নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকার কেরানীগঞ্জের মডেল থানার চড়াইল দারুস সালাম মাদ্রাসার রোড এলাকায় একটি বাসায় অসামাজিক কাজে বাধা দিতে গেলে বিটিভির ক্যামেরাপার্সনসহ কয়েকজন সাংবাদিকের ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়। ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে সাংবাদিককে উদ্ধার করেন।
বৃহস্পতিবার (৬ মে) রাতে ঢাকার কেরানীগঞ্জের মডেল থানার চড়াইল দারুস সালাম মাদ্রাসার রোড এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় অসামাজিক কার্যকলাপ চলছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে সংবাদ সংগ্রহ করতে যান বিটিভির ক্যামেরাপার্সন রাশেদুল ইসলাম রাশেদ।তার সাথে ছিলেন আরো কয়েকজন সাংবাদিক। এসময় অসামাজিক কার্যকলাপের মূল হোতা মুক্তার নেতৃত্বে তাদের গুন্ডাবাহিনীরা সাংবাদিক রাশেদের ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়াসহ অতর্কিত হামলা চালায়। এতে সে গুরুতরভাবে আহত হয়। এসময় সাংবাদিক রাশেদ ঘটনাস্থল থেকে পুলিশকে অবহিত করলে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে সেখান থেকে নিয়ে যায়। পরে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তিনি থানায় একটি সাধারণ ডাইরি করেন।
এলাকাবাসীর কাছ থেকে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে মুক্তা এখানে কিছু তরুনি নিয়ে ব্যবসা চালাচ্ছেন।আমরা বাধা দিলে আমাদের উপর তাদের গুন্ডাবাহিনী দিয়ে হামলা চালায়।মুক্তা অসামাজিক ব্যাবসার পাশাপাশি এখানে মাদকের ব্যাবসাও চালিয়ে যাচ্ছেন। তাকে এ কাজে সহায়তা করছেন কিছু প্রভাশালী লোকজন।তারা মুক্তার খদ্দার।এর আগে মুক্তা দক্ষিন কেরানীগঞ্জ থানার হাসনাবাদে অসামাজিক কার্যকলাপ চালাতেন।সেখানে পুলিশ অভিযান চালিয়ে মুক্তাসহ তার বাহিনীকে গ্রেফতার করেন।তার বিরুদ্ধে বর্তমানে মামলা চলছে।প্রভাবশালী মহলের প্রভাব মুক্তা আদালত থেকে জামিন নিয়ে আবারও অসামাজিক কার্যকলাপ করে বেড়াচ্ছেন।
আহত সাংবাদিক রাশেদুল ইসলাম রাশেদ বলেন, স্থানীয় লোকজনের অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে মুক্তা তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে আমাদের উপর হামলা চালায়।তারা আমার ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয় এবং শারীরিকভাবে গুরুতর আঘাত করলে। পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। আমি প্রাথমিক ট্রিটমেন্ট নিয়ে বাসায় চলে যাই। আমি থানায় একটি সাধারণ ডাইরি করেছি।আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক শেখ ফরিদ বলেন, অভিযুক্ত মুক্তা এর আগেও অনৈতিক কাজে পুলিশের কাছে ধরা পড়ে। এ বিষয় নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করা হয় তাই ক্ষিপ্ত হয়ে অতর্কিত হামলা চালায় তার খদ্দের সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে। সঠিক তদন্ত করে দোষীদের বিচারের দাবি।
এলাকার জসিম মন্ডল নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, মুক্তা দীর্ঘদিন যাবত ভাড়া বাসা নিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপ চালাচ্ছেন। তাকে এ বিষয়ে বাধা দিলে প্রভাবশালী লোকজন দিয়ে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। আমরা তার জ্বালায় অতিষ্ঠ।
স্থানীয় পঞ্চায়েত কমিটির সদস্য হাবিব বলেন, মুক্তা দীর্ঘদিন অসামাজিক কার্যকলাপের ব্যবসা করে বিষয়টি আমরা জেনে তাকে একাধিকবার নিষেধ করেছি। কিন্তু কোনভাবে তাকে এ কার্যকলাপ থেকে বিরত করা সম্ভব হচ্ছে না। অজানা কিছু সন্ত্রাসী বাহিনীর দাপটে সে এই কাজ প্রতিনিয়ত করে যাচ্ছে।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ বলেন, এই মুক্ত আগে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার হাসনাবাদ হাউসিং এলাকায় অসামাজিক কার্যকলাপের ব্যবসা করতো। গোপন সংবাদের সূত্র অনুযায়ী গত চার মাস আগে আমরা তাকে ঘটনাস্থল থেকে তিনজন নারী ও একজন পুরুষ সহ আটক করে মামলা দিয়ে কোর্টে চালান করেছি।
কেরানীগঞ্জ মডেল থানা এস আই সাইফুল ইসলাম বলেন, তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে বেশ কয়েকজন সাংবাদিকের উপর হামলা হয় মুঠোফোনে তা জানতে পারি। ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করেছি। তাদের উপর হামলা হয়েছে নীলা ফুলা জখম এর চিহ্ন দেখা গিয়েছে। সরেজমিন তদন্ত করে দেখেছি অভিযুক্ত মুক্তা অনৈতিক কার্যকলাপের সাথে সম্পৃক্ত। মুক্তা স্বীকারোক্তি দিয়েছেন তিনি অনৈতিক ব্যবসা করেন। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কেরানীগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ কাজি মাইনুল ইসলাম বলেন, পুলিশ পাঠিয়ে ঘটনার সত্যতা জানতে পেরেছি। গণমাধ্যমকর্মীদের উপর হামলা করেছেন অসামাজিক কার্যকলাপের জড়িত নারী মুক্তা। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।