ঢাকা ০৫:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৫ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo ছাড়পত্র ও লাইসেন্স বাণিজ্য করে পরিবেশ অধিদপ্তরের জহিরুল কোটিপতি Logo ছাড়পত্র ও লাইসেন্সের নামে পরিবেশ অধিদপ্তরের আবুল কালামের কোটি টাকার বাণিজ্য Logo বেসরকারি টিভি চ্যানেল এস’ সুজিত চক্রবর্তী গং কর্তৃক সাংবাদিকদের হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদে মানববন্ধন Logo ফ্যাসিস্টের দোসর বিটিভির প্রকৌশলী মনিরুল ইসলামের হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি! পর্ব ১ Logo সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও এতিমদের নিয়ে দূর্বার তারুণ্য ফাউন্ডেশনের কক্সবাজার ভ্রমন Logo দুদকের মামলার মাথায় নিয়েও বহাল কুমেক হাসপাতালের আবুল Logo সংস্কারের বিপরীতে রহস্যজনক বদলী: এক চিঠিতে ৫২ রদবদল ফায়ার সার্ভিসে! Logo গণপূর্তে ফ্যাসিস্ট সরকারের আস্থাভাজন কর্মকর্তাদের দুর্নীতির সিন্ডিকেট সক্রিয়  Logo বাংলাদেশ সাইন ম্যাটেরিয়ালস এন্ড মেশিনারিজ ইমপোর্টার্স এসোসিয়েশন’ সভাপতি খালেদ সাধারণ সম্পাদক মানিক  Logo চৌদ্দগ্রামে এলজি বন্ধুক ও দেশীয় অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী আটক: টর্চার সেলের সন্ধান




ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বিএনপি থেকে পদত্যাগ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:৩১:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০১৯ ১৩৯ বার পড়া হয়েছে

সিলেট প্রতিনিধিঃ ‘গাদ্দার’ রাজনৈতিক দল আখ্যা দিয়ে বিএনপির পদ ও দলের সব ধরনের কার্যক্রম থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয়তাবাদী মহিলা দল সিলেট জেলা শাখার শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ও ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা মহিলা দলের আহ্বায়ক ফেরদৌসী ইকবাল।

সারাদেশে পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি। কিন্তু দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন বিএনপি নেত্রী ফেরদৌসী ইকবাল।

দলীয় নির্দেশ অমান্য করায় দল থেকে বহিষ্কার হলেও নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াননি তিনি। তবে শেষ পর্যন্ত জয়ী কিংবা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়ও আসতে পারেননি ফেরদৌসী ইকবাল। চতুর্থ অবস্থানে থেকে প্রজাপতি প্রতীকে পেয়েছেন চার হাজার ২২৮ ভোট।

এই নির্বাচনে যারা তাকে ভোট দিয়েছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান ফেরদৌসী ইকবাল। একই সঙ্গে বিএনপির ভোটাররা তাকে একটি ভোটও দেননি উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন তিনি।

সেখানে তিনি ‘গাদ্দার’ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে আফসোস করেন। বিএনপির জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সব কার্যক্রম থেকে নিজেকে গুঁটিয়ে নেয়ার ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, বিএনপির সঙ্গে আমার আর কোনো সম্পর্ক নেই।

ফেসবুক স্ট্যাটাসে ভোটারদের কাছে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ফেরদৌসী ইকবাল বলেন, যারা আমাকে ভোট দিয়েছেন, যারা আমাকে ভোট দেননি তাদের সবার কাছে আমি ঋণী এবং কৃতজ্ঞ। এবারের নির্বাচনে আমিসহ যারা বিএনপির প্রার্থী ছিলাম তারা বিএনপি নেতাকর্মীদের একটা ভোটও পাইনি। যে ভোটগুলো পেয়েছি, সেগুলো উপজেলার সাধারণ মানুষ দিয়েছে।

স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, দিন শেষে মনে হয়েছে, আমি ভুল কিংবা গাদ্দার রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত ছিলাম। আমি ভুল পথে আমার শ্রম দিয়েছি। শুধু দলীয় ভোটগুলো পেলেই আমি অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারতাম। কিন্তু তা আর হলো না। কাজেই স্বেচ্ছায় উপজেলা ও জেলার সব রাজনৈতিক পদ থেকে আমি পদত্যাগ করলাম।

তার এই স্ট্যাটাস দেয়ার চার ঘণ্টার মধ্যে ১১৪টি কমেন্ট ও ২০৮টি লাইক পড়েছে। স্থানীয় বিএনপি কর্মী তাজরিয়ান আহমেদ রিয়াজ কমেন্ট করেছেন, ‘আপা অনেক সময় আছে, আরও বড় হতে পারবেন। শুধু কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। আমরা যারা সাধারণ কর্মী বা আপনারা নেতা-নেত্রী আছেন, আপনাদের জন্য এই যুদ্ধ একটি পরীক্ষা মাত্র।’

সজীবুর রহমান সজীব নামের একজন কমেন্ট করেছেন, ‘আমি মহিদপুর এলাকার মানুষ, আমরা আপনাকে ভোট দিয়েছি এই বলে যে আপনি জাতীয়তাবাদী দলের লোক। তাহলে আমরা কি করেছি।’

মহসিন রাজা নামে একজন কমেন্ট করেছেন, ‘ফেরদৌসী আপা, আপনি হয়তো রাগে বা অভিমানে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আপনার অনেক ধারণাই হয়তো ভুল। ৭২ হাজার ভোটের মধ্যে ১০-১২ হাজার ভোটে সবাই পাস করেছেন। তার মানে বিএনপির বড় একটা অংশ ভোট দিতেই কেন্দ্রে যাননি। এছাড়া দল যেহেতু অনুমতি দেয়নি সেহেতু ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অনেকে নির্বাচনী প্রচারণায় নামেননি। তারপরও যারা ভোট দিয়েছেন অবশ্যই আপনাকে ভোট দিয়েছেন, দু-একজন ছাড়া। যার সাক্ষী আমি নিজেই। আপনি মানিককোনা কেন্দ্রের ফলাফল দেখুন। আমাদের আশা এবং বিশ্বাস, দু-একদিন গেলে এসব মন থেকে মুছে ফেলে দেশনেত্রীর মুক্তির মিছিলে আবারও সক্রিয় হবেন আপনি।

দল থেকে পদত্যাগের কারণ জানতে চাইলে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা মহিলা দলের আহ্বায়ক ফেরদৌসী ইকবাল বলেন, দলীয় নির্দেশ অমান্য করে প্রার্থী হওয়ায় আমাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এরপরও আমি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াইনি। আমার বিশ্বাস ছিল দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা আমাকে ভোট দেবেন। কিন্তু সাধারণ মানুষ ছাড়া বিএনপি নেতাকর্মীরা ভোট দেননি। যদি তারা ভোট দিতেন আমি জিতে যেতাম। তাই স্বেচ্ছায় উপজেলা ও জেলার সব রাজনৈতিক পদ থেকে আমি পদত্যাগ করলাম।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বিএনপি থেকে পদত্যাগ

আপডেট সময় : ০৮:৩১:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০১৯

সিলেট প্রতিনিধিঃ ‘গাদ্দার’ রাজনৈতিক দল আখ্যা দিয়ে বিএনপির পদ ও দলের সব ধরনের কার্যক্রম থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয়তাবাদী মহিলা দল সিলেট জেলা শাখার শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ও ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা মহিলা দলের আহ্বায়ক ফেরদৌসী ইকবাল।

সারাদেশে পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি। কিন্তু দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন বিএনপি নেত্রী ফেরদৌসী ইকবাল।

দলীয় নির্দেশ অমান্য করায় দল থেকে বহিষ্কার হলেও নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াননি তিনি। তবে শেষ পর্যন্ত জয়ী কিংবা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়ও আসতে পারেননি ফেরদৌসী ইকবাল। চতুর্থ অবস্থানে থেকে প্রজাপতি প্রতীকে পেয়েছেন চার হাজার ২২৮ ভোট।

এই নির্বাচনে যারা তাকে ভোট দিয়েছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান ফেরদৌসী ইকবাল। একই সঙ্গে বিএনপির ভোটাররা তাকে একটি ভোটও দেননি উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন তিনি।

সেখানে তিনি ‘গাদ্দার’ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে আফসোস করেন। বিএনপির জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সব কার্যক্রম থেকে নিজেকে গুঁটিয়ে নেয়ার ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, বিএনপির সঙ্গে আমার আর কোনো সম্পর্ক নেই।

ফেসবুক স্ট্যাটাসে ভোটারদের কাছে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ফেরদৌসী ইকবাল বলেন, যারা আমাকে ভোট দিয়েছেন, যারা আমাকে ভোট দেননি তাদের সবার কাছে আমি ঋণী এবং কৃতজ্ঞ। এবারের নির্বাচনে আমিসহ যারা বিএনপির প্রার্থী ছিলাম তারা বিএনপি নেতাকর্মীদের একটা ভোটও পাইনি। যে ভোটগুলো পেয়েছি, সেগুলো উপজেলার সাধারণ মানুষ দিয়েছে।

স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, দিন শেষে মনে হয়েছে, আমি ভুল কিংবা গাদ্দার রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত ছিলাম। আমি ভুল পথে আমার শ্রম দিয়েছি। শুধু দলীয় ভোটগুলো পেলেই আমি অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারতাম। কিন্তু তা আর হলো না। কাজেই স্বেচ্ছায় উপজেলা ও জেলার সব রাজনৈতিক পদ থেকে আমি পদত্যাগ করলাম।

তার এই স্ট্যাটাস দেয়ার চার ঘণ্টার মধ্যে ১১৪টি কমেন্ট ও ২০৮টি লাইক পড়েছে। স্থানীয় বিএনপি কর্মী তাজরিয়ান আহমেদ রিয়াজ কমেন্ট করেছেন, ‘আপা অনেক সময় আছে, আরও বড় হতে পারবেন। শুধু কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। আমরা যারা সাধারণ কর্মী বা আপনারা নেতা-নেত্রী আছেন, আপনাদের জন্য এই যুদ্ধ একটি পরীক্ষা মাত্র।’

সজীবুর রহমান সজীব নামের একজন কমেন্ট করেছেন, ‘আমি মহিদপুর এলাকার মানুষ, আমরা আপনাকে ভোট দিয়েছি এই বলে যে আপনি জাতীয়তাবাদী দলের লোক। তাহলে আমরা কি করেছি।’

মহসিন রাজা নামে একজন কমেন্ট করেছেন, ‘ফেরদৌসী আপা, আপনি হয়তো রাগে বা অভিমানে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আপনার অনেক ধারণাই হয়তো ভুল। ৭২ হাজার ভোটের মধ্যে ১০-১২ হাজার ভোটে সবাই পাস করেছেন। তার মানে বিএনপির বড় একটা অংশ ভোট দিতেই কেন্দ্রে যাননি। এছাড়া দল যেহেতু অনুমতি দেয়নি সেহেতু ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অনেকে নির্বাচনী প্রচারণায় নামেননি। তারপরও যারা ভোট দিয়েছেন অবশ্যই আপনাকে ভোট দিয়েছেন, দু-একজন ছাড়া। যার সাক্ষী আমি নিজেই। আপনি মানিককোনা কেন্দ্রের ফলাফল দেখুন। আমাদের আশা এবং বিশ্বাস, দু-একদিন গেলে এসব মন থেকে মুছে ফেলে দেশনেত্রীর মুক্তির মিছিলে আবারও সক্রিয় হবেন আপনি।

দল থেকে পদত্যাগের কারণ জানতে চাইলে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা মহিলা দলের আহ্বায়ক ফেরদৌসী ইকবাল বলেন, দলীয় নির্দেশ অমান্য করে প্রার্থী হওয়ায় আমাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এরপরও আমি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াইনি। আমার বিশ্বাস ছিল দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা আমাকে ভোট দেবেন। কিন্তু সাধারণ মানুষ ছাড়া বিএনপি নেতাকর্মীরা ভোট দেননি। যদি তারা ভোট দিতেন আমি জিতে যেতাম। তাই স্বেচ্ছায় উপজেলা ও জেলার সব রাজনৈতিক পদ থেকে আমি পদত্যাগ করলাম।