ব্যবসায়ীর ‘নগদ’ অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে ৩৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ
- আপডেট সময় : ১০:২৫:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ জানুয়ারী ২০২১ ১৩৩ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক; বরিশালের উজিরপুর উপজেলার ধামুরা বন্দর এলাকায় মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবসায়ীর ‘নগদ’ অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে ৩৭ লাখ টাকা আত্মসাতের মামলায় দুই প্রতারককে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) বিকেলে বরিশাল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাদের সোপর্দ করে উজিরপুর থানা পুলিশ। আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
গ্রেফতাররা হলেন-গৌরনদী উপজেলার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এমএস ট্রেডার্সের ‘নগদ’ ডিস্ট্রিবিউটরের ব্যবস্থাপক রফিকুল ইসলাম ও একই উপজেলার সাওড়া গ্রামের বাসিন্দা ফয়সাল আহম্মেদ জয়।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী উজিপুর উপজেলার ধামুরা বন্দর এলাকার মো. রানা খান জানান, উজিপুর উপজেলার ধামুরা বন্দর এলাকার টেম্পোস্ট্যান্ডে এক বছর ধরে একটি দোকান নিয়ে মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবসা করে আসছেন। তিনি ডাক বিভাগের মোবাইলফোনভিত্তিক ডিজিটাল অর্থ আদান-প্রদানের পরিষেবা ‘নগদ’র স্থানীয় ডিলারও। গত ১৯ ডিসেম্বর তিনি গৌরনদীর এমএস ট্রেডার্সের ‘নগদ’ ডিস্ট্রিবিউটরের ব্যবস্থাপক রফিকুল ইসলামের কাছ থেকে ৩৬ লাখ ৮৮ হাজার ৩১৫ টাকা তার অ্যাকাউন্টে নেন। ওইদিন বিকেলে ০১৬১০৪৫০৯৬০ নম্বর থেকে এক অপরিচিত ব্যক্তি তার মোবাইলে একটি ক্ষুদেবার্তা (মেসেজ) দেন। পরে ওই ব্যক্তি ফোন করে বলেন, ভুলে ক্ষুদেবার্তাটি পাঠানো হয়েছে। ক্ষুদেবার্তায় পাঠানো পিন কোডটি তাকে বলতে অনুরোধ করেন। তিনি পিন কোডটি ওই ব্যক্তিকে বলেন। কিছুক্ষণ পর নগদ অ্যাকাউন্টে ঢুকে দেখেন তার সব টাকা ক্যাশ আউট করা হয়েছে।
ব্যবসায়ী রানা খান বলেন, ‘গত ২২ ডিসেম্বর ব্যবস্থাপক রফিকুল ইসলাম খান ফোন করে ওই টাকার হিসাব চান এবং তার সঙ্গে দেখা করতে বলেন। এরপর সেখানে গেলে রফিকুল ইসলাম গৌরনদীর আশোকাঠি তেলের পাম্পে নিয়ে যান। সেখানে নিয়ে তাকে আটকে রেখে টাকা ফেরত চেয়ে মারধর করেন। পরে তার বাবা মো. মানিক খানসহ ধামুরা বন্দরের কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা পরদিন সেখানে গিয়ে তিন লাখ টাকা এবং বাকি টাকা ফেরতের জন্য স্ট্যাম্পে মুচলেকা রেখে ছেড়ে দেন।
এ ঘটনায় গত ৭ জানুয়ারি ব্যবসায়ী রানা খান বাদী হয়ে উজিরপুর মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন।
উজিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল আহসান জানান, ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী রানা খানের ফোনে ক্ষুদেবার্তা পাঠানো ব্যক্তিকে শনাক্তের পর ১০ জানুয়ারি তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই ব্যক্তির নাম ফয়সাল আহম্মেদ জয়। পরে জয়ের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী এর সঙ্গে জড়িত এমএস ট্রেডার্সের নগদের ডিস্ট্রিবিউটরের ব্যবস্থাপক রফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় অন্য কেউ জড়িত কি-না জানতে দুই আসামিকে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।
এদিকে, ব্যবসায়ী মো. রানা খানের টাকা ‘নগদ’ অ্যাকাউন্ট থেকে তুলে নেয়ার ঘটনার বিষয়ে জানতে গৌরনদীর এমএস ট্রেডার্সের মালিক ও ‘নগদ’র ডিস্ট্রিবিউটর মো. সান্টু ভূঁইয়ার মোবাইলে বারবার চেষ্টা করা হলেও ফোন রিসিভ করেননি।