ঢাকা ০৫:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ




শেরপুরে প্রতিবন্ধী হুমায়রা হত্যা, ধরাছোঁয়ার বাইরে আসামিরা!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:৪২:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ জুন ২০২০ ১৭৯ বার পড়া হয়েছে

হাবিব হাসান, শেরপুর: শেরপুর জেলার চরপক্ষীমারী দিকপাড়া গ্রামে প্রতিবন্ধী মেয়েকে নিজ চাচা চাচী ও চাচাতো ভাইয়েরা মিলে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বাংলাদেশ নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তার হুমায়ুন কবীরের প্রতিবন্ধী মেয়ে তাসমিয়া হুমায়রার সাথে পার্শ্ববর্তী গ্রামের লালনকে বিয়ে দিয়ে ঘর জামাই করে পৈত্রিক বাড়ীতে রাখা হয় হুমায়রার বাবা নিজ সম্পদ দেখাশোনা করার মেয়ের জামাইকে দায়িত্ব দেন। সুখে ও শান্তিতে চলছিল প্রতিবন্ধী হোমায়রা সংসার। গত ১৪ মে হুমায়রাদের জমি থেকে মৌসুমী ধান জোর করে কেটে নিয়ে যাচ্ছিল তার চাচারা বাধা দিলে নিমর্ম ভাবে পিটিয়ে হত্যা করে প্রতিবন্ধী হুমায়রাকে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা যায়, অন্যায় ভাবে হুমায়রার চাচারা তাদের ধান কেটে নিয়ে যাচ্ছিল তখন বাধা দিলে আসামি হাসেম হুমায়রার পেটে লাথি মেরে ফেলে দেয়। এরপর বাবুলের ছেলে মেয়ে বৌ ও হাসেমের স্ত্রী সকলেই মেরে অজ্ঞান অবস্থায় মাটিতে ফেলে রাখেন।
পরবর্তীতে ঘঠনাস্থলে শাশুড়িকে ফোন করে মেয়েটিকে জামালপুর হাসপাতালে ভর্তির জন্য গেলে ডাক্তার করোনার জন্য রোগীর অবহেলাপূর্ণ আচরণ করে। কোন প্রকার চিকিৎসা না দিয়ে সামান্য মেডিসিন লিখে বিদায় করে দেয়।
পরবর্তীকালে মেয়েটির অবস্থান অবনতি হলে আবার হাসপাতালে জোরপূর্বক ভর্তি করিয়ে আলট্রাসনো করা হয়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরনের কারণে ২৩ মে রাতে মৃত্যু মুখে ঢলে পড়ে প্রতিবন্ধীর হুমায়রা।
ঘটনার পর পুলিশকে অবহিতি করলে প্রথমে লক ডাউন ও করোনার দোহাই দিয়ে বিষয়টি আমলে নেয়নি পুলিশ।
পরবর্তীকালে প্রতিবন্ধী হুমায়রার মৃত্যুর পরে শেরপুর সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়। মামলা নং 39/367/2020 মামলা দায়ের হলেও আসামিদের গ্রেপ্তারের ব্যাপারে পুলিশের কোন প্রকার তৎপরতা নেই বলে অভিযোগ প্রতিবন্ধী হুমায়রার পরিবারের। তাদের অভিযোগ হত্যাকাণ্ডের প্রধান অপরাধী মামলার প্রথম আসামি এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না। প্রধান আসামি উল্টো প্রোগ্রাম বাসীকে ভয় দেখিয়ে শাসিয়ে বেড়াচ্ছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রতিবন্ধী হুমায়রা খুনের প্রধান আসামি হাসেম এলাকায় বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত। এমনকি স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে পেটানোর অভিযোগও রয়েছে তার দিকে। এছাড়াও মানুষের জমি দখল, সন্ত্রাস, সরকারি গাড়ি করে ইতিপূর্বে জেল খেটেছেন প্রতিবন্ধী হোমায়রা হত্যার প্রধান আসামি হাসেম।
প্রভাবশালী উক্ত আসামির ভয়ে গ্রামের সবাই ভীতসন্ত্রস্ত তাই কেউ মূখ খোলেনা বলে জানান মামলার বাদীপক্ষ।
প্রতিবেদককে অধিকাংশ এলাকাবাসী জানায় তারা এই নিষ্পাপ প্রতিবন্ধী হুমায়রা হত্যার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চায়।
এ ব্যাপারে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন_ আসামিদের ধরতে আমাদের জোর প্রচেষ্টা চলছে। তারা পলাতক রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




শেরপুরে প্রতিবন্ধী হুমায়রা হত্যা, ধরাছোঁয়ার বাইরে আসামিরা!

আপডেট সময় : ০৯:৪২:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ জুন ২০২০

হাবিব হাসান, শেরপুর: শেরপুর জেলার চরপক্ষীমারী দিকপাড়া গ্রামে প্রতিবন্ধী মেয়েকে নিজ চাচা চাচী ও চাচাতো ভাইয়েরা মিলে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বাংলাদেশ নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তার হুমায়ুন কবীরের প্রতিবন্ধী মেয়ে তাসমিয়া হুমায়রার সাথে পার্শ্ববর্তী গ্রামের লালনকে বিয়ে দিয়ে ঘর জামাই করে পৈত্রিক বাড়ীতে রাখা হয় হুমায়রার বাবা নিজ সম্পদ দেখাশোনা করার মেয়ের জামাইকে দায়িত্ব দেন। সুখে ও শান্তিতে চলছিল প্রতিবন্ধী হোমায়রা সংসার। গত ১৪ মে হুমায়রাদের জমি থেকে মৌসুমী ধান জোর করে কেটে নিয়ে যাচ্ছিল তার চাচারা বাধা দিলে নিমর্ম ভাবে পিটিয়ে হত্যা করে প্রতিবন্ধী হুমায়রাকে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা যায়, অন্যায় ভাবে হুমায়রার চাচারা তাদের ধান কেটে নিয়ে যাচ্ছিল তখন বাধা দিলে আসামি হাসেম হুমায়রার পেটে লাথি মেরে ফেলে দেয়। এরপর বাবুলের ছেলে মেয়ে বৌ ও হাসেমের স্ত্রী সকলেই মেরে অজ্ঞান অবস্থায় মাটিতে ফেলে রাখেন।
পরবর্তীতে ঘঠনাস্থলে শাশুড়িকে ফোন করে মেয়েটিকে জামালপুর হাসপাতালে ভর্তির জন্য গেলে ডাক্তার করোনার জন্য রোগীর অবহেলাপূর্ণ আচরণ করে। কোন প্রকার চিকিৎসা না দিয়ে সামান্য মেডিসিন লিখে বিদায় করে দেয়।
পরবর্তীকালে মেয়েটির অবস্থান অবনতি হলে আবার হাসপাতালে জোরপূর্বক ভর্তি করিয়ে আলট্রাসনো করা হয়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরনের কারণে ২৩ মে রাতে মৃত্যু মুখে ঢলে পড়ে প্রতিবন্ধীর হুমায়রা।
ঘটনার পর পুলিশকে অবহিতি করলে প্রথমে লক ডাউন ও করোনার দোহাই দিয়ে বিষয়টি আমলে নেয়নি পুলিশ।
পরবর্তীকালে প্রতিবন্ধী হুমায়রার মৃত্যুর পরে শেরপুর সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়। মামলা নং 39/367/2020 মামলা দায়ের হলেও আসামিদের গ্রেপ্তারের ব্যাপারে পুলিশের কোন প্রকার তৎপরতা নেই বলে অভিযোগ প্রতিবন্ধী হুমায়রার পরিবারের। তাদের অভিযোগ হত্যাকাণ্ডের প্রধান অপরাধী মামলার প্রথম আসামি এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না। প্রধান আসামি উল্টো প্রোগ্রাম বাসীকে ভয় দেখিয়ে শাসিয়ে বেড়াচ্ছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রতিবন্ধী হুমায়রা খুনের প্রধান আসামি হাসেম এলাকায় বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত। এমনকি স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে পেটানোর অভিযোগও রয়েছে তার দিকে। এছাড়াও মানুষের জমি দখল, সন্ত্রাস, সরকারি গাড়ি করে ইতিপূর্বে জেল খেটেছেন প্রতিবন্ধী হোমায়রা হত্যার প্রধান আসামি হাসেম।
প্রভাবশালী উক্ত আসামির ভয়ে গ্রামের সবাই ভীতসন্ত্রস্ত তাই কেউ মূখ খোলেনা বলে জানান মামলার বাদীপক্ষ।
প্রতিবেদককে অধিকাংশ এলাকাবাসী জানায় তারা এই নিষ্পাপ প্রতিবন্ধী হুমায়রা হত্যার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চায়।
এ ব্যাপারে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন_ আসামিদের ধরতে আমাদের জোর প্রচেষ্টা চলছে। তারা পলাতক রয়েছে।