জেলা প্রতিনিধি'
ফরিদপুরে এক নারীর সঙ্গে এক আইনজীবীর (৪২) আপত্তিকর ছবি তুলে ও ভিডিও করে তা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে চাঁদা দাবি করায় দুই নারীসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৮ ফরিদপুর ক্যাম্পের একটি দল।
সোমবার দিবাগত (০৩ আগস্ট) রাতে সালথা উপজেলার ফোকরা ও ফরিদপুর শহরের চরকমলাপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের ওই চার সদস্যকে গ্রেফতার করে র্যাব।
র্যাব জানায়, সোমবার স্থানীয় এক আইনজীবী র্যাব ক্যাম্পে এসে লিখিত অভিযোগ দিয়ে জানান একটি মামলা পরিচালনা করতে আলোচনার জন্য বাসায় যেতে বলেন এক নারী।
আইনজীবী তাকে চেম্বারে আসতে বলেন। বিষয়টি গোপনীয় ও পারিবারিক বলে চেম্বারে আলোচনা করা সম্ভব নয় বলে আইনজীবীকে বাসায় যেতে অনুরোধ করেন তিনি। আইনজীবী সরল বিশ্বাসে তার বাসায় যান। তখন তার বাসায় ওই নারী ছাড়াও আরও এক নারী উপস্থিত ছিলেন। সেই বাসায় হঠাৎ চারজন যুবক লোহার রড ও চাপাতিসহ প্রবেশ করে এবং জোরপূর্বক এক নারীর সঙ্গে তার আপক্তিকর ছবি তুলে রাখেন। পরে ওই ছবি ও ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এ ঘটনা অবহিত হওয়ার পর র্যাব ছায়া তদন্ত শুরু করে। প্রাথমিক তদন্তের মাধ্যমে র্যাব ঘটনার সত্যতা পায় এবং আসামিকে গ্রেফতারে তৎপর হয়।
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব জানতে পারে এ ঘটনার সঙ্গে ফরিদপুরের সালথার মো. ফিরোজ মল্লিক (২১), সালথার ময়েনদিয়ার পারভীন আক্তার সাথী (২৭), সালথার তুঘলদিয়ার মো. রবি হাসান রানা (১৯) ও ঢাকার আশুলিয়ার লাবিবা আক্তার (২১) জড়িত। তারা ফরিদপুর শহরের চরকমলাপুর মহল্লার ফয়সালের বাসায় ভাড়া থাকেন। পরে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
ফরিদপুর র্যাব ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক দেবাশীষ কর্মকার বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার রাতে অভিযান চালিয়ে ফরিদপুরের সালথা উপজেলার ফোকরা গ্রাম থেকে মো. ফিরোজ মল্লিক, পারভীন আক্তার এবং ফরিদপুর শহরের চরকমলাপুরে ভাড়া বাসা থেকে মো. রবি হাসান রানা ও লাবিবা আক্তারকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানান, তারা একটি প্রতারক চক্র। কখনও প্রেমের অভিনয়, কখনও কাজের কথা বলে বিভিন্ন সময় পুরুষদের বাসায় ডাকেন। পরে তাদের সহযোগীরা ভয়ভীতি দেখিয়ে আপত্তিকর ছবি তুলে রাখে এবং তা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে চাঁদা আদায় করে।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদ আলম বলেন, এ ব্যাপারে মঙ্গলবার থানায় চাঁদাবাজি ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করেন ওই আইনজীবী। মামলায় দুই নারীসহ চারজনকে গ্রেফতার দেখিয়ে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।