৩ হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যু ২ শিশুর লাশ নিয়ে হাইকোর্টে হতভাগ্য পিতা!
- আপডেট সময় : ০৬:৫৮:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ নভেম্বর ২০২০ ১৬৫ বার পড়া হয়েছে
স্টাফ রিপোর্টার: তিন হাসপাতালে ঘুরে যমজ নবজাতক মৃত্যুর ঘটনায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা শিশু হাসপাতাল ও ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল, মুগদা কর্তৃপক্ষকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। গতকাল সকালে মৃত্যুর পর যমজ নবজাতকের বাবা সুপ্রিম কোর্টের এমএলএসএস মো. আবুল কালাম আজাদ আদালত চত্বরে লাশ নিয়ে আসেন। এরপর বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ এ আদেশ দেন।
রুলে দুই নবজাতককে হাসপাতালে ভর্তি করতে কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। এ ছাড়া, হাইকোর্ট তিন হাসপাতালের পরিচালকের কাছে কেন ওই দুই শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়নি, তা আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জানাতে বলেছেন। হাসপাতাল তিনটি হলো, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল, ঢাকা শিশু হাসপাতাল এবং ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল মুগদা।
সদ্য জন্ম নেয়া অসুস্থ জমজ সন্তানকে চিকিৎসার জন্য তিনটি হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু কোনো হাসপাতাল চিকিৎসা দেয়নি। দুপুরে দুই জমজ মারা যায়। পরে দুই নবজাতকের লাশ নিয়ে হাইকোর্টে যান তিনি।
এরপর হাইকোর্ট বিষয়টি নজরে নেন। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক রুল জারির বিষয় নিশ্চিত করে বলেন, তিনটি হাসপাতালের পরিচালকের ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে রুলে।
তিনি বলেন, গতকাল সকালে সুপ্রিম কোর্টের এমএলএসএস মো. আবুল কালাম আজাদের স্ত্রী সায়েরা খাতুন অসুস্থবোধ করলে মুগদা হাসপাতালে নেয়ার পথে সিএনজিচালিত অটোরিকশার মধ্যে দু’টি বাচ্চা প্রসব করেন। এ সময় তারা প্রসূতিকে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল, মুগদায় ভর্তি করেন। সেখানে এ বিষয়ে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। তারা নবজাতকদের শ্যামলীতে ঢাকা শিশু হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। পরে দুই নবজাতককে এম্বুলেন্সে করে শিশু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বলা হয় তাদের আইসিইউ খালি নেই। নরমাল বেডে ভর্তি করতে হবে। এ জন্য দিনে প্রতি বাচ্চার জন্য ৫ হাজার করে টাকা লাগবে। এ সময় আবুল কালাম আজাদ হাইকোর্টের এক বিচারপতির সঙ্গে এ বিষয়ে আলাপ করেন। বিচারপতি তার নবজাতকদের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন এবং পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। পরে তিনি বিএসএমএমইউ হাসপাতালে শিশুদের নিয়ে আসেন এবং পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু পরিচালকের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা তাকে জানান পরিচালক মিটিংয়ে আছেন। পরে জানান পরিচালক বাসায় চলে গেছেন। এরপর পরিচালকের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা একজন চিকিৎসককে দিয়ে এম্বুলেন্সে নবজাতকদের দেখান। তখন চিকিৎসক বলেন, জমজ নবজাতকরা আর বেঁচে নেই। এরপর ন্যায়বিচার চাইতে দুই নবজাতকের লাশ নিয়ে হাইকোর্টে আসেন তাদের বাবা আবুল কালাম। বিষয়টি আমলে নিয়ে উল্লিখিত রুলসহ আদেশ দেন হাইকোর্ট।