পিরোজপুর প্রতিনিধি: পিরোজপুরে যুবলীগ নেতা নাদিম খানকে কুপিয়ে কব্জি বিচ্ছিন্ন করার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আজ শুক্রবার বিকেলে পিরোজপুর সদর থানায় কদমতলা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও আহত নাদিমের ফুফু তামান্ন তমা বাদী হয়ে কদমতলা ইউনিয়নের নবর্নিবাচিত চেয়ারম্যান শেখ শিহাব হোসেনকে প্রধান আসামি করে মোট ৩২ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
মামলার বিষয়টি শুক্রবার সন্ধ্যায় নিশ্চিত করেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আ.জা.মো. মাসুদুজ্জামান। এসময় তিনি বলেন, মামলা দায়ের করা হয়েছে ইতিমধ্যে আমরা অভিযান চালিয়ে মামলার ৬নং আসামি মো. মিজানকে গ্রেপ্তার করেছি। বাকিদেরও দ্রুতই গ্রেপ্তার করা হবে।
মামলার বাদী তামান্ন তমা বলেন, নাদিম আমার ভাইরপো। ওরে অন্যায়ভাবে কিছু রাজনৈতিক নেতার মদদে হামলা করা হয়েছে। আমি নাদিমকে যারা হত্যা করার উদ্দেশ্যে কুপিয়েছে তাদের সবার বিচার দাবি করছি। প্রশাসনের কাছে দাবি কোনো আসামি যেনো ছাড় না পায়।
এদিকে নাদিমের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক, পরিবার জানায় নাদিমের শরীর থেকে ঝড়ে গেছে অনেক রক্ত, ডান হাত কাটাসহ শরীরে রয়েছে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের ক্ষত।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, দ্বিতীয় ধাপে ইউপি নির্বাচন শেষে বিভিন্ন সময় দ্বন্দ্বে জড়ান পিরোজপুর সদর উপজেলার কদমতলা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান হানিফ খান ও বর্তমান চেয়ারম্যান শেখ শিহাব হোসেন। সর্বশেষ গত বুধবার পিরোজপুর শহরে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়াকে কেন্দ্র করে তাদের দুই চেয়ারম্যানের সমর্থকদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। সেই জের ধরেই কদমতলা ইউনিয়নের উত্তর ভৈরমপুর এলাকায় ১৫/২০ জনের একটি দল যুবলীগ কর্মী নাদিম খান ও মাসুদের উপর এলোপাতাড়ি হামলা চালায়। এ সময় তারা কুপিয়ে নাদিমের ডান হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন করে।
অন্যদিকে তাদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মাসুদও আহত হয়। গুরুতর আহত নাদিমকে প্রথমে পিরোজপুর থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে সেখান থেকে আবার ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে স্থানান্তর করেন চিকিৎসকরা জানান পরিবার। এদিকে এ হামলার বিচার দাবি করছেন স্বজন ও এলাকাবাসী।
নেতাকর্মীদের উপর এমন সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে পিরোজপুর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ। সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি তোফাজ্জেল হোসেন স্বপন মল্লিকের দাবি, কিছু রাজনৈতিক নেতার ছত্রছায়ায় সন্ত্রাসীরা এমন কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে। তাদের বিচারের দাবি জানান তিনি।
এদিকে গত ১বছরে ইউপি নির্বাচন নিয়ে সংঘর্ষ হয়েছে অর্ধশত আর হাতের কব্জি হারিয়েছেন তিনজন।