ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’, মোকাবিলায় নানা প্রস্তুতি
- আপডেট সময় : ০৯:২৩:০৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ মে ২০২০ ১২৩ বার পড়া হয়েছে
অনলাইন ডেস্ক; মহাশক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ মোকাবিলায় উপকূলীয় জেলাগুলোতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। করোনার কারণে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে ঝুঁকিপূর্ণদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে।
এরইমধ্যে উপকূলীয় এলাকার ৩ লাখ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে। রাতেই সবাইকে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আম্পান পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক দেখভাল করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সাতক্ষীরায় আম্পান মোকাবিলায় পর্যাপ্ত খাবার ও নগদ অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। উপকূলে বসবাসকারীদের আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়ার কাজ চলছে। জেলার ঝুঁকিপূর্ণ বেড়ি বাঁধের শতাধিক পয়েন্টে চলছে মেরামত কাজ। করোনার কারণে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে সামাজিক নিরাপত্তা বলায় গড়ে তোলা হয়েছে। করা হয়েছে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা। বিতরণ করা হচ্ছে মাস্ক।
পটুয়াখালীতে প্রস্তুত রয়েছে সাতশ আশ্রয়কেন্দ্র। জরুরি চিকিৎসা সেবার জন্য গঠন করা হয়েছে সাড়ে তিনশ মেডিক্যাল টিম। এছাড়া জেলার অভ্যন্তরীণ রুটে নৌযান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এদিকে, কলাপাড়া উপজেলার লালুয়ায় সিডরে বিধ্বস্ত বেরিবাধ দিয়ে কয়েকটি গ্রামে জোয়ারের পানি ঢুকছে। তবে বাধ মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে।
বাগেরহাটে আশ্রয় কেন্দ্রের পাশাপাশি খুলে দেয়া হয়েছে বিভিন্ন শিক্ষপ্রতিষ্ঠান। নগদ অর্থের পাশাপাশি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ওষুধ, শিশুখাদ্য, শুকনো খাবার ও গো খাদ্য। প্রস্তুত রয়েছে রেড ক্রিসেন্ট, স্কাউটস ও সিপিপির প্রায় ১২ হাজার স্বেচ্ছাসেক ও ৮৫টি মেডিক্যাল টিম।
এরইমধ্যে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ মোংলা, শরনখোলা, রামপাল ও মোরেলগঞ্জের মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়া শুরু করেছে। মোংলা বন্দরের নিজস্ব অ্যালার্ট-পাঁচ জারি করে বন্দর থেকে সব জাহাজ নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
চট্টগ্রামে ৩ হাজার ৯৯৮টি আশ্রয়কেন্দ্রের পাশাপাশি অন্তত সাড়ে তিন হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ২৮৪টি মেডিক্যাল টিম, প্রয়োজনীয় ওষুধ ও খাবার স্যালাইন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে রেডক্রিসেন্ট, বিএনসিসি ও স্কাউটের অন্তত ১২ হাজার সেচ্ছা সেবক। এদিকে চট্টগ্রামের বর্হিনোঙ্গরে অবস্থান করা সব জাহাজকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে বলা হয়েছে।
বরিশালে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে ৬ হাজার আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। উপকূলীয় এলাকায় মাইকিং করে নিরাপদ জায়গায় সরে যেতে বলা হচ্ছে। বরাদ্দ দেয়া হয়েছে পর্যাপ্ত খাদ্য সামগ্রী। গঠন করা হয়েছে মেডিক্যালটিম।
ভোলায় ২১টি চরের ৩ লাখ বাসিন্দাকে নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়ার কাজ চলছে। মানুষের সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে অতিরিক্ত ৪শ’ সহ মোট ১ হাজার ১০৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
বরগুনা জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, ‘বরগুনায় ৬১০টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। দুর্যোগ মোকাবিলা ও উদ্ধার কাজ পরিচালনার জন্য রেডক্রিসেন্ট এর প্রায় ৩ শতাধিক সেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’
নোয়াখালীতে আম্পান মোকাবিলায় সভা করেছে রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি। চিড়া, মুড়ি, গুড়, বিশুদ্ধ পানি, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও পরিবহনের জন্য ১০টি পিকআপ প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এরইমধ্যে আম্পানের প্রভাবে সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনাসহ উপকূলীয় বিভিন্ন এলাকায় ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়েছে।