ঢাকা ০৯:৫৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo মঙ্গল শোভাযাত্রা – তাসফিয়া ফারহানা ঐশী Logo সাস্টিয়ান ব্রাহ্মণবাড়িয়া এর ইফতার মাহফিল সম্পন্ন Logo কুবির চট্টগ্রাম স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের ইফতার ও পূর্নমিলনী Logo অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদের মায়ের মৃত্যুতে শাবির মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্ত চিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ পরিষদের শোক প্রকাশ Logo শাবির অধ্যাপক জহীর উদ্দিনের মায়ের মৃত্যুতে উপাচার্যের শোক প্রকাশ Logo বিশ কোটিতে গণপূর্তের প্রধান হওয়ার মিশনে ‘ছাত্রদল ক্যাডার প্রকৌশলী’! Logo দূর্নীতির রাক্ষস ফায়ার সার্ভিসের এডি আনোয়ার! Logo ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতি হওয়া শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামোর সংস্কার শুরু Logo বুয়েটে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতির দাবিতে শাবিপ্রবি ছাত্রলীগের মানববন্ধন Logo কুবি উপাচার্যের বক্তব্যের প্রমাণ দিতে শিক্ষক সমিতির সাত দিনের আল্টিমেটাম




ঈদের ছুটিতে করোনার নমুনা পরীক্ষা নিয়ে বিভ্রান্তি

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:২৮:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ অগাস্ট ২০২০ ১১৭ বার পড়া হয়েছে
ঈদের ছুটির এই সময়ে নমুনা পরীক্ষার হার কমে গেছে

বাংলাদেশে গত তিন মাসের মধ্যে করোনাভাইরাসের সবচেয়ে কম নমুনা পরীক্ষা হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায়।

বাংলাদেশে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আজকের বুলেটিনে দেখা যাচ্ছে গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার এক হাজারের বেশ নিচে। নতুন করে ৮৮৬ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে, যা গতকাল ছিল ২,১৯৯ জন। আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা কি কমে গেলো?

কিন্তু আসলে নমুনা পরীক্ষার হার ঈদের ছুটির এই সময়ে ব্যাপকভাবে কমে গেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় মোটে সাড়ে তিন হাজারের মতো নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। যা তার ঠিক আগের দিনও ছিল ৮ হাজার ৮শ মতো।

পরীক্ষা এত কম হওয়ার কারণ কি?

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানা বলছেন, “অন্যতম একটা কারণ হল ব্র্যাক আমাদের যে নমুনা সংগ্রহ করে দেয় তারা তিনদিন তাদের বুথগুলো বন্ধ রাখবে সেটা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে জানিয়েছিল। ব্র্যাক ঢাকা ও চট্টগ্রামে তাদের বুথ থেকে আমাদের নমুনা সংগ্রহ করে দেয়।

”ঢাকাতেই তো আসলে সর্বাধিক কেস। ঢাকা বিভাগেও সবচেয়ে বেশি। যেহেতু ব্র্যাক ঢাকাতে নমুনা সংগ্রহ করে দেয়, তারা যেহেতু তাদের কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে নমুনা কম সংগ্রহ ও পরীক্ষা হয়েছে।”
বুথে লাইন

ফি নির্ধারণের পর মানুষজনের মধ্যে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা করানোর আগ্রহ কমে গেছে।

ব্র্যাকের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত পরীক্ষার ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখা গেলো সেখানে লেখা রয়েছে “০৩ অগাস্ট, ২০২০ সোমবার এর করোনা শনাক্তকরণ টেস্টের রেজিস্ট্রেশন বন্ধ আছে”।

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের ওয়েবসাইটে যে ম্যাপ দেয়া রয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে ঢাকায় তাদের ৩০টি বুথ রয়েছে এবং আরও চারটিতে কাজ শুরুর প্রক্রিয়া চলছে।

নাসিমা সুলতানা আরও বলছেন, ঈদের সময় পরীক্ষা করাতে এমনিতেও মানুষজন কম এসেছেন।

তিনি আরও বলছেন, বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে সরকার নির্ধারিত সাড়ে তিন হাজার টাকা ফি দিয়ে অনেকেই পরীক্ষা করাতে অনিচ্ছা প্রকাশ করছেন।

এমনিতেই সরকার ফি নির্ধারণের পর থেকে মানুষজনের মধ্যে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা করানোর আগ্রহ কমে গেছে।

পরীক্ষা কম হওয়ার সম্ভাব্য প্রভাব

অথচ বাংলাদেশে ২৪ ঘণ্টায় ১৮ হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষাও হয়েছে। বাংলাদেশে ঈদের সময় সাধারণত স্বাস্থ্যসেবা সীমিত পরিসরে চলে।

ঈদের সময় আন্তঃজেলা যাতায়াত বেশি হওয়ায় সংক্রমণের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাওয়ার আশংকা প্রকাশ করেছিলেন বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্বয়ং।

 

ঈদের আগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়েছিল করোনাভাইরাস সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম একইভাবে চালু থাকবে। কিন্তু সেটি বাস্তবে ঘটেনি।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলছেন ঈদের সময় বরং আরও বেশি নমুনা পরীক্ষা হওয়া উচিৎ।

তিনি বলছেন, “যখন ঝুঁকিটা বেড়ে যায়, তখন আমাদের দায়িত্ব টেস্টের সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়া। কয়েকদিন নমুনা পরীক্ষা কম হলে যারা আক্রান্ত হয়েছেন তারা রোগ ছড়াবে কারণ তারা স্বাভাবিক মেলামেশা বজায় রাখবে। একই সাথে কত লোকের মধ্যে রোগ ছড়াচ্ছে, কয়েকদিন পরে কত লোক সংক্রমিত হতে পারে তার বিজ্ঞানভিত্তিক ধারণাটা আমরা করতে পারবো না।”

ডা. লেলিন চৌধুরী আরও বলছেন, “বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন হল যত বেশি পরীক্ষা করা যায় তত বেশি রোগী শনাক্ত করা যায়, তার চিকিৎসা এবং সে কাদের সংস্পর্শে এসেছিল সেটি জানা সহজ হয়। এতে করোনাভাইরাসের বিস্তৃতি ঠেকানোর জন্য পরিকল্পনাও করা যায়।”

তিনি বলছেন, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বুথ বন্ধ থাকবে এমন তথ্য সরকারের যদি আগে থেকে জানা থাকে তাহলে উচিৎ ছিল বাড়তি ব্যবস্থার জন্য প্রস্তুতি নেয়া।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




ঈদের ছুটিতে করোনার নমুনা পরীক্ষা নিয়ে বিভ্রান্তি

আপডেট সময় : ১১:২৮:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ অগাস্ট ২০২০
ঈদের ছুটির এই সময়ে নমুনা পরীক্ষার হার কমে গেছে

বাংলাদেশে গত তিন মাসের মধ্যে করোনাভাইরাসের সবচেয়ে কম নমুনা পরীক্ষা হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায়।

বাংলাদেশে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আজকের বুলেটিনে দেখা যাচ্ছে গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার এক হাজারের বেশ নিচে। নতুন করে ৮৮৬ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে, যা গতকাল ছিল ২,১৯৯ জন। আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা কি কমে গেলো?

কিন্তু আসলে নমুনা পরীক্ষার হার ঈদের ছুটির এই সময়ে ব্যাপকভাবে কমে গেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় মোটে সাড়ে তিন হাজারের মতো নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। যা তার ঠিক আগের দিনও ছিল ৮ হাজার ৮শ মতো।

পরীক্ষা এত কম হওয়ার কারণ কি?

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানা বলছেন, “অন্যতম একটা কারণ হল ব্র্যাক আমাদের যে নমুনা সংগ্রহ করে দেয় তারা তিনদিন তাদের বুথগুলো বন্ধ রাখবে সেটা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে জানিয়েছিল। ব্র্যাক ঢাকা ও চট্টগ্রামে তাদের বুথ থেকে আমাদের নমুনা সংগ্রহ করে দেয়।

”ঢাকাতেই তো আসলে সর্বাধিক কেস। ঢাকা বিভাগেও সবচেয়ে বেশি। যেহেতু ব্র্যাক ঢাকাতে নমুনা সংগ্রহ করে দেয়, তারা যেহেতু তাদের কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে নমুনা কম সংগ্রহ ও পরীক্ষা হয়েছে।”
বুথে লাইন

ফি নির্ধারণের পর মানুষজনের মধ্যে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা করানোর আগ্রহ কমে গেছে।

ব্র্যাকের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত পরীক্ষার ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখা গেলো সেখানে লেখা রয়েছে “০৩ অগাস্ট, ২০২০ সোমবার এর করোনা শনাক্তকরণ টেস্টের রেজিস্ট্রেশন বন্ধ আছে”।

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের ওয়েবসাইটে যে ম্যাপ দেয়া রয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে ঢাকায় তাদের ৩০টি বুথ রয়েছে এবং আরও চারটিতে কাজ শুরুর প্রক্রিয়া চলছে।

নাসিমা সুলতানা আরও বলছেন, ঈদের সময় পরীক্ষা করাতে এমনিতেও মানুষজন কম এসেছেন।

তিনি আরও বলছেন, বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে সরকার নির্ধারিত সাড়ে তিন হাজার টাকা ফি দিয়ে অনেকেই পরীক্ষা করাতে অনিচ্ছা প্রকাশ করছেন।

এমনিতেই সরকার ফি নির্ধারণের পর থেকে মানুষজনের মধ্যে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা করানোর আগ্রহ কমে গেছে।

পরীক্ষা কম হওয়ার সম্ভাব্য প্রভাব

অথচ বাংলাদেশে ২৪ ঘণ্টায় ১৮ হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষাও হয়েছে। বাংলাদেশে ঈদের সময় সাধারণত স্বাস্থ্যসেবা সীমিত পরিসরে চলে।

ঈদের সময় আন্তঃজেলা যাতায়াত বেশি হওয়ায় সংক্রমণের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাওয়ার আশংকা প্রকাশ করেছিলেন বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্বয়ং।

 

ঈদের আগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়েছিল করোনাভাইরাস সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম একইভাবে চালু থাকবে। কিন্তু সেটি বাস্তবে ঘটেনি।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলছেন ঈদের সময় বরং আরও বেশি নমুনা পরীক্ষা হওয়া উচিৎ।

তিনি বলছেন, “যখন ঝুঁকিটা বেড়ে যায়, তখন আমাদের দায়িত্ব টেস্টের সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়া। কয়েকদিন নমুনা পরীক্ষা কম হলে যারা আক্রান্ত হয়েছেন তারা রোগ ছড়াবে কারণ তারা স্বাভাবিক মেলামেশা বজায় রাখবে। একই সাথে কত লোকের মধ্যে রোগ ছড়াচ্ছে, কয়েকদিন পরে কত লোক সংক্রমিত হতে পারে তার বিজ্ঞানভিত্তিক ধারণাটা আমরা করতে পারবো না।”

ডা. লেলিন চৌধুরী আরও বলছেন, “বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন হল যত বেশি পরীক্ষা করা যায় তত বেশি রোগী শনাক্ত করা যায়, তার চিকিৎসা এবং সে কাদের সংস্পর্শে এসেছিল সেটি জানা সহজ হয়। এতে করোনাভাইরাসের বিস্তৃতি ঠেকানোর জন্য পরিকল্পনাও করা যায়।”

তিনি বলছেন, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বুথ বন্ধ থাকবে এমন তথ্য সরকারের যদি আগে থেকে জানা থাকে তাহলে উচিৎ ছিল বাড়তি ব্যবস্থার জন্য প্রস্তুতি নেয়া।