সন্ধ্যা নামলেই মদ বিক্রি হয় বালতিতে করে
![](https://sokalersongbad.com/wp-content/themes/newspaper-pro/assets/images/reporter.jpg)
- আপডেট সময় : ০৯:৫২:৪২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২০ ৮৪ বার পড়া হয়েছে
![](https://sokalersongbad.com/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
জেলা প্রতিনিধি
হবিগঞ্জের হাওরবেষ্টিত আজমিরীগঞ্জবাসীর কাছে দেশীয় মদ নিত্যসঙ্গী। সন্ধ্যা হলেই এখানে হাড়ি, বালতিতে ফেরি করে চলে এসব মদ বিক্রি। শুধু গ্রামাঞ্চল নয়, এখানে উপজেলা সদরেও এসব মদ বিক্রি হয় অবাধে। এটি ওই উপজেলাবাসীর কাছে দীর্ঘদিনের চিত্র।
বিভিন্ন সময় প্রশাসন অভিযান চালিয়ে এসব মদ কারবারিদের গ্রেফতার করলেও তাতে তেমন কোনো ফল মেলেনি। শুধু এ উপজেলায়ই নয়, এসব মদ আসছে পার্শ্ববর্তী সুনামগঞ্জ জেলার শাল্লা এবং কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলা থেকে। বর্ষায় নৌকা এবং শুষ্ক মৌসুমে মোটরসাইকেলে করে তা হোম ডেলিভারিও দেন ব্যবসায়ীরা।
জেলা প্রশাসনের মিডিয়া সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাঈদ মোহাম্মদ ইব্রাহিম জানান, চোলাই মদ তৈরির সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মতিউর রহমান খানের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে রোববার উপজেলার শিবপাশা ইউনিয়নের পশ্চিমভাগ মুচিবাড়ি থেকে ২ নারীকে গ্রেফতার করা হয়। পরে ওই গ্রামের মৃত মুকদেবের মেয়ে সৌমিতা রবিদাস (৫০) ও মৃত বছন রবিদাসের মেয়ে লিলিমা রবিদাসকে (২১) মাদক আইনে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
আজমিরীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মতিউর রহমান খান জানান, এখানে দীর্ঘদিন ধরেই চোলাই মদ তৈরি ও বিক্রি হচ্ছে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে চোলাই মদ তৈরির কারখানা আবিষ্কার করা হয়। একইসঙ্গে মদ তৈরির সঙ্গে জড়িতদের সাজা দেয়া হয়েছে। মদ তৈরির কারখানাটিও ধ্বংস করা হয়েছে।
আজমিরীগঞ্জের সাংবাদিক বাদল ব্যানার্জ্যি বলেন, ফোন দিলেই নৌকা বোঝাই করে মদ নিয়ে আসেন মাদক কারবারিরা। অনেক সময় দেশি মদের সঙ্গে বিদেশি মদ ও ইয়াবাও হোম ডেলিভারি দেয়া হয়। বছরের পর বছর ধরে তা চলে আসছে।
সন্ধ্যা হলেই এখানে চোলাই মদের অবাধ বেচাকেনা চলে। রাস্তায় রাস্তায় মদ্যপ মানুষরা একচ্ছত্র আধিপত্য খাটায়। প্রশাসনের তরফ থেকে প্রায়ই অভিযান চালালেও তা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। আর মাদকের অবাধ বিকিকিনির কারণে এখানে চুরি ছিনতাইয়ের মতো ঘটনাও নিয়মিত ঘটছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, স্থানীয় এসব চক্রের সঙ্গে জড়িত সুনামগঞ্জের দিরাই ও শাল্লা উপজেলার কিছু প্রভাবশালী চক্র। বর্ষায় কুশিয়ারা নদীতে চলাচল করা লঞ্চের মাধ্যমেও মাদক সরবরাহ হয়। কিশোরগঞ্জের ভৈরব থেকে হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার মারকুলি বাজার পর্যন্ত মাদক পাচারের নিরাপদ রুট এ কুশিয়ারা নদী।
আজমিরীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, উপজেলার শিবপাশা, শৌলড়ি, কাকাইলছেও, বদলপুর, পাহাড়পুরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে এসব দেশি মদ তৈরি করা হয়। বাড়ির নারীরা এসব মদ তৈরি করেন। সরবরাহের কাজ করেন পুরুষরা।
বদলপুর বাজারের এক ব্যবসায়ীর অভিযোগ, মদ ও মাদকের অবাধ বিক্রির বিষয়টি পুলিশের জানা থাকলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না। হাওরাঞ্চলের দুর্বল যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে অভিযানের জন্য পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই মাদক কারবারিরা পালিয়ে যায়। বদলপুর এলাকায় একটি পুলিশফাঁড়ি হলে মাদক বেচাকেনা কমে যাবে বলে মনে করেন তিনি।