ঢাকা ০৯:৪১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ




যুক্তরাষ্ট্রে কলকাতার মেয়ের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:৪৫:০৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩১ মে ২০২০ ৯৩ বার পড়া হয়েছে

অনলাইন ডেস্কঃ যুক্তরাষ্ট্রের লস এঞ্জেলেসের একটি হাসপাতালের চিকিৎসক জাফিয়া অ্যানক্লেসারিয়া৷ কলকাতার এই নারী অন্তসত্তা হয়েও নিম্নবিত্ত করোনা রোগীদের সেবা করে যাচ্ছেন। মহামারি এই সময়ে তাঁর কর্ম নিয়ে থাকছে………

সাত মাসের অন্তঃসত্তা: ডাক্তার জাফিয়া অ্যানক্লেসারিয়া সাত মাসের অন্তঃসত্তা৷ তিনি লস এঞ্জেলেসের কমন স্পিরিটস ডিগনিটি হেল্থ ক্যালিফোর্নিয়া হসপিটাল মেডিকেল সেন্টারের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের সহকারি পরিচালক৷হাসপাতালটিতে বর্তমানে করোনা আক্রান্ত নিম্নবিত্ত হিস্পানিক ও আফ্রো অ্যামেরিকানদের চিকিৎসা দেয়া হয়৷

শিশু নিয়ে উদ্বেগ: এক করোনা রোগীকে ভেন্টিলেটরে রেখে শ্বাস নিতে সাহায্য করছিলেন জাফিয়া৷হঠাৎ খেয়াল করেন রোগীকে জরুরি সেবা দেয়ার পুরোটা সময় শিশুটি নড়াচড়া করছে না৷

ভয়াবহ কাজের চাপ: এই হাসপাতালে করোনা ইনটেনসিভ কেয়ারে ২২টি বিছানা আছে৷মার্চের শেষ থেকে এই ইউনিটে কাজের চাপ খুব বেশি৷কোনো কোনো নার্সকে ২৪ ঘণ্টা কাজ করতে হয়৷

গরিবদের দুরবস্থা: জাফিয়া যেসব করোনা রোগীর চিকিৎসা করছেন, তারা এমন জায়গায় বাস করেন, যেখানে সামাজিক দূরত্ব মানা সম্ভব নয়৷ফলে তাদের মধ্যে করোনা সংক্রমণের হার অনেক বেশি৷জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, লস এঞ্জেলেসের যেসব দরিদ্র মানুষ করোনায় মারা গেছেন তাদের সংখ্যা ঐ এলাকায় করোনায় মৃত ধনীদের চেয়ে দ্বিগুণ৷

নার্সদের সহযোগিতা: নার্সরা প্রতিনিয়ত তাকে পরীক্ষা করেন, দেখেন তিনি ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করছেন কিনা৷অনাগত সন্তানের উদ্দেশে জাফিয়া বলেন, ‘‘তুমি তোমার মাকে ভালোভাবে কাজ করতে দিচ্ছো৷’’

জাফিয়ার কাজ: জাফিয়ার ১২ ঘণ্টার শিফট শুরু হয় সকাল ৭টা থেকে৷প্রতি সপ্তাহে চারদিন করে কাজ করেন আইসিইউতে৷বাকি এক বা দুই দিন রোগীদের পরামর্শ দেন৷রাতে যিনি আইসিইউ-এর দায়িত্বে থাকেন, তার কাছ থেকে সব তথ্য জেনে করোনা প্রতিরোধক পোশাক পরে ও জীবানুনাশক ব্যবহার করে রোগীদের ঘরে ঢোকেন৷

সন্তান নিয়ে দুশ্চিন্তা: তবে জাফিয়ার মাঝে মাঝে মনে হয়, রোগীদের সামলাতে গিয়ে তার মধ্যে যে হতাশা সৃষ্টি হয় তা নিশ্চয়ই তার সন্তানও টের পায়৷তাই তিনি প্রায়ই একটু সময় বের করে সন্তানকে বলেন, ‘‘সব ঠিক আছে, চিন্তা করো না৷’’

শারীরিক কষ্ট: দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকতে জাফিয়ার এখন বেশ কষ্ট হয়৷ পিঠ ও কোমরে ব্যথা করে৷তবে একদিন সকালে একটা ভালো খবর পান: জানতে পারেন এক কর্মী চার সপ্তাহ আইসিইউতে ভেন্টিলেটরে থাকার পর সুস্থ হতে শুরু করেন৷ এমন খবরে সব কষ্ট ভুলে যান জাফিয়া৷

পাশে আছেন স্বামী: বিধ্বস্ত অবস্থায় বাড়ি ফিরলে জাফিয়াকে সাহায্য করেন তার স্বামী জাফারি৷ করোনার কারণে তিনি প্রায়ই স্ত্রী ও অনাগত সন্তানকে নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকেন৷ জাফারি একজন প্রকৌশলী৷ নানা তথ্য-উপাত্ত নিয়ে কাজ করেন তিনি৷ ফেসটাইমে জাফারি মাঝে মাঝে আলট্রাসাউন্ডে সন্তানের নড়াচড়া দেখে নিশ্চিন্ত হন৷

কলকাতার মেয়ে: জাফিয়া কলকাতার মেয়ে৷বাবা-মা দুজনেই চিকিৎসক৷তার বাবা-মা এখনো কলকাতায়৷সন্তান জন্মের সময় বাবা-মায়ের যুক্তরাষ্ট্রে আসার কথা থাকলেও করোনার কারণে তা সম্ভব হবে না কিনা সন্দেহ৷

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




যুক্তরাষ্ট্রে কলকাতার মেয়ের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত

আপডেট সময় : ১০:৪৫:০৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩১ মে ২০২০

অনলাইন ডেস্কঃ যুক্তরাষ্ট্রের লস এঞ্জেলেসের একটি হাসপাতালের চিকিৎসক জাফিয়া অ্যানক্লেসারিয়া৷ কলকাতার এই নারী অন্তসত্তা হয়েও নিম্নবিত্ত করোনা রোগীদের সেবা করে যাচ্ছেন। মহামারি এই সময়ে তাঁর কর্ম নিয়ে থাকছে………

সাত মাসের অন্তঃসত্তা: ডাক্তার জাফিয়া অ্যানক্লেসারিয়া সাত মাসের অন্তঃসত্তা৷ তিনি লস এঞ্জেলেসের কমন স্পিরিটস ডিগনিটি হেল্থ ক্যালিফোর্নিয়া হসপিটাল মেডিকেল সেন্টারের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের সহকারি পরিচালক৷হাসপাতালটিতে বর্তমানে করোনা আক্রান্ত নিম্নবিত্ত হিস্পানিক ও আফ্রো অ্যামেরিকানদের চিকিৎসা দেয়া হয়৷

শিশু নিয়ে উদ্বেগ: এক করোনা রোগীকে ভেন্টিলেটরে রেখে শ্বাস নিতে সাহায্য করছিলেন জাফিয়া৷হঠাৎ খেয়াল করেন রোগীকে জরুরি সেবা দেয়ার পুরোটা সময় শিশুটি নড়াচড়া করছে না৷

ভয়াবহ কাজের চাপ: এই হাসপাতালে করোনা ইনটেনসিভ কেয়ারে ২২টি বিছানা আছে৷মার্চের শেষ থেকে এই ইউনিটে কাজের চাপ খুব বেশি৷কোনো কোনো নার্সকে ২৪ ঘণ্টা কাজ করতে হয়৷

গরিবদের দুরবস্থা: জাফিয়া যেসব করোনা রোগীর চিকিৎসা করছেন, তারা এমন জায়গায় বাস করেন, যেখানে সামাজিক দূরত্ব মানা সম্ভব নয়৷ফলে তাদের মধ্যে করোনা সংক্রমণের হার অনেক বেশি৷জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, লস এঞ্জেলেসের যেসব দরিদ্র মানুষ করোনায় মারা গেছেন তাদের সংখ্যা ঐ এলাকায় করোনায় মৃত ধনীদের চেয়ে দ্বিগুণ৷

নার্সদের সহযোগিতা: নার্সরা প্রতিনিয়ত তাকে পরীক্ষা করেন, দেখেন তিনি ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করছেন কিনা৷অনাগত সন্তানের উদ্দেশে জাফিয়া বলেন, ‘‘তুমি তোমার মাকে ভালোভাবে কাজ করতে দিচ্ছো৷’’

জাফিয়ার কাজ: জাফিয়ার ১২ ঘণ্টার শিফট শুরু হয় সকাল ৭টা থেকে৷প্রতি সপ্তাহে চারদিন করে কাজ করেন আইসিইউতে৷বাকি এক বা দুই দিন রোগীদের পরামর্শ দেন৷রাতে যিনি আইসিইউ-এর দায়িত্বে থাকেন, তার কাছ থেকে সব তথ্য জেনে করোনা প্রতিরোধক পোশাক পরে ও জীবানুনাশক ব্যবহার করে রোগীদের ঘরে ঢোকেন৷

সন্তান নিয়ে দুশ্চিন্তা: তবে জাফিয়ার মাঝে মাঝে মনে হয়, রোগীদের সামলাতে গিয়ে তার মধ্যে যে হতাশা সৃষ্টি হয় তা নিশ্চয়ই তার সন্তানও টের পায়৷তাই তিনি প্রায়ই একটু সময় বের করে সন্তানকে বলেন, ‘‘সব ঠিক আছে, চিন্তা করো না৷’’

শারীরিক কষ্ট: দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকতে জাফিয়ার এখন বেশ কষ্ট হয়৷ পিঠ ও কোমরে ব্যথা করে৷তবে একদিন সকালে একটা ভালো খবর পান: জানতে পারেন এক কর্মী চার সপ্তাহ আইসিইউতে ভেন্টিলেটরে থাকার পর সুস্থ হতে শুরু করেন৷ এমন খবরে সব কষ্ট ভুলে যান জাফিয়া৷

পাশে আছেন স্বামী: বিধ্বস্ত অবস্থায় বাড়ি ফিরলে জাফিয়াকে সাহায্য করেন তার স্বামী জাফারি৷ করোনার কারণে তিনি প্রায়ই স্ত্রী ও অনাগত সন্তানকে নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকেন৷ জাফারি একজন প্রকৌশলী৷ নানা তথ্য-উপাত্ত নিয়ে কাজ করেন তিনি৷ ফেসটাইমে জাফারি মাঝে মাঝে আলট্রাসাউন্ডে সন্তানের নড়াচড়া দেখে নিশ্চিন্ত হন৷

কলকাতার মেয়ে: জাফিয়া কলকাতার মেয়ে৷বাবা-মা দুজনেই চিকিৎসক৷তার বাবা-মা এখনো কলকাতায়৷সন্তান জন্মের সময় বাবা-মায়ের যুক্তরাষ্ট্রে আসার কথা থাকলেও করোনার কারণে তা সম্ভব হবে না কিনা সন্দেহ৷