ঢাকা ০৫:৫৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ




রাজধানী রাজারবাগ দরবার শরীফের ৬ অনুসারী অপহরন

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৬:৪০:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৭৩ বার পড়া হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার: রাজধানী রাজারবাগ দরবার শরীফের ৬ অনুসারী অপহরণের ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। কে বা কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তা এখনো জানা যায়নি। তবে আইন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের উদ্ধারে চেষ্টা চালাচ্ছে।

জানা গেছে, রাজারবাগ দরবার শরীফের অনুসারী শাকেরুল কবির (৩৮) ও তার ড্রাইভার শাওন (২৫) ২১শে সেপ্টেম্বর-২০২১ মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা থেকে নারায়নগঞ্জ যাওয়ার পথে অপহরন হন। শাকেরুল কবির অপহরন হওয়ার পরে তার শ্যালক মাহমুদুল হাসান সুমন ২৪সেপ্টেম্বর রাজধানীর শাহজাহানপুর থানায় গিয়ে জিডি করেন। জিডি নং-১১৩৪। ২৬সেপ্টেম্বর উক্ত জিডির অগ্রগতি জানতে থানায় যান মাহমুদুল হাসান সুমন (৩০) ও তার সহযোগী নুরুল গনি ফারুক (৪৩)। রাত সাড়ে ১১টায় তারা থানা থেকে ফিরে আসার পথে থানা গেইটের ৩০ গজের মধ্যে থেকে ঐ দুইজনকেও তুলে নিয়ে যায় অপহরনকারীরা। পরবর্তীতে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ অপহৃতদের কাপড় ও ধস্তাধস্তির আলামত উদ্ধার করে। অপরদিকে শাহজাহানপুর থানাধীন শান্তিবাগ এলাকা থেকে ইহসানুল করিম উজ্জল (৩৫) ও তার সহযোগী জহিরুল ইসলাম (৩৮)কে একদল অপহরনকারী কালো গ্লাসের মাইক্রো বাসে তুলে নিয়ে যায়, যা সিসিটিভির ফুটেজে দৃশ্যমান রয়েছে।
অপহৃত শাকেরুল কবিরের স্ত্রী মুসলিমা সুমী বলেন, “আমার স্বামী ও ভাইকে গুম করার পর বিভিন্ন নম্বর থেকে আমাকে ফোন করে কান্না ও চিৎকারের আওয়াজ শোনানো হচ্ছে। কান্নার শব্দে মনে হচ্ছে, তাদেরকে অমানসিক নির্যাতন করা হচ্ছে। এমন শব্দ শুনে আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছি।”
মাহমুদুল হাসান সুমনের বৃদ্ধ বাবা মুহম্মদ মোস্তফা বলেন, “জিডিকারীকে যদি থানার ৩০ গজের মধ্যেই অপহরন হতে হয়, তবে আমরা কার কাছে নিরাপত্তা চাইবো ?”
গুম হওয়া নুরুল গনি ফারুকের শ্যালক আমিনুল ইসলাম জানান, কারা তাদের অপহরণ করছে তা আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়। আমরা প্রশাসনের কাছেই বিষয়টি জানতে চেয়েছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন সদুত্তর পাই নাই।
২দিন ধরে থানায় দৌড়াদৌড়ি করছি। বিষয়টি নিয়ে কারো তেমন গুরুত্ব দেখছি না। ‘এখন না তখন, তখন না এখন’ বলে থানা থেকে আমাদের ঘুড়াচ্ছে। থানায় বিচার চাইতে গিয়ে মানুষ গুম হয়ে গেলো, আর সেটাকে যদি গুরুত্ব সহকারে না নেয়া হয়, তবে দেশের প্রশাসনের কাছে আমরা কিভাবে আস্থা রাখবো।
অপর গুম হওয়া ইহসানুল করিম উজ্জলের ভাই শামসুল আলম মাসুদ বলেন, আমার ভাই খুব সহজ সরল মানুষ। সিসিটিভি ফুটেজে আপনারা দেখেছেন, কিভাবে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যারা তাকে তুলে নিয়ে গেছে তাদের চেহারাও স্পষ্ট। যে গাড়িতে করে তুলে নিয়েছে সেই গাড়ীর নাম্বার ঢাকা মেট্রো চ-৫৩-৩৭১৮। ৩৬ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আমার ভাইকে উদ্ধার করতে না পারায় আমি হতাশ।
এবিষয়ে জানতে চেয়ে শাহজাহানপুর থানার ওসির মোবাইলে কল দিলে তিনি বলেন, এখন মিটিংয়ে আছি, পরে কথা বলবো।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




রাজধানী রাজারবাগ দরবার শরীফের ৬ অনুসারী অপহরন

আপডেট সময় : ০৬:৪০:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১

স্টাফ রিপোর্টার: রাজধানী রাজারবাগ দরবার শরীফের ৬ অনুসারী অপহরণের ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। কে বা কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তা এখনো জানা যায়নি। তবে আইন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের উদ্ধারে চেষ্টা চালাচ্ছে।

জানা গেছে, রাজারবাগ দরবার শরীফের অনুসারী শাকেরুল কবির (৩৮) ও তার ড্রাইভার শাওন (২৫) ২১শে সেপ্টেম্বর-২০২১ মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা থেকে নারায়নগঞ্জ যাওয়ার পথে অপহরন হন। শাকেরুল কবির অপহরন হওয়ার পরে তার শ্যালক মাহমুদুল হাসান সুমন ২৪সেপ্টেম্বর রাজধানীর শাহজাহানপুর থানায় গিয়ে জিডি করেন। জিডি নং-১১৩৪। ২৬সেপ্টেম্বর উক্ত জিডির অগ্রগতি জানতে থানায় যান মাহমুদুল হাসান সুমন (৩০) ও তার সহযোগী নুরুল গনি ফারুক (৪৩)। রাত সাড়ে ১১টায় তারা থানা থেকে ফিরে আসার পথে থানা গেইটের ৩০ গজের মধ্যে থেকে ঐ দুইজনকেও তুলে নিয়ে যায় অপহরনকারীরা। পরবর্তীতে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ অপহৃতদের কাপড় ও ধস্তাধস্তির আলামত উদ্ধার করে। অপরদিকে শাহজাহানপুর থানাধীন শান্তিবাগ এলাকা থেকে ইহসানুল করিম উজ্জল (৩৫) ও তার সহযোগী জহিরুল ইসলাম (৩৮)কে একদল অপহরনকারী কালো গ্লাসের মাইক্রো বাসে তুলে নিয়ে যায়, যা সিসিটিভির ফুটেজে দৃশ্যমান রয়েছে।
অপহৃত শাকেরুল কবিরের স্ত্রী মুসলিমা সুমী বলেন, “আমার স্বামী ও ভাইকে গুম করার পর বিভিন্ন নম্বর থেকে আমাকে ফোন করে কান্না ও চিৎকারের আওয়াজ শোনানো হচ্ছে। কান্নার শব্দে মনে হচ্ছে, তাদেরকে অমানসিক নির্যাতন করা হচ্ছে। এমন শব্দ শুনে আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছি।”
মাহমুদুল হাসান সুমনের বৃদ্ধ বাবা মুহম্মদ মোস্তফা বলেন, “জিডিকারীকে যদি থানার ৩০ গজের মধ্যেই অপহরন হতে হয়, তবে আমরা কার কাছে নিরাপত্তা চাইবো ?”
গুম হওয়া নুরুল গনি ফারুকের শ্যালক আমিনুল ইসলাম জানান, কারা তাদের অপহরণ করছে তা আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়। আমরা প্রশাসনের কাছেই বিষয়টি জানতে চেয়েছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন সদুত্তর পাই নাই।
২দিন ধরে থানায় দৌড়াদৌড়ি করছি। বিষয়টি নিয়ে কারো তেমন গুরুত্ব দেখছি না। ‘এখন না তখন, তখন না এখন’ বলে থানা থেকে আমাদের ঘুড়াচ্ছে। থানায় বিচার চাইতে গিয়ে মানুষ গুম হয়ে গেলো, আর সেটাকে যদি গুরুত্ব সহকারে না নেয়া হয়, তবে দেশের প্রশাসনের কাছে আমরা কিভাবে আস্থা রাখবো।
অপর গুম হওয়া ইহসানুল করিম উজ্জলের ভাই শামসুল আলম মাসুদ বলেন, আমার ভাই খুব সহজ সরল মানুষ। সিসিটিভি ফুটেজে আপনারা দেখেছেন, কিভাবে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যারা তাকে তুলে নিয়ে গেছে তাদের চেহারাও স্পষ্ট। যে গাড়িতে করে তুলে নিয়েছে সেই গাড়ীর নাম্বার ঢাকা মেট্রো চ-৫৩-৩৭১৮। ৩৬ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আমার ভাইকে উদ্ধার করতে না পারায় আমি হতাশ।
এবিষয়ে জানতে চেয়ে শাহজাহানপুর থানার ওসির মোবাইলে কল দিলে তিনি বলেন, এখন মিটিংয়ে আছি, পরে কথা বলবো।