জানাজায় প্রায় ৫ হাজার মুসল্লি অংশ নেন। এর আগে নিউজিল্যান্ডে এমন দৃশ্য দেখা যায়নি। নিহতদের রুহের মাগফিরাত কামনা এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য লাভে দেশজুড়ে পালিত হয় দু’মিনিটের নীরবতা।
যে ২৬ জনের দাফন সম্পন্ন হলো : কামেল মো. কামেল কামেল ডারইউশ, গুলাম হুসাইন, কারাম বিবি, মোহাম্মদ জেসান রেজা, আশরাফ আল-মর্চি রাঘেব, মুকাদ ইব্রাহিম, হুসনা আহমেদ, রামিজ আরিফ ভাই ভোরা, আরিফ মোহাম্মাদালি ভোহরা, আমজাদ আহমেদ, মুসি এ ওয়ালি, মোহাম্মদ সামাদ, মোহাম্মদ আতা ইলাইয়ান, ওসামা আদদান আবুকওয়াইক, মৌনির গুইরজিস সোলিমান, মোহাম্মদ সুহাল শাহিদ, আবদেলফাত্তা কাসেম, আলি মো. আব্দুল্লাহ এলমাদানি, আবদুকাদির এলমি, আহমেদ গামেল এলদিন মো. আবদেল গনি, তালহা নাইম, নাইম রশিদ, হুসাইন আল-ওমারি, মোহাম্মদ ইমরান খান, মোহামেদ শেখ আবদি এলমি, হারুন মাহমুদ।
গত ১৫ মার্চ নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের আল নূর ও লিনউড মসজিদে বন্দুকধারীর হামলায় নিহত হন ৫০ জন। কট্টর শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদী ২৮ বছরের ব্রেনটন টেরেন্ট এ হত্যাযজ্ঞ চালায়। নিহতদের মধ্যে পাকিস্তানের নাগরিক রয়েছেন ৯ জন এবং বাংলাদেশের ৫ জন।