ঢাকা ০৭:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৭ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo ইন্সপেক্টর রেজায়ে রাব্বীর বিষয়ে বিভ্রান্তি নিরসনে ফায়ার সার্ভিসের বক্তব্য Logo স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে লাটিম ঘুরাচ্ছেন ৬ ‘কুতুব’ Logo ওয়াসা প্রকৌশলী ফকরুলের আমলনামা: অবৈধ সম্পদের সাম্রাজ্য Logo আশা ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগে নবীন বরণ অনুষ্ঠিত Logo চাঁদার টাকা না পেয়ে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা Logo সাংবাদিকদের হত্যা চেষ্টার ঘটনায় চ্যানেল এস এর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা Logo জামিনে মুক্ত রিজেন্টের চেয়ারম্যান সাহেদ Logo স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতির রাঘব বোয়াল বায়ো ট্রেড ধরাছোঁয়ার বাইরে Logo ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যায় জড়িত ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা রাব্বি লাপাত্তা Logo বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে আশা ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ




যুক্তরাষ্ট্রে কলকাতার মেয়ের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:৪৫:০৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩১ মে ২০২০ ১২২ বার পড়া হয়েছে

অনলাইন ডেস্কঃ যুক্তরাষ্ট্রের লস এঞ্জেলেসের একটি হাসপাতালের চিকিৎসক জাফিয়া অ্যানক্লেসারিয়া৷ কলকাতার এই নারী অন্তসত্তা হয়েও নিম্নবিত্ত করোনা রোগীদের সেবা করে যাচ্ছেন। মহামারি এই সময়ে তাঁর কর্ম নিয়ে থাকছে………

সাত মাসের অন্তঃসত্তা: ডাক্তার জাফিয়া অ্যানক্লেসারিয়া সাত মাসের অন্তঃসত্তা৷ তিনি লস এঞ্জেলেসের কমন স্পিরিটস ডিগনিটি হেল্থ ক্যালিফোর্নিয়া হসপিটাল মেডিকেল সেন্টারের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের সহকারি পরিচালক৷হাসপাতালটিতে বর্তমানে করোনা আক্রান্ত নিম্নবিত্ত হিস্পানিক ও আফ্রো অ্যামেরিকানদের চিকিৎসা দেয়া হয়৷

শিশু নিয়ে উদ্বেগ: এক করোনা রোগীকে ভেন্টিলেটরে রেখে শ্বাস নিতে সাহায্য করছিলেন জাফিয়া৷হঠাৎ খেয়াল করেন রোগীকে জরুরি সেবা দেয়ার পুরোটা সময় শিশুটি নড়াচড়া করছে না৷

ভয়াবহ কাজের চাপ: এই হাসপাতালে করোনা ইনটেনসিভ কেয়ারে ২২টি বিছানা আছে৷মার্চের শেষ থেকে এই ইউনিটে কাজের চাপ খুব বেশি৷কোনো কোনো নার্সকে ২৪ ঘণ্টা কাজ করতে হয়৷

গরিবদের দুরবস্থা: জাফিয়া যেসব করোনা রোগীর চিকিৎসা করছেন, তারা এমন জায়গায় বাস করেন, যেখানে সামাজিক দূরত্ব মানা সম্ভব নয়৷ফলে তাদের মধ্যে করোনা সংক্রমণের হার অনেক বেশি৷জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, লস এঞ্জেলেসের যেসব দরিদ্র মানুষ করোনায় মারা গেছেন তাদের সংখ্যা ঐ এলাকায় করোনায় মৃত ধনীদের চেয়ে দ্বিগুণ৷

নার্সদের সহযোগিতা: নার্সরা প্রতিনিয়ত তাকে পরীক্ষা করেন, দেখেন তিনি ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করছেন কিনা৷অনাগত সন্তানের উদ্দেশে জাফিয়া বলেন, ‘‘তুমি তোমার মাকে ভালোভাবে কাজ করতে দিচ্ছো৷’’

জাফিয়ার কাজ: জাফিয়ার ১২ ঘণ্টার শিফট শুরু হয় সকাল ৭টা থেকে৷প্রতি সপ্তাহে চারদিন করে কাজ করেন আইসিইউতে৷বাকি এক বা দুই দিন রোগীদের পরামর্শ দেন৷রাতে যিনি আইসিইউ-এর দায়িত্বে থাকেন, তার কাছ থেকে সব তথ্য জেনে করোনা প্রতিরোধক পোশাক পরে ও জীবানুনাশক ব্যবহার করে রোগীদের ঘরে ঢোকেন৷

সন্তান নিয়ে দুশ্চিন্তা: তবে জাফিয়ার মাঝে মাঝে মনে হয়, রোগীদের সামলাতে গিয়ে তার মধ্যে যে হতাশা সৃষ্টি হয় তা নিশ্চয়ই তার সন্তানও টের পায়৷তাই তিনি প্রায়ই একটু সময় বের করে সন্তানকে বলেন, ‘‘সব ঠিক আছে, চিন্তা করো না৷’’

শারীরিক কষ্ট: দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকতে জাফিয়ার এখন বেশ কষ্ট হয়৷ পিঠ ও কোমরে ব্যথা করে৷তবে একদিন সকালে একটা ভালো খবর পান: জানতে পারেন এক কর্মী চার সপ্তাহ আইসিইউতে ভেন্টিলেটরে থাকার পর সুস্থ হতে শুরু করেন৷ এমন খবরে সব কষ্ট ভুলে যান জাফিয়া৷

পাশে আছেন স্বামী: বিধ্বস্ত অবস্থায় বাড়ি ফিরলে জাফিয়াকে সাহায্য করেন তার স্বামী জাফারি৷ করোনার কারণে তিনি প্রায়ই স্ত্রী ও অনাগত সন্তানকে নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকেন৷ জাফারি একজন প্রকৌশলী৷ নানা তথ্য-উপাত্ত নিয়ে কাজ করেন তিনি৷ ফেসটাইমে জাফারি মাঝে মাঝে আলট্রাসাউন্ডে সন্তানের নড়াচড়া দেখে নিশ্চিন্ত হন৷

কলকাতার মেয়ে: জাফিয়া কলকাতার মেয়ে৷বাবা-মা দুজনেই চিকিৎসক৷তার বাবা-মা এখনো কলকাতায়৷সন্তান জন্মের সময় বাবা-মায়ের যুক্তরাষ্ট্রে আসার কথা থাকলেও করোনার কারণে তা সম্ভব হবে না কিনা সন্দেহ৷

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




যুক্তরাষ্ট্রে কলকাতার মেয়ের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত

আপডেট সময় : ১০:৪৫:০৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩১ মে ২০২০

অনলাইন ডেস্কঃ যুক্তরাষ্ট্রের লস এঞ্জেলেসের একটি হাসপাতালের চিকিৎসক জাফিয়া অ্যানক্লেসারিয়া৷ কলকাতার এই নারী অন্তসত্তা হয়েও নিম্নবিত্ত করোনা রোগীদের সেবা করে যাচ্ছেন। মহামারি এই সময়ে তাঁর কর্ম নিয়ে থাকছে………

সাত মাসের অন্তঃসত্তা: ডাক্তার জাফিয়া অ্যানক্লেসারিয়া সাত মাসের অন্তঃসত্তা৷ তিনি লস এঞ্জেলেসের কমন স্পিরিটস ডিগনিটি হেল্থ ক্যালিফোর্নিয়া হসপিটাল মেডিকেল সেন্টারের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের সহকারি পরিচালক৷হাসপাতালটিতে বর্তমানে করোনা আক্রান্ত নিম্নবিত্ত হিস্পানিক ও আফ্রো অ্যামেরিকানদের চিকিৎসা দেয়া হয়৷

শিশু নিয়ে উদ্বেগ: এক করোনা রোগীকে ভেন্টিলেটরে রেখে শ্বাস নিতে সাহায্য করছিলেন জাফিয়া৷হঠাৎ খেয়াল করেন রোগীকে জরুরি সেবা দেয়ার পুরোটা সময় শিশুটি নড়াচড়া করছে না৷

ভয়াবহ কাজের চাপ: এই হাসপাতালে করোনা ইনটেনসিভ কেয়ারে ২২টি বিছানা আছে৷মার্চের শেষ থেকে এই ইউনিটে কাজের চাপ খুব বেশি৷কোনো কোনো নার্সকে ২৪ ঘণ্টা কাজ করতে হয়৷

গরিবদের দুরবস্থা: জাফিয়া যেসব করোনা রোগীর চিকিৎসা করছেন, তারা এমন জায়গায় বাস করেন, যেখানে সামাজিক দূরত্ব মানা সম্ভব নয়৷ফলে তাদের মধ্যে করোনা সংক্রমণের হার অনেক বেশি৷জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, লস এঞ্জেলেসের যেসব দরিদ্র মানুষ করোনায় মারা গেছেন তাদের সংখ্যা ঐ এলাকায় করোনায় মৃত ধনীদের চেয়ে দ্বিগুণ৷

নার্সদের সহযোগিতা: নার্সরা প্রতিনিয়ত তাকে পরীক্ষা করেন, দেখেন তিনি ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করছেন কিনা৷অনাগত সন্তানের উদ্দেশে জাফিয়া বলেন, ‘‘তুমি তোমার মাকে ভালোভাবে কাজ করতে দিচ্ছো৷’’

জাফিয়ার কাজ: জাফিয়ার ১২ ঘণ্টার শিফট শুরু হয় সকাল ৭টা থেকে৷প্রতি সপ্তাহে চারদিন করে কাজ করেন আইসিইউতে৷বাকি এক বা দুই দিন রোগীদের পরামর্শ দেন৷রাতে যিনি আইসিইউ-এর দায়িত্বে থাকেন, তার কাছ থেকে সব তথ্য জেনে করোনা প্রতিরোধক পোশাক পরে ও জীবানুনাশক ব্যবহার করে রোগীদের ঘরে ঢোকেন৷

সন্তান নিয়ে দুশ্চিন্তা: তবে জাফিয়ার মাঝে মাঝে মনে হয়, রোগীদের সামলাতে গিয়ে তার মধ্যে যে হতাশা সৃষ্টি হয় তা নিশ্চয়ই তার সন্তানও টের পায়৷তাই তিনি প্রায়ই একটু সময় বের করে সন্তানকে বলেন, ‘‘সব ঠিক আছে, চিন্তা করো না৷’’

শারীরিক কষ্ট: দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকতে জাফিয়ার এখন বেশ কষ্ট হয়৷ পিঠ ও কোমরে ব্যথা করে৷তবে একদিন সকালে একটা ভালো খবর পান: জানতে পারেন এক কর্মী চার সপ্তাহ আইসিইউতে ভেন্টিলেটরে থাকার পর সুস্থ হতে শুরু করেন৷ এমন খবরে সব কষ্ট ভুলে যান জাফিয়া৷

পাশে আছেন স্বামী: বিধ্বস্ত অবস্থায় বাড়ি ফিরলে জাফিয়াকে সাহায্য করেন তার স্বামী জাফারি৷ করোনার কারণে তিনি প্রায়ই স্ত্রী ও অনাগত সন্তানকে নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকেন৷ জাফারি একজন প্রকৌশলী৷ নানা তথ্য-উপাত্ত নিয়ে কাজ করেন তিনি৷ ফেসটাইমে জাফারি মাঝে মাঝে আলট্রাসাউন্ডে সন্তানের নড়াচড়া দেখে নিশ্চিন্ত হন৷

কলকাতার মেয়ে: জাফিয়া কলকাতার মেয়ে৷বাবা-মা দুজনেই চিকিৎসক৷তার বাবা-মা এখনো কলকাতায়৷সন্তান জন্মের সময় বাবা-মায়ের যুক্তরাষ্ট্রে আসার কথা থাকলেও করোনার কারণে তা সম্ভব হবে না কিনা সন্দেহ৷