এস এম শামীম: প্রতিপক্ষকে মামলার জালে ফাঁসাতে ৮০ বছরের বৃদ্ধ মনসুর মোল্লাকে হাসপাতালের বেডে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, গত ২১ এপ্রিল বিকেলে জেলার বোয়ালমারী থানার দাদপুর গ্রামে বাচ্চাদের ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি সংঘটিত হয়। এতে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়।
এরমধ্যে আহত মুনসুর মোল্লা (৮০) কে চিকিৎসার জন্য বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ফরিদপুর জেলা সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। পরে ২২ এপ্রিল ভোর রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে মারা যায় মনসুর মোল্লা।
এদিকে মনসুর মোল্লা মারা যাওয়ার পর সিরাজুল ইসলাম ওরফে জাকু সরদারের নেতৃত্বে সাব্বির সরদার, বাবুল সরদারসহ ৩০-৩৫ জনের একটি দল অপর পক্ষের ১৯ টি বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও নগদ অর্থসহ প্রায় ৭৩ লক্ষ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
ঘটনার পরদিন ২৩ এপ্রিল মৃত মনসুর মোল্লার ছেলে মুকুল মোল্লা ২৩ জনকে আসামি করে বোয়ালমারী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। অপরদিকে বাড়িতে হামলা ও লুটপাটের অভিযোগে ২৯ জনকে আসামি করে বোয়ালমারী থানায় আরেকটি মামলা দায়ের করেন নাজমা বেগম।
উল্লিখিত ঘটনার চাঞ্চল্যকর বিষয় হলো- হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মনসুর মোল্লাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হচ্ছে ২৩ সেকেন্ডের এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওটিতে দেখা গেছে- অজ্ঞাত এক ব্যক্তি মুখে মাক্স ব্যবহার করে হাসপাতালের বেডে চিকিৎসাধীন একজন বৃদ্ধকে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা চালাচ্ছে।
উক্ত ঘটনা সম্পর্কে এলাকাবাসীর কাছে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, মুনসুর মোল্লা হত্যার ঘটনাটি পুরোটাই পরিকল্পিত। প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, মনসুর মোল্লা মারা যাওয়ার পর তার পক্ষের লোকজন প্রতিপক্ষের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে যে সমস্ত মালামাল ও অর্থ লুট করেছে তার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে নিজেদের মধ্য সমস্যার সৃষ্টি হওয়ায় তাদেরই কেউ একজন উক্ত ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। পাশাপাশি ভিডিওতে আক্রমণকারী ব্যক্তি সিরাজুল ইসলাম ওরফে জাকু সরদার বলে অবিহিত করেন তারা।
এব্যপারে বোয়ালমারী থানার ওসি আমিনুর রহমান জানান, ২৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিও আমরা পেয়েছি এবং মাস্ক ব্যবহৃত আক্রমণকারীকে শনাক্ত করাসহ পুরো বিষয়টির তদন্ত অব্যাহত আছে। আপাতত এর বেশি কিছু বলা যাচ্ছে না।
এদিকে ফরিদপুর জেলা পুলিশ সুপার আলীমুজ্জামান ভিডিওটি হাতে পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, গঠনার সত্যতা যাচাই পূবর্ক প্রকৃত বিষয় উদঘাটন করতে তদন্ত করা হচ্ছে।
এছাড়াও জেলা সিভিল সার্জন ডা. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, কয়েকদিন আগে মারামারির একজন রুগী মারা গেছে আমি শুনেছি, তবে হাসপাতালে আনার আগে না পরে মরা গেছে তা বলতে পারবো না। আর ভিডিওর এব্যপারে আমি কিছুই জানি না।