ঢাকা ০৭:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ




বেক্সিমকোকে টাকা দেওয়া হচ্ছে, টিকা আনার দায়িত্ব তাদের: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:৪৭:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২১ ১২৬ বার পড়া হয়েছে

অনলাইন ডেস্ক: সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে করোনার কোভিশিল্ড টিকা আনার দায়িত্ব বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের। তাদের টাকা দেওয়া হচ্ছে, টিকা আনতে হবে তাদেরই বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

রবিবার (২৫ এপ্রিল) সংবামাধ্যমকে তিনি এ কথা বলেন।

প্রসঙ্গত, গত নভেম্বরে অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত টিকা কোভিশিল্ডের তিন কোটি ডোজ আনার বিষয়ে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি হয়।

চুক্তি অনুযায়ী ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে বেক্সিমকো ফার্মা বাংলাদেশে এই টিকা সরবরাহ করার কথা। প্রতি মাসে সেরাম থেকে দেশে ৫০ লাখ ডোজ টিকা আসার কথা।

কিন্তু বাংলাদেশ সেই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী টিকা পাচ্ছে না। এ পর্যন্ত ভারত থেকে টিকা এসেছে মোট এক কেটি দুই লাখ ডোজ। ইতোমধ্যে ভারত টিকা রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় দেশে টিকা প্রাপ্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে দেশে টিকার স্টক ফুরিয়ে যাবে।

এদিকে রবিবার (২৪ এপ্রিল) বেক্সিমকো ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান পাপন সাংবাদিকদের বলেছেন, সেরাম টিকা রেডি করে রেখেছে, এখন সরকারকে ‘শক্ত স্টেপ’ নিতে হবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সংবামাধ্যমকে বলেন, ‘এটা ত্রিপক্ষীয় চুক্তি হয়েছিল। এখানে বেক্সিমকো এজেন্ট। এজেন্ট হিসেবে তাদের দায়িত্ব হচ্ছে—তারা ভ্যাকসিন ওখান (সেরাম) থেকে প্রকিউর (কিনে) করে আমাদের হ্যান্ডওভার করবে। তারা এজেন্ট হিসেবে সেরামকে প্রেসার করবে। এই দায়িত্ব তাদের ওপরেও বর্তায়।’

মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তো যখনই কোনও চিঠি লিখি, বেক্সিমকোকেই লিখি। কারণ, বেক্সিমকো এখানে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। তারা সেরামের সঙ্গে যোগাযোগ করে।’

সরাসরি সেরামের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ তেমন কখনও হয়নি মন্তব্য করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘তারপরও আমরা সরকারের পক্ষ থেকে চাপ সৃষ্টি করার জন্য সেরামকে সরাসরি চিঠি দিয়েছি এবং বাংলাদেশে ভারতের রাষ্ট্রদূতকে রেগুলার নক করা হয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও নক করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রীকেও নক করেছেন, যখন তিনি এখানে এসেছিলেন।’

জাহিদ মালেক বলেন, ‘এটাই তো সরকারি চাপ, এর বাইরে আর তো কোনও চাপের বিষয় আমার জানা নেই। আমরা কন্টিনিউয়াস এই চাপটা রাখি আমাদের পক্ষ থেকে।’

তিনি বলেন, ‘বেক্সিমকোর দায়িত্ব টিকা এনে দেওয়া। তাদের দায়িত্ব আছে এবং সেজন্য সে চুক্তিবদ্ধ। সেজন্য দে আর পেইড ফর। টিকা এনে দেওয়ার জন্য তাদের চার্জেজও দেওয়া হচ্ছে।’

এখন একটা সমস্যা হয়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তাকে যৌথভাবে ফেস করছি। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, বেক্সিমকোর দায়িত্ব শেষ হয়ে গেলো।’

‘বেক্সিমকো তার দায়িত্ব পালন করবে আর আমরা আমাদের দায়িত্ব। যেটা আমাদের জন্য বাড়তি দায়িত্ব সেটাও পালন করবো’, বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রীয়ভাবে যতটুকু করার আমরা সেটা করছি। কিন্তু সেরামের সঙ্গে যোগাযোগ তাদের। প্রেসার সৃষ্টি করা—এটাতো বেক্সিমকোর দায়িত্ব হবে।’

উল্লেখ্য, ভারত সরকারের উপহার হিসেবে গত ২১ জানুয়ারি প্রথম দফায় আসে ২০ লাখ ডোজ টিকা। সরকারের অর্থে কেনা টিকার প্রথম চালানে ৫০ লাখ ডোজ আসে গত ২৫ জানুয়ারি। এরপর ফেব্রুয়ারি মাসের ২৩ তারিখ আসে আরও ২০ লাখ ডোজ। সর্বশেষ গত ২৬ মার্চ আসে ১২ লাখ ডোজ। অর্থাৎ, ভারত থেকে কেনা ও উপহার মিলিয়ে এ পর্যন্ত মোট টিকা এসেছে এক কোটি দুই লাখ ডোজ।

দেশে গত সাত ফেব্রুয়ারি থেকে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। গত ৮ এপ্রিল থেকে শুরু হয় টিকার দ্বিতীয় ডোজ। তবে গত ফেব্রুয়ারি মাসে চুক্তির ৩০ লাখ এবং মার্চ মাসের ৫০ লাখ অর্থাৎ চুক্তির ৮০ লাখ টিকা এখনও দেশে আসেনি। এপ্রিলে টিকা আসার সম্ভাবনাও এখন পর্যন্ত নেই

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




বেক্সিমকোকে টাকা দেওয়া হচ্ছে, টিকা আনার দায়িত্ব তাদের: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

আপডেট সময় : ১০:৪৭:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২১

অনলাইন ডেস্ক: সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে করোনার কোভিশিল্ড টিকা আনার দায়িত্ব বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের। তাদের টাকা দেওয়া হচ্ছে, টিকা আনতে হবে তাদেরই বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

রবিবার (২৫ এপ্রিল) সংবামাধ্যমকে তিনি এ কথা বলেন।

প্রসঙ্গত, গত নভেম্বরে অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত টিকা কোভিশিল্ডের তিন কোটি ডোজ আনার বিষয়ে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি হয়।

চুক্তি অনুযায়ী ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে বেক্সিমকো ফার্মা বাংলাদেশে এই টিকা সরবরাহ করার কথা। প্রতি মাসে সেরাম থেকে দেশে ৫০ লাখ ডোজ টিকা আসার কথা।

কিন্তু বাংলাদেশ সেই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী টিকা পাচ্ছে না। এ পর্যন্ত ভারত থেকে টিকা এসেছে মোট এক কেটি দুই লাখ ডোজ। ইতোমধ্যে ভারত টিকা রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় দেশে টিকা প্রাপ্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে দেশে টিকার স্টক ফুরিয়ে যাবে।

এদিকে রবিবার (২৪ এপ্রিল) বেক্সিমকো ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান পাপন সাংবাদিকদের বলেছেন, সেরাম টিকা রেডি করে রেখেছে, এখন সরকারকে ‘শক্ত স্টেপ’ নিতে হবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সংবামাধ্যমকে বলেন, ‘এটা ত্রিপক্ষীয় চুক্তি হয়েছিল। এখানে বেক্সিমকো এজেন্ট। এজেন্ট হিসেবে তাদের দায়িত্ব হচ্ছে—তারা ভ্যাকসিন ওখান (সেরাম) থেকে প্রকিউর (কিনে) করে আমাদের হ্যান্ডওভার করবে। তারা এজেন্ট হিসেবে সেরামকে প্রেসার করবে। এই দায়িত্ব তাদের ওপরেও বর্তায়।’

মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তো যখনই কোনও চিঠি লিখি, বেক্সিমকোকেই লিখি। কারণ, বেক্সিমকো এখানে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। তারা সেরামের সঙ্গে যোগাযোগ করে।’

সরাসরি সেরামের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ তেমন কখনও হয়নি মন্তব্য করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘তারপরও আমরা সরকারের পক্ষ থেকে চাপ সৃষ্টি করার জন্য সেরামকে সরাসরি চিঠি দিয়েছি এবং বাংলাদেশে ভারতের রাষ্ট্রদূতকে রেগুলার নক করা হয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও নক করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রীকেও নক করেছেন, যখন তিনি এখানে এসেছিলেন।’

জাহিদ মালেক বলেন, ‘এটাই তো সরকারি চাপ, এর বাইরে আর তো কোনও চাপের বিষয় আমার জানা নেই। আমরা কন্টিনিউয়াস এই চাপটা রাখি আমাদের পক্ষ থেকে।’

তিনি বলেন, ‘বেক্সিমকোর দায়িত্ব টিকা এনে দেওয়া। তাদের দায়িত্ব আছে এবং সেজন্য সে চুক্তিবদ্ধ। সেজন্য দে আর পেইড ফর। টিকা এনে দেওয়ার জন্য তাদের চার্জেজও দেওয়া হচ্ছে।’

এখন একটা সমস্যা হয়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তাকে যৌথভাবে ফেস করছি। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, বেক্সিমকোর দায়িত্ব শেষ হয়ে গেলো।’

‘বেক্সিমকো তার দায়িত্ব পালন করবে আর আমরা আমাদের দায়িত্ব। যেটা আমাদের জন্য বাড়তি দায়িত্ব সেটাও পালন করবো’, বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রীয়ভাবে যতটুকু করার আমরা সেটা করছি। কিন্তু সেরামের সঙ্গে যোগাযোগ তাদের। প্রেসার সৃষ্টি করা—এটাতো বেক্সিমকোর দায়িত্ব হবে।’

উল্লেখ্য, ভারত সরকারের উপহার হিসেবে গত ২১ জানুয়ারি প্রথম দফায় আসে ২০ লাখ ডোজ টিকা। সরকারের অর্থে কেনা টিকার প্রথম চালানে ৫০ লাখ ডোজ আসে গত ২৫ জানুয়ারি। এরপর ফেব্রুয়ারি মাসের ২৩ তারিখ আসে আরও ২০ লাখ ডোজ। সর্বশেষ গত ২৬ মার্চ আসে ১২ লাখ ডোজ। অর্থাৎ, ভারত থেকে কেনা ও উপহার মিলিয়ে এ পর্যন্ত মোট টিকা এসেছে এক কোটি দুই লাখ ডোজ।

দেশে গত সাত ফেব্রুয়ারি থেকে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। গত ৮ এপ্রিল থেকে শুরু হয় টিকার দ্বিতীয় ডোজ। তবে গত ফেব্রুয়ারি মাসে চুক্তির ৩০ লাখ এবং মার্চ মাসের ৫০ লাখ অর্থাৎ চুক্তির ৮০ লাখ টিকা এখনও দেশে আসেনি। এপ্রিলে টিকা আসার সম্ভাবনাও এখন পর্যন্ত নেই