ঢাকা ০৫:৪১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo স্বৈরাচার সরকারের বিরুদ্ধে সাহসী ভূমিকায় সাংবাদিক হাফিজুর রহমান শফিক Logo রাজধানীর বাউনিয়ার ভূমিদস্যু খোরশেদ পরিবারের কব্জায় ভুক্তভোগীদের ভিটামাটি  Logo স্বাধীনতা যুদ্ধে জামায়াতের অবস্থান এবং পরবর্তীতে রাজনৈতিক পথচলা Logo রাত ৮টার পর বন্ধ থাকবে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানঃ  উপদেষ্টা আসিফ Logo গণপূর্তে পীরের কেরামতি: পাহাড়সম দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও প্রধান প্রকৌশলী চেয়ারে বহাল! Logo ডিবির অভিযানে দোহার থানা আওয়ামী লীগের সম্পাদকসহ পাঁচজন গ্রেফতার Logo অবসরে গেলেও ফায়ার সার্ভিসের দুর্নীতির মাস্টারমাইন্ড লেফটেন্যান্ট কর্নেল জুলফিকার – পর্ব ১ Logo ১০০ কেজি গাঁজা ও কাভার্ড পিকআপসহ দুই মাদক কারবারি ডিবির হাতে গ্রেফতার Logo আলোচিত দুর্নীতিবাজ জনস্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী মঈনুল বহাল তবিয়তে!  Logo বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও পরিবারের শেয়ার, ব্যাংক হিসাব বন্ধের নির্দেশ 

করোনা মাহামারী বন্ধ করে দিয়েছে ঘুষের লেনদেন

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১০:৪০:১৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মে ২০২০ ২৩৬ বার পড়া হয়েছে

সকালের সংবাদ ডেস্ক; ঘুষ বন্ধে যখন সরকারের কঠোর পদক্ষেপেও কাজ হয়নি তখন অদৃশ্য এক ভাইরাস এটি নামিয়ে এনেছে তলানিতে।

করোনা মহামারীর মধ্যে অফিস আদালত বন্ধ থাকায় নেই ঘুষের লেনদেন। অনেকটা মাথা নেই তাই মাথা ব্যাথাও নেই অবস্থা। বিশ্লেষকরা বলছেন, করোনার খারাপ দিকের মধ্যেও এটি একটি শিক্ষণীয় দিক। তবে, আগামীতে অবৈধ লেনদেন যেন মাথাচাড়া দিয়ে না উঠে সেদিকে নজর রাখতে হবে। নিতে হবে ব্যক্তিপর্যায়ে শিক্ষা।

ঘুষ না দিলে নড়েনা ফাইল, ঘুষ ছাড়া নড়েনা বস। ঘুষ দেয়া-নেয়া অঘোষিতভাবে বাধ্যতামূলক হয়ে উঠেছিলো দেশের সরকারী-বেসরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে।

ঘুষ ছাড়া কাজ না হলে বাধ্য হয়েই অবৈধ পথে পা। সাধারনও এসবে অনেকটা অভ্যস্থ হয়েই পড়েছিলো। সরকারি এমন খাত খুঁজে পাওয়া দুস্কর, যেখানে ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ মিলেছে।

তবে, দিন পাল্টেছে। ঘুষ বন্ধে যখন সরকারের কঠোর পদক্ষেপেও কাজ হয়নি তখন অদৃশ্য এক ভাইরাস এটি নামিয়ে এনেছে তলানিতে। অফিস আদালত বন্ধ থাকায় কমেছে টেন্ডারবাজি ও নিয়োগ বাণিজ্যে ঘুষের লেনদেন। সাব রেজিস্ট্রি-অফিসেও পড়েছে করোনার প্রভাব। তাই বলায় যায়, ঘুষ লেনদেন করা ব্যক্তিরা কিছুটা হলেও অস্বস্থিতে।

টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, যে খাতগুলোতে সরকারিভাবে বেশি অনিয়ম দুর্নীতি এবং ঘুষ লেনদেন হয়, মোটামোটি সে খাতগুলোতে সেবা এখন কিন্তু তেমনভাবে চলছে না। তবে যতটুকু চলছে তাতে অনিয়মের সংখ্যা খুবই কম বলে শোনা যাচ্ছে।

অর্থনীতিবিদ ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, নানা রকমের পাব্লিক সার্ভিস এবং সরকারি নিয়োগ বন্ধ হয়ে আছে বা কম হচ্ছে। ফলে এগুলোকে ঘিরে যে অনিয়মের কথা শোনা যায়, এখন সাধারণ মানুষ তার মুখোমুখী হচ্ছে না।

তবে, একেবারেই কি থেমে আছে ঘুষের কারবার? করোনার মধ্যেও সরকারি ত্রাণ বিতরনে ঘুষে লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা পরবর্তী সময়ে মাথাচাড়া দিতে পারে অবৈধ লেনদেন। তাই করোনা থেকে শিক্ষা নিয়ে সবার উচিত এসব লেনদেন বন্ধ করা।

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, অনিয়ম দুর্নীতি যাদের সব সময়ের সঙ্গি তারা কিন্তু এখনও অৎ পেতে আছে। যখন আবার সব স্বাভাবিক হবে, তারাও তাদের আগের চরিত্রের বিকাশ ঘটাবে।

ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, আমরা আশা করি আবার যখন সকল কার্যক্রম শুরু হবে তখন যেন খু কঠোরভাবে এগুলোর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়া হয়। যাতে কোন অনিয়ম না হয় এবং কাজে স্বচ্ছতা ও জাবাবদিহীতা রাখা উচিত।

ঘুষ লেনদেনের সূচকে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সম্ভাবনাসহ চারটি সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১৭৮ তম। তাই বর্হি:বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি রক্ষায় করোনা থেকেই শিক্ষা নিতে হবে। ঘুষ লেনদেনকারী অসাধু ব্যক্তিদের সামাজিকভাবে বয়কট করার পাশাপাশি অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিভাগীয় ব্যবস্থার ও কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেয়ার বিকল্প নেই।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

করোনা মাহামারী বন্ধ করে দিয়েছে ঘুষের লেনদেন

আপডেট সময় : ১০:৪০:১৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মে ২০২০

সকালের সংবাদ ডেস্ক; ঘুষ বন্ধে যখন সরকারের কঠোর পদক্ষেপেও কাজ হয়নি তখন অদৃশ্য এক ভাইরাস এটি নামিয়ে এনেছে তলানিতে।

করোনা মহামারীর মধ্যে অফিস আদালত বন্ধ থাকায় নেই ঘুষের লেনদেন। অনেকটা মাথা নেই তাই মাথা ব্যাথাও নেই অবস্থা। বিশ্লেষকরা বলছেন, করোনার খারাপ দিকের মধ্যেও এটি একটি শিক্ষণীয় দিক। তবে, আগামীতে অবৈধ লেনদেন যেন মাথাচাড়া দিয়ে না উঠে সেদিকে নজর রাখতে হবে। নিতে হবে ব্যক্তিপর্যায়ে শিক্ষা।

ঘুষ না দিলে নড়েনা ফাইল, ঘুষ ছাড়া নড়েনা বস। ঘুষ দেয়া-নেয়া অঘোষিতভাবে বাধ্যতামূলক হয়ে উঠেছিলো দেশের সরকারী-বেসরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে।

ঘুষ ছাড়া কাজ না হলে বাধ্য হয়েই অবৈধ পথে পা। সাধারনও এসবে অনেকটা অভ্যস্থ হয়েই পড়েছিলো। সরকারি এমন খাত খুঁজে পাওয়া দুস্কর, যেখানে ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ মিলেছে।

তবে, দিন পাল্টেছে। ঘুষ বন্ধে যখন সরকারের কঠোর পদক্ষেপেও কাজ হয়নি তখন অদৃশ্য এক ভাইরাস এটি নামিয়ে এনেছে তলানিতে। অফিস আদালত বন্ধ থাকায় কমেছে টেন্ডারবাজি ও নিয়োগ বাণিজ্যে ঘুষের লেনদেন। সাব রেজিস্ট্রি-অফিসেও পড়েছে করোনার প্রভাব। তাই বলায় যায়, ঘুষ লেনদেন করা ব্যক্তিরা কিছুটা হলেও অস্বস্থিতে।

টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, যে খাতগুলোতে সরকারিভাবে বেশি অনিয়ম দুর্নীতি এবং ঘুষ লেনদেন হয়, মোটামোটি সে খাতগুলোতে সেবা এখন কিন্তু তেমনভাবে চলছে না। তবে যতটুকু চলছে তাতে অনিয়মের সংখ্যা খুবই কম বলে শোনা যাচ্ছে।

অর্থনীতিবিদ ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, নানা রকমের পাব্লিক সার্ভিস এবং সরকারি নিয়োগ বন্ধ হয়ে আছে বা কম হচ্ছে। ফলে এগুলোকে ঘিরে যে অনিয়মের কথা শোনা যায়, এখন সাধারণ মানুষ তার মুখোমুখী হচ্ছে না।

তবে, একেবারেই কি থেমে আছে ঘুষের কারবার? করোনার মধ্যেও সরকারি ত্রাণ বিতরনে ঘুষে লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা পরবর্তী সময়ে মাথাচাড়া দিতে পারে অবৈধ লেনদেন। তাই করোনা থেকে শিক্ষা নিয়ে সবার উচিত এসব লেনদেন বন্ধ করা।

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, অনিয়ম দুর্নীতি যাদের সব সময়ের সঙ্গি তারা কিন্তু এখনও অৎ পেতে আছে। যখন আবার সব স্বাভাবিক হবে, তারাও তাদের আগের চরিত্রের বিকাশ ঘটাবে।

ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, আমরা আশা করি আবার যখন সকল কার্যক্রম শুরু হবে তখন যেন খু কঠোরভাবে এগুলোর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়া হয়। যাতে কোন অনিয়ম না হয় এবং কাজে স্বচ্ছতা ও জাবাবদিহীতা রাখা উচিত।

ঘুষ লেনদেনের সূচকে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সম্ভাবনাসহ চারটি সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১৭৮ তম। তাই বর্হি:বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি রক্ষায় করোনা থেকেই শিক্ষা নিতে হবে। ঘুষ লেনদেনকারী অসাধু ব্যক্তিদের সামাজিকভাবে বয়কট করার পাশাপাশি অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিভাগীয় ব্যবস্থার ও কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেয়ার বিকল্প নেই।