ঢাকা ১১:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ




রং বদলে নতুন খোলসে জামায়াত ইসলাম

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:২০:১০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৮ জানুয়ারী ২০২১ ১২৬ বার পড়া হয়েছে

একদিকে, রং বদলে নতুন খোলসে আর অন্যদিকে, কৌশলে প্রতিপক্ষের ছাতার তলায় আশ্রয় নিয়ে টিকে থাকার চেষ্টা করছে, জামায়াত ইসলামী। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, জামায়াতের এই কৌশল নতুন নয়।

প্রতিকূল পরিস্থিতিতে টিকে থাকতে, স্যোশাল মিডিয়াকেও বেছে নিয়েছে, মৌলবাদীদের আইটি উইং। তবে, বিশ্লেষকদের শঙ্কা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে ভিড়ে যাওয়া স্বাধীনতাবিরোধীরা, সুযোগ পেলেই ছোলব দেবে।

জামায়াতের রাজনীতি বুঝতে হলে, ইতিহাসের চোখে তাকাতে হবে। মহান মুক্তিযুদ্ধে, ন্যক্কারজনক ভূমিকার পর নিষিদ্ধ হয় জামায়াত ইসলামী। ১৯৭৫ সালে, জাতিক জনককে, স্বপরিবারে হত্যাকান্ডের পর নানা কৌশলে আবার রাজনীতির মাঠে আসতে শুরু করে তারা। এরপর, প্রথম আত্মপ্রকাশ জামায়াতে ইসলাহি নামে। তার কিছুদিন পর নতুন নামকরণ ইসলামিক ডেমোক্রেটিক লীগ। সবশেষ ৮০’র দশকে জামায়াত ইসলামী বাংলাদেশ নামে আবারো স্বরূপে আত্মপ্রকাশ।

বিশ্লেষকরা বলছেন, আবারো একই কৌশলে জামায়াতের রাজনীতি। ব্যাখ্যায় তারা বলছেন, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে চূড়ান্তভাবে নিবন্ধন হারায় জামায়াত ইসলামী। তার একবছর পরে, ২৭ এপ্রিল ২০১৯ সালে তাদের ভাবধারায় জন-আকাঙ্খার বাংলাদেশ নামে নতুন দলের আত্মপ্রকাশ। আর, ০২ মে ২০২০ সালে আবার নতুন করে, আমার বাংলাদেশ পার্টি নামে রাজনীতির মাঠে। অপেক্ষা, নতুন সুসময়ের।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ বলছেন, জামায়াতের এই খোলস পাল্টানো নতুন কিছু নয়। এর মানে এই নয় যে তারা তাদের মূল লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য থেকে সরে গেছে। জামায়াত যে নামই ধারণ করুক না কেন তারা এক ও অভিন্ন তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যও এক।

জামায়াতের সক্রিয় ছাত্র সংগঠন ছাত্রশিবির এবং নানা পেশাজীবী সংগঠনগুলোর এখন আর দৃশ্যমান কর্মকান্ড নেই। রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে, নতুন কৌশলে তারা ছড়িয়ে আছে প্রায় সবখানে।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী শিকদার বলছেন, মিশরের ব্রাদার হুডের মতো কৌশল নিয়ে সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ার চেষ্টা করছে। যত পেশার ক্ষেত্র আছে সমস্ত ক্ষেত্রেই তারা ছড়িয়ে পড়ছে।

অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ আরও জানান, ছাত্র শিবির এখন আর দৃশ্যমান নয়। তবে তারা বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন বা বিভিন্ন নামে সব জায়গায় ক্ষমতা পদর্শনের চেষ্টা করবে।

দীর্ঘমেয়াদী রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে, ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন সংগঠনে এরই মধ্যে অনুপ্রবেশ করে, শক্তিশালী হবার চেষ্টা করছে, তারা। এটাই বড় শঙ্কার, বলছেন, বিশেষজ্ঞরা।

কৌশলের অংশ হিসেবে, জামায়াতী আদর্শের সমর্থকরা, অর্থনীতি আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ন্ত্রণে নেয়ার চেষ্টা শুরু করে বহু আগে থেকে। শক্তিশালী রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম তৈরির অংশ হিসেবে, এগুলোকে চরম সক্রিয়ভাবে ব্যবহার করছে তারা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




রং বদলে নতুন খোলসে জামায়াত ইসলাম

আপডেট সময় : ১০:২০:১০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৮ জানুয়ারী ২০২১

একদিকে, রং বদলে নতুন খোলসে আর অন্যদিকে, কৌশলে প্রতিপক্ষের ছাতার তলায় আশ্রয় নিয়ে টিকে থাকার চেষ্টা করছে, জামায়াত ইসলামী। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, জামায়াতের এই কৌশল নতুন নয়।

প্রতিকূল পরিস্থিতিতে টিকে থাকতে, স্যোশাল মিডিয়াকেও বেছে নিয়েছে, মৌলবাদীদের আইটি উইং। তবে, বিশ্লেষকদের শঙ্কা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে ভিড়ে যাওয়া স্বাধীনতাবিরোধীরা, সুযোগ পেলেই ছোলব দেবে।

জামায়াতের রাজনীতি বুঝতে হলে, ইতিহাসের চোখে তাকাতে হবে। মহান মুক্তিযুদ্ধে, ন্যক্কারজনক ভূমিকার পর নিষিদ্ধ হয় জামায়াত ইসলামী। ১৯৭৫ সালে, জাতিক জনককে, স্বপরিবারে হত্যাকান্ডের পর নানা কৌশলে আবার রাজনীতির মাঠে আসতে শুরু করে তারা। এরপর, প্রথম আত্মপ্রকাশ জামায়াতে ইসলাহি নামে। তার কিছুদিন পর নতুন নামকরণ ইসলামিক ডেমোক্রেটিক লীগ। সবশেষ ৮০’র দশকে জামায়াত ইসলামী বাংলাদেশ নামে আবারো স্বরূপে আত্মপ্রকাশ।

বিশ্লেষকরা বলছেন, আবারো একই কৌশলে জামায়াতের রাজনীতি। ব্যাখ্যায় তারা বলছেন, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে চূড়ান্তভাবে নিবন্ধন হারায় জামায়াত ইসলামী। তার একবছর পরে, ২৭ এপ্রিল ২০১৯ সালে তাদের ভাবধারায় জন-আকাঙ্খার বাংলাদেশ নামে নতুন দলের আত্মপ্রকাশ। আর, ০২ মে ২০২০ সালে আবার নতুন করে, আমার বাংলাদেশ পার্টি নামে রাজনীতির মাঠে। অপেক্ষা, নতুন সুসময়ের।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ বলছেন, জামায়াতের এই খোলস পাল্টানো নতুন কিছু নয়। এর মানে এই নয় যে তারা তাদের মূল লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য থেকে সরে গেছে। জামায়াত যে নামই ধারণ করুক না কেন তারা এক ও অভিন্ন তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যও এক।

জামায়াতের সক্রিয় ছাত্র সংগঠন ছাত্রশিবির এবং নানা পেশাজীবী সংগঠনগুলোর এখন আর দৃশ্যমান কর্মকান্ড নেই। রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে, নতুন কৌশলে তারা ছড়িয়ে আছে প্রায় সবখানে।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী শিকদার বলছেন, মিশরের ব্রাদার হুডের মতো কৌশল নিয়ে সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ার চেষ্টা করছে। যত পেশার ক্ষেত্র আছে সমস্ত ক্ষেত্রেই তারা ছড়িয়ে পড়ছে।

অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ আরও জানান, ছাত্র শিবির এখন আর দৃশ্যমান নয়। তবে তারা বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন বা বিভিন্ন নামে সব জায়গায় ক্ষমতা পদর্শনের চেষ্টা করবে।

দীর্ঘমেয়াদী রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে, ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন সংগঠনে এরই মধ্যে অনুপ্রবেশ করে, শক্তিশালী হবার চেষ্টা করছে, তারা। এটাই বড় শঙ্কার, বলছেন, বিশেষজ্ঞরা।

কৌশলের অংশ হিসেবে, জামায়াতী আদর্শের সমর্থকরা, অর্থনীতি আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ন্ত্রণে নেয়ার চেষ্টা শুরু করে বহু আগে থেকে। শক্তিশালী রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম তৈরির অংশ হিসেবে, এগুলোকে চরম সক্রিয়ভাবে ব্যবহার করছে তারা।