ঢাকা ০৬:৫৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ




কক্সবাজারে স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা মাদ্রাসার সুপার

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০২:৫৬:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ জানুয়ারী ২০২১ ১২৪ বার পড়া হয়েছে

অনলাইন ডেস্ক:

কক্সবাজার শহরের গাড়ির মাঠ এলাকায় সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন হয়রাণির অভিযোগ উঠেছে এক মাদ্রাসার সুপারের বিরুদ্ধে। যৌন হয়রাণির বিষয়টি পুলিশকে মৌখিকভাবে অবগতের পর ঘটনাস্থলে পুলিশ গেলে পালিয়ে যায় মাদ্রাসার সুপার আব্দুল্লাহ আল আমিন।

গত বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) গাড়ির মাঠ এলাকায় সুপার আল আমিনের ভাড়া বাসায় এই ঘটনা ঘটে। আল আমিন খরুলিয়া তালিমুল কোরআন দাখিল মাদ্রাসার সুপার বলে জানা গেছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মাদ্রাসার সুপার আল আমিনের প্রায় ছয়টি ভাড়া বাসা রয়েছে গাড়ির মাঠ এলাকায়। সবক’টি বাসা ভাড়া দিলেও নিজের বিশ্রামের জন্য একটি ঘর খালি রাখা হয়। তবে প্রায় সময় দক্ষিণ খরুলিয়া চেয়ারম্যান পাড়া এলাকায় নিজ বাড়িতে থাকতেন আল আমিন। মাঝে মাঝে গাড়ির মাঠ ভাড়া বাসায় আসতেন। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার বিকালে গাড়ির মাঠ আসেন আল আমিন। সেখানে বিভিন্ন কৌশলে ভাড়াটিয়ার এক সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীকে যৌন হয়রাণির চেষ্টা করেন।

প্রথমে ল্যাপটপের মাধ্যমে যৌন ইঙ্গিত মূলক ছবি ও ভিডিও দেখান কৌশলে। এরপর ওই ছাত্রীকে আদরের নামে চুমু দেন। এরপর কাপড় খোলার চেষ্টা করলে ওই ছাত্রী চিকিৎকার দিয়ে চলে যায়। বাড়ির মালিকের এমন কর্মকান্ডের বিষয়টি পরিবারকে অবগত করেন ভুক্তভোগি। বিষয়টি বাড়ির মালিক আল আমিনের স্ত্রী বরাবরও পৌঁছে তাৎক্ষণিক।

বৃহস্পতিবার রাত ১০ দিকে চট্টগ্রাম থেকে গাড়ির মাঠ এসে পৌঁছে আল আমিনের স্ত্রী। এরপর দুই পরিবারে শুরু হয় কথা কাটাকাটি। তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে ভুক্তভোগি পরিবারটি আশ্রয় হিসেবে কক্সবাজার সদর থানায় মৌখিক অভিযোগ দায়ের করেন। মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে রাত ১২ টার দিকে সদর থানার এসআই আক্তারুজামানসহ এক দল পুলিশ ঘটনাস্থলে যান। পুলিশ ভুক্তভোগি ওই ছাত্রী ও পরিবারের সাথে কথা বলেন। পুলিশ যাওয়ার আগেই পালিয়ে যান আল আমিন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সুপার আল আমিনকে বেশ কয়েকবার মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও ফোন রিসিভ করেনি আল আমিন। এমনকি পরের দিন শুক্রবার বিকালে উভয় পক্ষকে থানায় হাজির হতে বললেও যাননি মাদ্রাসার এই সুপার। ঘটনার পর থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন আল আমিন।

গাড়ির মাঠ এলাকার ভাড়া বাসায় পুলিশ যাওয়ার কথা স্বীকার করলেও যৌন হয়রানির এমন পুরো কান্ড অস্বীকার করে খরুলিয়া তালিমুল কোরআন দাখিল মাদ্রাসার সুপার আব্দুল্লাহ আল আমিন উল্টো ভাড়াটিয়ার উপর দোষ চাপেন। তিনি বলেন, আমার ল্যাপটপ আছে ঠিক; কিন্তু আপনি যা বলছেন তা ঠিক নয়। আমি পালিয়ে বেড়াচ্ছি না। কক্সবাজারেই আছি। তাছাড়া থানায় শুক্রবার বিকালে বৈঠকের কথা কেউ বলেনি আমাকে।

এবিষয়ে জানতে কক্সবাজার জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি ও খরুলিয়া তালিমুল কোরআন দাখিল মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি রহিম উদ্দিন মুঠোফোনে সাংবাদিক পরিচয় পাওয়া পর সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। পরে কল দেওয়া হলেও রিসিভ করেননি।

এবিষয়ে কক্সবাজার সদর থানার এসআই আক্তারুজামান বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই ছাত্রী এবং পরিবারের কাছ থেকে পুরো বিষয়টি শুনেছি। তবে এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি। যদি কেউ লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে; সে অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




কক্সবাজারে স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা মাদ্রাসার সুপার

আপডেট সময় : ০২:৫৬:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ জানুয়ারী ২০২১

অনলাইন ডেস্ক:

কক্সবাজার শহরের গাড়ির মাঠ এলাকায় সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন হয়রাণির অভিযোগ উঠেছে এক মাদ্রাসার সুপারের বিরুদ্ধে। যৌন হয়রাণির বিষয়টি পুলিশকে মৌখিকভাবে অবগতের পর ঘটনাস্থলে পুলিশ গেলে পালিয়ে যায় মাদ্রাসার সুপার আব্দুল্লাহ আল আমিন।

গত বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) গাড়ির মাঠ এলাকায় সুপার আল আমিনের ভাড়া বাসায় এই ঘটনা ঘটে। আল আমিন খরুলিয়া তালিমুল কোরআন দাখিল মাদ্রাসার সুপার বলে জানা গেছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মাদ্রাসার সুপার আল আমিনের প্রায় ছয়টি ভাড়া বাসা রয়েছে গাড়ির মাঠ এলাকায়। সবক’টি বাসা ভাড়া দিলেও নিজের বিশ্রামের জন্য একটি ঘর খালি রাখা হয়। তবে প্রায় সময় দক্ষিণ খরুলিয়া চেয়ারম্যান পাড়া এলাকায় নিজ বাড়িতে থাকতেন আল আমিন। মাঝে মাঝে গাড়ির মাঠ ভাড়া বাসায় আসতেন। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার বিকালে গাড়ির মাঠ আসেন আল আমিন। সেখানে বিভিন্ন কৌশলে ভাড়াটিয়ার এক সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীকে যৌন হয়রাণির চেষ্টা করেন।

প্রথমে ল্যাপটপের মাধ্যমে যৌন ইঙ্গিত মূলক ছবি ও ভিডিও দেখান কৌশলে। এরপর ওই ছাত্রীকে আদরের নামে চুমু দেন। এরপর কাপড় খোলার চেষ্টা করলে ওই ছাত্রী চিকিৎকার দিয়ে চলে যায়। বাড়ির মালিকের এমন কর্মকান্ডের বিষয়টি পরিবারকে অবগত করেন ভুক্তভোগি। বিষয়টি বাড়ির মালিক আল আমিনের স্ত্রী বরাবরও পৌঁছে তাৎক্ষণিক।

বৃহস্পতিবার রাত ১০ দিকে চট্টগ্রাম থেকে গাড়ির মাঠ এসে পৌঁছে আল আমিনের স্ত্রী। এরপর দুই পরিবারে শুরু হয় কথা কাটাকাটি। তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে ভুক্তভোগি পরিবারটি আশ্রয় হিসেবে কক্সবাজার সদর থানায় মৌখিক অভিযোগ দায়ের করেন। মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে রাত ১২ টার দিকে সদর থানার এসআই আক্তারুজামানসহ এক দল পুলিশ ঘটনাস্থলে যান। পুলিশ ভুক্তভোগি ওই ছাত্রী ও পরিবারের সাথে কথা বলেন। পুলিশ যাওয়ার আগেই পালিয়ে যান আল আমিন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সুপার আল আমিনকে বেশ কয়েকবার মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও ফোন রিসিভ করেনি আল আমিন। এমনকি পরের দিন শুক্রবার বিকালে উভয় পক্ষকে থানায় হাজির হতে বললেও যাননি মাদ্রাসার এই সুপার। ঘটনার পর থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন আল আমিন।

গাড়ির মাঠ এলাকার ভাড়া বাসায় পুলিশ যাওয়ার কথা স্বীকার করলেও যৌন হয়রানির এমন পুরো কান্ড অস্বীকার করে খরুলিয়া তালিমুল কোরআন দাখিল মাদ্রাসার সুপার আব্দুল্লাহ আল আমিন উল্টো ভাড়াটিয়ার উপর দোষ চাপেন। তিনি বলেন, আমার ল্যাপটপ আছে ঠিক; কিন্তু আপনি যা বলছেন তা ঠিক নয়। আমি পালিয়ে বেড়াচ্ছি না। কক্সবাজারেই আছি। তাছাড়া থানায় শুক্রবার বিকালে বৈঠকের কথা কেউ বলেনি আমাকে।

এবিষয়ে জানতে কক্সবাজার জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি ও খরুলিয়া তালিমুল কোরআন দাখিল মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি রহিম উদ্দিন মুঠোফোনে সাংবাদিক পরিচয় পাওয়া পর সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। পরে কল দেওয়া হলেও রিসিভ করেননি।

এবিষয়ে কক্সবাজার সদর থানার এসআই আক্তারুজামান বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই ছাত্রী এবং পরিবারের কাছ থেকে পুরো বিষয়টি শুনেছি। তবে এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি। যদি কেউ লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে; সে অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।