একাধিক ব্যক্তির ধর্ষণে স্কুলছাত্রীর পুত্রসন্তান প্রসব, ডিএনএ টেস্টে পিতৃপরিচয়
- আপডেট সময় : ০৬:২৫:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২০ ১০০ বার পড়া হয়েছে
অনলাইন ডেস্ক:
বগুড়ার ধুনট উপজেলায় একাধিক ব্যক্তির ধর্ষণের শিকার হয়ে স্কুলছাত্রীর জন্ম দেওয়া সন্তানের পিতৃপরিচয় তৃতীয় দফায় ডিএনএ (ডিঅক্সিরাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড) পরীক্ষায় শনাক্ত করা হয়েছে। ডিএএন পরীক্ষার সনদ অনুযায়ী রাকিব হোসেন (২৮) নামে এক পরিবহন শ্রমিক স্কুলছাত্রীর সন্তারের বাবা। রাকিব হোসেন উপজেলার ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের আবু তালেবের ছেলে।
শনিবার (১২ ডিসেম্বর) ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রীর বাবার দায়ের করা মামলাটি প্রায় দুই বছর ধরে তদন্ত শেষে বগুড়া আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করা হয়েছে। মামলায় রাকিব হোসেন ও একই এলাকার অফফের আলীর ছেলে বকুল হোসেনেকে (২৩) অভিযুক্ত করা হয়েছে। ডিএনএন টেস্ট ও তদন্তে দোষী সাব্যস্ত না হওয়ায় এ মামলা থেকে স্কুলছাত্রীর নানা রশিদ মন্ডলকে অব্যাহিত দেওয়া হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ধর্ষণে জন্ম নেওয়া সন্তানের মা স্কুলছাত্রী উপজেলার ছোট চিকাশি-মোহনপুর গ্রামের বাসিন্দা। একই এলাকার কৈয়াগাড়ি গ্রামে নানা রশিদ মন্ডলের বাড়ি থেকে স্থানীয় বালিকা বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণিতে লেখাপড়া করতো। পার্শ্ববর্তী রঘুনাথপুর গ্রামের অফফের আলীর ছেলে বকুল হোসেনের (২৩) সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
২০১৮ সালের ১৫ এপ্রিল বিকেলে বকুল মেয়েটির ঘরে ঢুকে ধর্ষণের সময় ধরে ফেলে নানা। ঘটনাটি প্রকাশ করার ভয় দেখিয়ে একই সময় নানা রশিদ মন্ডলও নাতনিকে ধর্ষণ করেন। ধর্ষণে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হলে তার বাবা বাদী হয়ে ২০১৮ সালের ৩ অক্টোবর বগুড়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় মেয়েটির নানা রশিদ মন্ডল ও তার নাতি বকুল হোসেনকে আসামি করা হয়। এ অবস্থায় ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রী ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি পুত্রসন্তানের জন্ম দেয়।
এদিকে আদালতের নির্দেশে থানা পুলিশ সন্তানসহ স্কুলছাত্রীকে রাজশাহী শিশু ও কিশোরী হেফাজতিদের নিরাপদ আবাসন কেন্দ্রে (সেফহোম) রাখেন। এ অবস্থায় ২০১৯ সালের ২৪ জানুয়ারী রশিদ মন্ডল ও বকুল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে বগুড়া কারাগারে পাঠানো হয়। এছাড়া নবজাতকের জন্মদাতার পরিচয় সনাক্ত করতে রশিদ ও বকুলের ডিএনএ পরীক্ষা করানো হয়। কিন্ত তাদের ডিএনএ পরীক্ষায় সন্তানের জন্মদাতার পরিচয় মেলেনি।
পরবর্তীতে আদালতে হাজির করা হলে স্কুলছাত্রী পুনরায় রাকিব হোসেনের নাম প্রকাশ করেন। গত ৭ আগস্ট নওগাঁ শহরের বাসষ্ট্যান্ড এলাকা থেকে রাকিববে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আদালতের আদেশে ৩ সেপ্টেম্বর ওই স্কুলছাত্রী ও তার পুত্রসন্তান এবং রাকিবকে ঢাকা সিআইডির সদর দপ্তরে ডিএনএ পরীক্ষা করানো হয়। সেখানে পরীক্ষায় সন্তানের জন্মদাতার পরিচয় মিলেছে। রাকিব প্রেমের ফাঁদে ফেলে স্কুলছাত্রীর সাথে একাধিক বার শারীরিক সম্পর্ক করে। মামলায় অভিযুক্ত আসামী রাকিব ও বকুল বগুড়া কারাগারে আটক রয়েছে।