ঢাকা ১১:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
Logo গণপূর্তে পীরের কেরামতি: পাহাড়সম দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও প্রধান প্রকৌশলী চেয়ারে বহাল! Logo ডিবির অভিযানে দোহার থানা আওয়ামী লীগের সম্পাদকসহ পাঁচজন গ্রেফতার Logo অবসরে গেলেও ফায়ার সার্ভিসের দুর্নীতির মাস্টারমাইন্ড লেফটেন্যান্ট কর্নেল জুলফিকার – পর্ব ১ Logo ১০০ কেজি গাঁজা ও কাভার্ড পিকআপসহ দুই মাদক কারবারি ডিবির হাতে গ্রেফতার Logo আলোচিত দুর্নীতিবাজ জনস্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী মঈনুল বহাল তবিয়তে!  Logo বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও পরিবারের শেয়ার, ব্যাংক হিসাব বন্ধের নির্দেশ  Logo দশমিনায় যুবদল নেতাকে জড়িয়ে মিথ্যা সংবাদ প্রচার এর প্রতিবাদে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন Logo কেরানীগঞ্জ মডেল ভূমি অফিস যেন ঘুষের আস্তানা: এসিল্যান্ড থেকে পিয়ন সবাই এক আত্মা!  Logo শেখ সোহেলের সহচর কাউট রাজু গ্রুপের তাণ্ডব: অস্ত্র ঠেকিয়ে প্রাণনাশের হুমকি Logo পদোন্নতি,বদলি. কেনাকাটায় পাহাড়সম দুর্নীতি ফায়ার সার্ভিস অধিদপ্তরে: দুদকের বিশেষ অভিযান

ঘূর্ণিঝড় আম্ফান : লাখ লাখ মানুষকে সরিয়ে নিচ্ছে ভারত

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৩:৩০:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ মে ২০২০ ১৫৯ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : শক্তি সঞ্চয় করে অতিপ্রবল থেকে সুপার সাইক্লোনে রূপ নিতে যাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান। এই ঝড়ের সম্ভাব্য তাণ্ডবের আশঙ্কায় লাখ লাখ মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নিতে শুরু করেছে ভারত। দেশটিতে করোনাভাইরাস মহামারির জরুরি সেবাগুলোর ওপর অতিরিক্ত চাপ তৈরি করেছে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান।

সোমবার দেশটির কর্মকর্তারা বলেছেন, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের আঘাতের আশঙ্কায় ভারতের পূর্ব-উপকূলীয় এলাকা থেকে হাজার হাজার মানুষকে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। এছাড়া বন্দরের সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

করোনা মহামারিতে বিশ্বের দীর্ঘমেয়াদি লকডাউনের কবলে থাকা ভারতে ওডিশ্যা, পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড়টি আগামী বুধবার আঘাত হানতে পারে বলে দেশটির আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে।

ভারতের করোনায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ৯৬ হাজার ছাড়িয়ে গেছে; যা করোনার উৎপত্তিস্থল চীনের চেয়ে বেশি। এছাড়া মারা গেছেন ৩ হাজার ২৯ জন। করোনার বিস্তারের গতিতে লাগাম টানতে গত ২৫ মার্চ থেকে লকডাউন চলায় দেশটির কোটি কোটি মানুষ মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। এর মাঝেই ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের তাণ্ডবের শঙ্কা মরার ওপর খাড়ার ঘা হিসেবে হাজির হয়েছে।

ওডিশ্যা এবং পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশের সরকার উপকূলীয় এলাকাগুলো থেকে লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়ার জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা টিম মোতায়েন করেছেন। এই ঘূর্ণিঝড় আগামী ১২ ঘণ্টা আরও শক্তি সঞ্চয় করে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় থেকে সুপার সাইক্লোনে রূপ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ, ওডিশ্যা এবং বাংলাদেশের খুলনা ও চট্টগ্রাম উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানতে পারে।

সুপার সাইক্লোনে রূপ নিলে এই ঘূর্ণিঝড়ে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ২২০ থেকে ২৬৫ কিলোমিটার ছাড়িয়ে যেতে পারে। যা বাংলাদেশে ২০০৭ সালের নভেম্বরে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় সিডরের গতিবেগের চেয়ে বেশি।

ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ একজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, নিম্নাঞ্চলগুলো থেকে লোকজনকে সরিয়ে নিতে হবে। পাশাপাশি তাদেরকে করোনাভাইরাস থেকেও রক্ষা করতে হবে। তবে এটা সহজ কাজ নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সাধারণত প্রত্যেক বছরের এপ্রিল থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে প্রবল ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয় বঙ্গোপসাগরে। এই ঘুর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি, প্রাণহানি ঠেকাতে লাখ লাখ মানুষকে উপকূলীয় এলাকা থেকে সরিয়ে নেয় বাংলাদেশ এবং ভারত।

বঙ্গোপসাগরের এই ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে ওডিশ্যা প্রদেশের প্যারাদ্বীপ কর্তৃপক্ষ সমুদ্রে জাহাজ চলাচল থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছে। প্যারাদ্বীপ পোর্ট ট্রাস্ট্রের চেয়ারম্যান রিনকেশ রয় বলেন, বন্দরে কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা বর্তমানে বন্দর খালি করছি।

আম্ফানের আঘাত কোথায় কখন?

সোমবার সকালে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় আম্ফান ১৯ মে শেষরাত থেকে ২০ মে বিকেল অথবা সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়টি দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে আম্পান। এটি সোমবার সকালের দিকে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার থেকে ১ হাজার ৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১০৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।

সোমবার শেষরাত থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়টি খুলনা ও চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যেতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

ঘূর্ণিঝড় আম্ফান : লাখ লাখ মানুষকে সরিয়ে নিচ্ছে ভারত

আপডেট সময় : ০৩:৩০:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ মে ২০২০

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : শক্তি সঞ্চয় করে অতিপ্রবল থেকে সুপার সাইক্লোনে রূপ নিতে যাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান। এই ঝড়ের সম্ভাব্য তাণ্ডবের আশঙ্কায় লাখ লাখ মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নিতে শুরু করেছে ভারত। দেশটিতে করোনাভাইরাস মহামারির জরুরি সেবাগুলোর ওপর অতিরিক্ত চাপ তৈরি করেছে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান।

সোমবার দেশটির কর্মকর্তারা বলেছেন, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের আঘাতের আশঙ্কায় ভারতের পূর্ব-উপকূলীয় এলাকা থেকে হাজার হাজার মানুষকে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। এছাড়া বন্দরের সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

করোনা মহামারিতে বিশ্বের দীর্ঘমেয়াদি লকডাউনের কবলে থাকা ভারতে ওডিশ্যা, পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড়টি আগামী বুধবার আঘাত হানতে পারে বলে দেশটির আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে।

ভারতের করোনায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ৯৬ হাজার ছাড়িয়ে গেছে; যা করোনার উৎপত্তিস্থল চীনের চেয়ে বেশি। এছাড়া মারা গেছেন ৩ হাজার ২৯ জন। করোনার বিস্তারের গতিতে লাগাম টানতে গত ২৫ মার্চ থেকে লকডাউন চলায় দেশটির কোটি কোটি মানুষ মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। এর মাঝেই ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের তাণ্ডবের শঙ্কা মরার ওপর খাড়ার ঘা হিসেবে হাজির হয়েছে।

ওডিশ্যা এবং পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশের সরকার উপকূলীয় এলাকাগুলো থেকে লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়ার জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা টিম মোতায়েন করেছেন। এই ঘূর্ণিঝড় আগামী ১২ ঘণ্টা আরও শক্তি সঞ্চয় করে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় থেকে সুপার সাইক্লোনে রূপ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ, ওডিশ্যা এবং বাংলাদেশের খুলনা ও চট্টগ্রাম উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানতে পারে।

সুপার সাইক্লোনে রূপ নিলে এই ঘূর্ণিঝড়ে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ২২০ থেকে ২৬৫ কিলোমিটার ছাড়িয়ে যেতে পারে। যা বাংলাদেশে ২০০৭ সালের নভেম্বরে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় সিডরের গতিবেগের চেয়ে বেশি।

ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ একজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, নিম্নাঞ্চলগুলো থেকে লোকজনকে সরিয়ে নিতে হবে। পাশাপাশি তাদেরকে করোনাভাইরাস থেকেও রক্ষা করতে হবে। তবে এটা সহজ কাজ নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সাধারণত প্রত্যেক বছরের এপ্রিল থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে প্রবল ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয় বঙ্গোপসাগরে। এই ঘুর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি, প্রাণহানি ঠেকাতে লাখ লাখ মানুষকে উপকূলীয় এলাকা থেকে সরিয়ে নেয় বাংলাদেশ এবং ভারত।

বঙ্গোপসাগরের এই ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে ওডিশ্যা প্রদেশের প্যারাদ্বীপ কর্তৃপক্ষ সমুদ্রে জাহাজ চলাচল থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছে। প্যারাদ্বীপ পোর্ট ট্রাস্ট্রের চেয়ারম্যান রিনকেশ রয় বলেন, বন্দরে কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা বর্তমানে বন্দর খালি করছি।

আম্ফানের আঘাত কোথায় কখন?

সোমবার সকালে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় আম্ফান ১৯ মে শেষরাত থেকে ২০ মে বিকেল অথবা সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়টি দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে আম্পান। এটি সোমবার সকালের দিকে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার থেকে ১ হাজার ৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১০৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।

সোমবার শেষরাত থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়টি খুলনা ও চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যেতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।