সাভার প্রতিনিধি; আশুলিয়ায় অভিনব কায়দায় চুরি হচ্ছে ব্যাটারীচালিত রিকশা। এরা বিভিন্ন কৌঁশল আর প্ররতারণার ফাঁদ পেতে সর্বশান্ত করছে হতদরিদ্র রিকশাচালক ও মালিকদের। কখনও চালককে নেশাদ্রব্য খাইয়ে অচেতন করে আবার কখনও ভারি মালামাল বাসায় এগিয়ে দেওয়ার কথা বলে, কখনও বড় নোট ভাংতি করতে পাঠিয়ে, আবার কখনও চালক সেজে, ভাড়া নিয়ে গ্যারেজ মালিকের রিকশা নিয়ে তারা হচ্ছে উধাও।
এসমস্ত চোরাই রিকশা ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে বিক্রি করা হয়ে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে দালালদের মাধ্যমে ১০থেকে ১৫ হাজার টাকার বিনিময়ে চোরাই রিকশা ফেরত দেওয়া হচ্ছে। আশুলিয়ায় অটোরিকশা চোর চক্রের কয়েকটি গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে বলে জানিয়েছেন রিকশা ভ্যান গ্যারেজের মালিকেরা।
অনেক জায়গায় গোপনে এ চোর চক্রের সংগঠনও রয়েছে। তারা দালালদের মাধ্যমে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা নিয়ে চোরাই রিকশা ফেরত দিয়ে থাকে।
অটোরিকশা মালিক মোঃ শাহীন মোল্লা জানান, কয়েকটি সমবায় সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে দুই তিনটি অটোরিকশা কিনে আশুলিয়ার দক্ষিণ গাজীরচটের দুদু মার্কেট এলাকায় একটি রিকশা গ্যারেজ করেন তিনি। কিছুদিন আমার কাছ থেকে বগুড়া জেলার শাহজাহানপুর থানার ৭নং গোহাইল ইউনিয়নের খাদাশ ওলেলপাড়া গ্রামের মোঃ আঃ সাত্তারের ছেলে নুর আলম ভাড়ায় আমার একটি নতুন অটোরিকশা নিয়ে চালাতে থাকে। কয়েকদিন পর সে রিকশাটি নিয়ে পালিয়ে যায়।
এসময় আমরা তার দেওয়া জাতীয় পরিচয়পত্র ও ঠিকানা অনুযায়ী খোঁজ নিয়ে জানতে পারি নুর আলম সঙ্ঘবদ্ধ অটোরিকশা চোর চক্রের সদস্য। এই চক্রের সাথে আরও অনেকে জড়িত আছে। শাহীন মোল্লার স্ত্রী জানান, রিকশা চুরি হয়ে যাওয়াতে সমিতির ঋণ দিতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। পরিবার নিয়ে অত্যান্ত কষ্টের মধ্যে দিনপার করতে হচ্ছে। আমরা চাই এই চোর চক্রের বিরুদ্ধে সকলে একজোট হয়ে রুখে দাঁড়াতে।
অটোরিকশা মালিক মোঃ নাছির মুন্সী জানান, আশুলিয়ায় নুর আলমের মতো বেশ কয়েকটি রিকশা চোর চক্র রয়েছে। তারা বিভিন্ন কৌঁশল ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে প্রতিনিয়ত রিকশা চুরির মাধ্যমে হতদরিদ্র এবং অসহায় মানুষদের সর্বশান্ত করে যাচ্ছে। কিন্তু অটোরিকশা চলাচলের ক্ষেত্রে সরকারি নিবন্ধন না থাকায় এবং মহাসড়কে চলাচল নিষিদ্ধ হওয়ায় চোর চক্রের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ আমারা নিতে পারছিনা। এ সুযোগে চোর চক্র বেপরোয়াভাবে চুরি করেও পার পেয়ে যাচ্ছে। হাজার হাজার গরীব মানুষের পেশা জড়িয়ে আছে এ অটোরিকশা এবং লাখ-লাখ মানুষের জীবন জীবিকার সম্বল হয়ে উঠেছে এই অটোরিকশা। এই চোর চক্র নিয়ন্ত্রণে আইনী পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।