নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
নেত্রকোনায় এক কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় করা মামলায় বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৫ আসামিকেই খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। আসামিরা হলেন- জেলার পুর্বধলা উপজেলার কালডোয়ার প্রামের মোকসেদ আলীর ছেলে শামীম, মন্তোষ রংদির ছেলে ভিকন ও টিকন, মৃত নরেন্দ্র শ্যামার ছেলে তাপস, বুধি গ্রামের ইউনুছ আলীর ছেলে রূপ মিয়া।
বিচারপতি এসএম এমদাদুল হক ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তী সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও জেল আপিলের শুনানি শেষে এই রায় দেন। আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী একেএম ফজলুল হক খান ফরিদ, এএম মাহবুব উদ্দিন, বজলুল কবির, আফিল উদ্দিন, সাকিব মাহবুব ও সাইফুর রহমান রাহি এবং রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী এসএম শফিকুল ইসলাম। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মোজাম্মেল হক।
রায়ের পর একেএম ফজলুল হক খান ফরিদ সাংবাদিকদের বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে। এ জন্য রায়ে আসামিদের খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। তবে রাষ্ট্রপক্ষের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মোজাম্মেল হক বলেন, 'এ রায়ের বিষয়ে আপিল করার বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসকে অবহিত করা হবে।'
মামলার বিবরণে জানা যায়, প্রায় ১৮ বছর আগে নেত্রকোনা জেলার সদর উপজেলার বাহাদুর গ্রামের এক কিশোরী ২০০২ সালের ২০ জুলাই মা ও বোন জামাইয়ের সঙ্গে পুর্বধলা উপজেলার সাত্যাটিতে আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়ানোর উদ্দেশে রওনা হন। পথে পুর্বধলার কুমারকালী ব্রিজে পৌঁছালে আসামিরা রিকশার গতিরোধ করে ভিকটিমকে পার্শ্ববর্তী নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। এ সময় মা ও বোন জামাইকে হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যেতে বাধ্য করা হয়। পরে ওই কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে আসামিরা। এ ঘটনায় পরে কিশোরী মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় ২০১৫ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ৫ জনকে মৃত্যদণ্ডাদেশ দিয়ে রায় ঘোষণা করেন নেত্রকোনার বিচারিক আদালত। এরপর ওই মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আপিল এবং ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয়। এরই ধারাবাহিকতায় উভয়পক্ষের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার ৫ আসামিকেই খালাস দিয়ে রায় দেন হাইকোর্ট।