ঢাকা ০৬:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৭ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo ইন্সপেক্টর রেজায়ে রাব্বীর বিষয়ে বিভ্রান্তি নিরসনে ফায়ার সার্ভিসের বক্তব্য Logo স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে লাটিম ঘুরাচ্ছেন ৬ ‘কুতুব’ Logo ওয়াসা প্রকৌশলী ফকরুলের আমলনামা: অবৈধ সম্পদের সাম্রাজ্য Logo আশা ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগে নবীন বরণ অনুষ্ঠিত Logo চাঁদার টাকা না পেয়ে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা Logo সাংবাদিকদের হত্যা চেষ্টার ঘটনায় চ্যানেল এস এর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা Logo জামিনে মুক্ত রিজেন্টের চেয়ারম্যান সাহেদ Logo স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতির রাঘব বোয়াল বায়ো ট্রেড ধরাছোঁয়ার বাইরে Logo ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যায় জড়িত ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা রাব্বি লাপাত্তা Logo বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে আশা ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ




বাবা ঘুষ দেননি বলেই কোহলি আজ বিশ্বসেরা!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৬:১৬:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ মে ২০২০ ১৭৫ বার পড়া হয়েছে

স্পোর্টস ডেস্ক;

যেকোন মানুষের জীবনে প্রথম হিরো তার বাবা। জীবনের কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই বাবা যে শিক্ষাটা দিয়ে থাকেন, তা মনে থাকে আজীবন। বাবার মতো হতে চাওয়ার ইচ্ছা থাকে যেকোন মানুষের। যেকোন ক্রীড়াবিদের ক্ষেত্রেও এটি সত্য।

এর অন্যতম উদাহরণ ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ও বর্তমান বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার বিরাট কোহলি। তিন ফরম্যাটেই এখন চলছে একজন ব্যাটসম্যানের রাজত্ব, তিনি বিরাট কোহলি। এরই মধ্যে করে ফেলেছেন ৭০টি সেঞ্চুরি। অনেকেই বলছেন, শচিন টেন্ডুলকারের ১০০ সেঞ্চুরির রেকর্ড ভাঙবেন কোহলিই।

নিজের পরিশ্রম আর সততা দিয়েই সাফল্যের শিখরে পৌঁছেছেন কোহলি। আর এই সততার পাঠ তিনি পেয়েছেন নিজের বাবা প্রেম কোহলির কাছ থেকে। তখনও পেশাদার খেলোয়াড়ি জীবনের শুরু হয়নি কোহলি। সে সময়েই কোহলিকে সততার এক দারুণ শিক্ষা দেন তার বাবা।

দিল্লি রাজ্য দলে সুযোগ পাইয়ে দেয়ার নাম করে কোহলির বাবার কাছে বাড়তি টাকা অর্থাৎ ঘুষ চেয়েছিলেন ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের এক কর্মকর্তা। তখন প্রেম কোহলি সরাসরি বলে দিয়েছিলেন কোন বাড়তি টাকা দিয়ে নিজের ছেলের ক্যারিয়ার গড়তে দেবেন না তিনি।

সম্প্রতি ভারতের কিংবদন্তি ফুটবলার সুনীল ছেত্রির সঙ্গে এক লাইভে এ ঘটনা জানিয়েছে কোহলি বলেছেন, ‘আমার রাজ্য দলে মাঝেমধ্যে অনেক অসৎ কাজও হয়। একবার যখন দল নির্বাচনের সময় এলো, তখন শীর্ষ কর্তাদের একজন নিয়ম মানতে রাজি ছিলেন না। তিনি আমার বাবাকে বলেন, যেহেতু আমার মেধা আছে দলে সুযোগ পাওয়ার। তাই জায়গাটি নিশ্চিত করতে কিছু বাড়তি টাকা (ঘুষ) প্রয়োজন।’

‘আমার মধ্যবিত্ত বাবা, যিনি নিজের পরিশ্রমের মাধ্যমে একজন সফল উকিল হয়েছেন, তিনি এই বাড়তি টাকার মানেই বোঝেননি। তিনি জবাব দিয়েছিলেন, আপনারা যদি বিরাটকে বাছাই করতে চান, তাহলে ওর মেধার ওপরেই করেন। আমি বাড়তি কিছু দিতে পারব না।’

এ ঘটনা থেকেই বিশ্বসেরা হওয়ার টোটকা পেয়ে যান কোহলি। পরবর্তী জীবনে পরিশ্রমের গাড়িতে চড়ে তিনি পেয়েছেন একের পর এক সাফল্য। শুধুমাত্র বিশ্ব টি-টোয়েন্টি বাদে খেলোয়াড়ি জীবনের সকল সাফল্য পেয়ে গেছেন তিনি।

কোহলি বলেন, ‘তো আমি তখন সুযোগ পেলাম না। অনেক কান্না করেছিলাম, ভেঙে পড়েছিলাম পুরোপুরি। তবে সেই ঘটনা আমাকে অনেক শিক্ষা দিয়েছে। আমি বুঝতে পারলাম যে, সফলতা পাওয়ার জন্য আমাকে বিশেষ কিছু করতে হবে এবং এটা অবশ্যই পুরোপুরি নিজের পরিশ্রম দিয়ে অর্জন করতে হবে। বাবা নিজের কাজের মধ্য দিয়েই আমাকে সঠিক পথ দেখিয়েছেন।’

ছেলেকে সততার পাঠ দিলেও, নিজ চোখে ক্রিকেটার হতে দেখে যেতে পারেননি প্রেম কোহলি। ২০০৬ সালে ব্রেইন স্ট্রোক করে মারা যান তিনি। বাবার মৃত্যুর সময়ই কোহলির উপলব্ধি হয়, জীবনে অনেক বড় কিছু করতে হবে তাকে।

তিনি বলেছেন, ‘আমি বাবার মৃত্যুটাও মেনে নিয়েছিলাম। নিজের ক্যারিয়ারের দিকে মনোযোগী হই। সত্যি বলতে, বাবার মৃত্যুর পরদিনই আমি রঞ্জি ট্রফির ম্যাচ খেলতে চলে যাই। তার মৃত্যু আমাকে অনুধাবন করাল যে, জীবনে কিছু একটা করতে হবে। আমি প্রায়ই ভাবি, এখন আমি তার (বাবার) অবসর পরবর্তী সময়ে কী সুন্দর একটা জীবন দিতে পারতাম। তখন আবেগপ্রবণ হয়ে যাই আমি।’

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :




বাবা ঘুষ দেননি বলেই কোহলি আজ বিশ্বসেরা!

আপডেট সময় : ০৬:১৬:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ মে ২০২০

স্পোর্টস ডেস্ক;

যেকোন মানুষের জীবনে প্রথম হিরো তার বাবা। জীবনের কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই বাবা যে শিক্ষাটা দিয়ে থাকেন, তা মনে থাকে আজীবন। বাবার মতো হতে চাওয়ার ইচ্ছা থাকে যেকোন মানুষের। যেকোন ক্রীড়াবিদের ক্ষেত্রেও এটি সত্য।

এর অন্যতম উদাহরণ ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ও বর্তমান বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার বিরাট কোহলি। তিন ফরম্যাটেই এখন চলছে একজন ব্যাটসম্যানের রাজত্ব, তিনি বিরাট কোহলি। এরই মধ্যে করে ফেলেছেন ৭০টি সেঞ্চুরি। অনেকেই বলছেন, শচিন টেন্ডুলকারের ১০০ সেঞ্চুরির রেকর্ড ভাঙবেন কোহলিই।

নিজের পরিশ্রম আর সততা দিয়েই সাফল্যের শিখরে পৌঁছেছেন কোহলি। আর এই সততার পাঠ তিনি পেয়েছেন নিজের বাবা প্রেম কোহলির কাছ থেকে। তখনও পেশাদার খেলোয়াড়ি জীবনের শুরু হয়নি কোহলি। সে সময়েই কোহলিকে সততার এক দারুণ শিক্ষা দেন তার বাবা।

দিল্লি রাজ্য দলে সুযোগ পাইয়ে দেয়ার নাম করে কোহলির বাবার কাছে বাড়তি টাকা অর্থাৎ ঘুষ চেয়েছিলেন ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের এক কর্মকর্তা। তখন প্রেম কোহলি সরাসরি বলে দিয়েছিলেন কোন বাড়তি টাকা দিয়ে নিজের ছেলের ক্যারিয়ার গড়তে দেবেন না তিনি।

সম্প্রতি ভারতের কিংবদন্তি ফুটবলার সুনীল ছেত্রির সঙ্গে এক লাইভে এ ঘটনা জানিয়েছে কোহলি বলেছেন, ‘আমার রাজ্য দলে মাঝেমধ্যে অনেক অসৎ কাজও হয়। একবার যখন দল নির্বাচনের সময় এলো, তখন শীর্ষ কর্তাদের একজন নিয়ম মানতে রাজি ছিলেন না। তিনি আমার বাবাকে বলেন, যেহেতু আমার মেধা আছে দলে সুযোগ পাওয়ার। তাই জায়গাটি নিশ্চিত করতে কিছু বাড়তি টাকা (ঘুষ) প্রয়োজন।’

‘আমার মধ্যবিত্ত বাবা, যিনি নিজের পরিশ্রমের মাধ্যমে একজন সফল উকিল হয়েছেন, তিনি এই বাড়তি টাকার মানেই বোঝেননি। তিনি জবাব দিয়েছিলেন, আপনারা যদি বিরাটকে বাছাই করতে চান, তাহলে ওর মেধার ওপরেই করেন। আমি বাড়তি কিছু দিতে পারব না।’

এ ঘটনা থেকেই বিশ্বসেরা হওয়ার টোটকা পেয়ে যান কোহলি। পরবর্তী জীবনে পরিশ্রমের গাড়িতে চড়ে তিনি পেয়েছেন একের পর এক সাফল্য। শুধুমাত্র বিশ্ব টি-টোয়েন্টি বাদে খেলোয়াড়ি জীবনের সকল সাফল্য পেয়ে গেছেন তিনি।

কোহলি বলেন, ‘তো আমি তখন সুযোগ পেলাম না। অনেক কান্না করেছিলাম, ভেঙে পড়েছিলাম পুরোপুরি। তবে সেই ঘটনা আমাকে অনেক শিক্ষা দিয়েছে। আমি বুঝতে পারলাম যে, সফলতা পাওয়ার জন্য আমাকে বিশেষ কিছু করতে হবে এবং এটা অবশ্যই পুরোপুরি নিজের পরিশ্রম দিয়ে অর্জন করতে হবে। বাবা নিজের কাজের মধ্য দিয়েই আমাকে সঠিক পথ দেখিয়েছেন।’

ছেলেকে সততার পাঠ দিলেও, নিজ চোখে ক্রিকেটার হতে দেখে যেতে পারেননি প্রেম কোহলি। ২০০৬ সালে ব্রেইন স্ট্রোক করে মারা যান তিনি। বাবার মৃত্যুর সময়ই কোহলির উপলব্ধি হয়, জীবনে অনেক বড় কিছু করতে হবে তাকে।

তিনি বলেছেন, ‘আমি বাবার মৃত্যুটাও মেনে নিয়েছিলাম। নিজের ক্যারিয়ারের দিকে মনোযোগী হই। সত্যি বলতে, বাবার মৃত্যুর পরদিনই আমি রঞ্জি ট্রফির ম্যাচ খেলতে চলে যাই। তার মৃত্যু আমাকে অনুধাবন করাল যে, জীবনে কিছু একটা করতে হবে। আমি প্রায়ই ভাবি, এখন আমি তার (বাবার) অবসর পরবর্তী সময়ে কী সুন্দর একটা জীবন দিতে পারতাম। তখন আবেগপ্রবণ হয়ে যাই আমি।’