ঢাকা ০৭:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo স্বাধীনতা যুদ্ধে জামায়াতের অবস্থান এবং পরবর্তীতে রাজনৈতিক পথচলা Logo রাত ৮টার পর বন্ধ থাকবে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানঃ  উপদেষ্টা আসিফ Logo গণপূর্তে পীরের কেরামতি: পাহাড়সম দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও প্রধান প্রকৌশলী চেয়ারে বহাল! Logo ডিবির অভিযানে দোহার থানা আওয়ামী লীগের সম্পাদকসহ পাঁচজন গ্রেফতার Logo অবসরে গেলেও ফায়ার সার্ভিসের দুর্নীতির মাস্টারমাইন্ড লেফটেন্যান্ট কর্নেল জুলফিকার – পর্ব ১ Logo ১০০ কেজি গাঁজা ও কাভার্ড পিকআপসহ দুই মাদক কারবারি ডিবির হাতে গ্রেফতার Logo আলোচিত দুর্নীতিবাজ জনস্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী মঈনুল বহাল তবিয়তে!  Logo বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও পরিবারের শেয়ার, ব্যাংক হিসাব বন্ধের নির্দেশ  Logo দশমিনায় যুবদল নেতাকে জড়িয়ে মিথ্যা সংবাদ প্রচার এর প্রতিবাদে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন Logo কেরানীগঞ্জ মডেল ভূমি অফিস যেন ঘুষের আস্তানা: এসিল্যান্ড থেকে পিয়ন সবাই এক আত্মা! 

মন্ত্রী, সচিব পরিচয়ে অভিনব প্রতারণা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:৩৫:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ জুন ২০২০ ১৭৪ বার পড়া হয়েছে

কখনো মন্ত্রী, কখনো সচিব বলে পরিচয় দেন নিজেকে। পরিবার বা স্বজনের সমস্যার কথা বলে টাকা নেন। এভাবে নানা পরিচয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। ভুক্তভোগীদের অভিযোগের পর গোয়েন্দা জালে ধরা পড়তে হয়েছে প্রতারক সোহেল রানাকে।

নিজেকে মন্ত্রী বা সচিব পরিচয় দেয়ার পর অধীনস্থ কর্মকর্তাদের ফোন দিয়ে প্রতারণা করাই কুষ্টিয়ার সোহেলের পেশা। ভুক্তভোগীরাও যাচাই-বাছাই না করেই দিয়ে দেন টাকা। জানুয়ারি মাসে খুলনার প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক আফরোজা খান মিতুর কাছ থেকে নেন ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। তিনি টেলিফোনে ডিবিসি নিউজকে জানান, ‘ফোন দিয়ে আমাকে বললেন আমাদের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বাবু মহোদয় উনার বোন ও বোনের জামাই ভারতে যাওয়ার পথে বিপদে পড়েছেন। তাদের কিছু অর্থ সাহায্য লাগবে। তো আমি টাকা পাঠালাম।’

সোহেল গত কয়েক বছরে নিজেকে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী, অতিরিক্ত সচিব, পাট ও বস্ত্র মন্ত্রীর ছেলের বন্ধু, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী, অতিরিক্ত সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিবসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের পরিচয় দিয়ে হাতিয়ে নিয়েছে লাখ লাখ টাকা। করোনা সংকট দেখা দিলে সোহেল বেছে নেয় নতুন কৌশল। ত্রাণ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগে যেসব চেয়ারম্যান মেম্বারদের বহিষ্কার করা হয়েছে তাদেরকে পদে বহাল রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয় সে।

প্রতারক সোহেল বলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগে মন্ত্রণালয়ের অ্যাডিশনাল সেক্রেটারি কাজী আশরাফুজ্জামান নামে পরিচয় দিতাম। বরখাস্তকৃত ওই চেয়ারম্যান বা মেম্বারের নাম্বারটা চাইতাম। বলতাম আপনাদের এই বিষয়টা তদন্তের জন্য আমাকে দিয়েছে। চেয়ারম্যানেরা বলতো, আমরা আওয়ামী লীগের সভাপতি এই সেই। তারা দিতো না, তবে মেম্বাররা গরীব এরা দিতো।’

যেসব মন্ত্রীর নামে প্রতারণা করা হয়েছে তারা আইনি ব্যবস্থার কথা ভাবছেন। সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বাবু বলেন, ‘আলাদা আলাদা মামলা হলে সুবিধা হবে। একটাতে তার জামিন হওয়া মানে সবগুলোতেই জামিন হয়ে যাওয়া। মামলা তো অবশ্যই করা উচিত কিভাবে করা যায় সেটা আমরা দেখছি।’

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বলেন, ‘গোয়েন্দা বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেছিলেন আমার নাম ব্যবহার করা হয়েছে। আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিবো।’

স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব কাজী আশরাফ উদ্দীন বলেন, ‘মোবাইল নাম্বার তো লাগেনা ওয়েবসাইটে গেলেই তো জানা যায় কোন জায়গায় কোন অফিসার আছেন। পুলিশ ধরেছে তারাই তো অ্যাকশন নেবে তাইনা।’

ফোনে এরকম টাকা চাইলে না দেয়ার পরামর্শ পুলিশের। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা উত্তর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, ‘মন্ত্রী হোক, সেক্রেটারি হোক, পুলিশ অফিসার হোক কারও কাছে টাকা চাওয়ার আইনগত ও নৈতিক অধিকার নাই। সেজন্য আপনারা টাকা দিবেনও না প্রতারিত হতেও যাবেন না।’

প্রতারিতরা মামলা করলে তদন্ত অনেক সহজ হয়। পুলিশের অনুরোধ এমন কোনো ঘটনার শিকার হলে যেন মামলা করেন ভুক্তভোগীরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

মন্ত্রী, সচিব পরিচয়ে অভিনব প্রতারণা

আপডেট সময় : ১১:৩৫:৫৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ জুন ২০২০

কখনো মন্ত্রী, কখনো সচিব বলে পরিচয় দেন নিজেকে। পরিবার বা স্বজনের সমস্যার কথা বলে টাকা নেন। এভাবে নানা পরিচয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। ভুক্তভোগীদের অভিযোগের পর গোয়েন্দা জালে ধরা পড়তে হয়েছে প্রতারক সোহেল রানাকে।

নিজেকে মন্ত্রী বা সচিব পরিচয় দেয়ার পর অধীনস্থ কর্মকর্তাদের ফোন দিয়ে প্রতারণা করাই কুষ্টিয়ার সোহেলের পেশা। ভুক্তভোগীরাও যাচাই-বাছাই না করেই দিয়ে দেন টাকা। জানুয়ারি মাসে খুলনার প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক আফরোজা খান মিতুর কাছ থেকে নেন ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। তিনি টেলিফোনে ডিবিসি নিউজকে জানান, ‘ফোন দিয়ে আমাকে বললেন আমাদের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বাবু মহোদয় উনার বোন ও বোনের জামাই ভারতে যাওয়ার পথে বিপদে পড়েছেন। তাদের কিছু অর্থ সাহায্য লাগবে। তো আমি টাকা পাঠালাম।’

সোহেল গত কয়েক বছরে নিজেকে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী, অতিরিক্ত সচিব, পাট ও বস্ত্র মন্ত্রীর ছেলের বন্ধু, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী, অতিরিক্ত সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিবসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের পরিচয় দিয়ে হাতিয়ে নিয়েছে লাখ লাখ টাকা। করোনা সংকট দেখা দিলে সোহেল বেছে নেয় নতুন কৌশল। ত্রাণ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগে যেসব চেয়ারম্যান মেম্বারদের বহিষ্কার করা হয়েছে তাদেরকে পদে বহাল রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয় সে।

প্রতারক সোহেল বলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগে মন্ত্রণালয়ের অ্যাডিশনাল সেক্রেটারি কাজী আশরাফুজ্জামান নামে পরিচয় দিতাম। বরখাস্তকৃত ওই চেয়ারম্যান বা মেম্বারের নাম্বারটা চাইতাম। বলতাম আপনাদের এই বিষয়টা তদন্তের জন্য আমাকে দিয়েছে। চেয়ারম্যানেরা বলতো, আমরা আওয়ামী লীগের সভাপতি এই সেই। তারা দিতো না, তবে মেম্বাররা গরীব এরা দিতো।’

যেসব মন্ত্রীর নামে প্রতারণা করা হয়েছে তারা আইনি ব্যবস্থার কথা ভাবছেন। সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বাবু বলেন, ‘আলাদা আলাদা মামলা হলে সুবিধা হবে। একটাতে তার জামিন হওয়া মানে সবগুলোতেই জামিন হয়ে যাওয়া। মামলা তো অবশ্যই করা উচিত কিভাবে করা যায় সেটা আমরা দেখছি।’

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বলেন, ‘গোয়েন্দা বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেছিলেন আমার নাম ব্যবহার করা হয়েছে। আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিবো।’

স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব কাজী আশরাফ উদ্দীন বলেন, ‘মোবাইল নাম্বার তো লাগেনা ওয়েবসাইটে গেলেই তো জানা যায় কোন জায়গায় কোন অফিসার আছেন। পুলিশ ধরেছে তারাই তো অ্যাকশন নেবে তাইনা।’

ফোনে এরকম টাকা চাইলে না দেয়ার পরামর্শ পুলিশের। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা উত্তর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, ‘মন্ত্রী হোক, সেক্রেটারি হোক, পুলিশ অফিসার হোক কারও কাছে টাকা চাওয়ার আইনগত ও নৈতিক অধিকার নাই। সেজন্য আপনারা টাকা দিবেনও না প্রতারিত হতেও যাবেন না।’

প্রতারিতরা মামলা করলে তদন্ত অনেক সহজ হয়। পুলিশের অনুরোধ এমন কোনো ঘটনার শিকার হলে যেন মামলা করেন ভুক্তভোগীরা।